নিজের সম্পর্কে লেখার কিছু নেই । সাদামাটা । (পূর্ব প্রকাশনার পর- ২)
দুই / (দ্বিতীয় অংশ )
[পূর্বসূত্র ……বেশ কাটছিলো দিনগুলি । এক একজনকে এক এক রকমের খেলায় মজিয়ে রেখেছিলাম । খেলছিলাম এক এক রকমের খেলা ।
……দেখবি আলাদা এক মজা । ..............বয়স্ক পুরুষের প্রেম যখন উৎলে ওঠে না, তখন দেখবি তোর দু’কুল ভেসে গেছে। এবার দেখি একা একা তুই কদ্দুর যেতে পারিস সাঁতরে । ”
আমি যে কোথাও যেতে পারিনি । আমি যে ডুবতে বসেছি ।
এতো লজ্জার পরে তো আমার ডুবে মরার ই কথা ছিলো । ]
কেন যে আমি তাকে লিখতে গেলাম, “য়্যু রিমাইন্ড মি অব সামওয়ান ভেরী ক্লোওজ ট্যু মাই হার্ট । আই লভ্ড হিম ইন মাই য়্যুনিভার্সিটি লাইফ বাট দ্যাট ওয়্যজ ওয়ান সাইডেড ওনলি, ফ্রম মাই সাইড । ” তিন তিন বার আমি তাকে তার প্রোফাইলে নক্ করেছি । প্রথমবারে সাড়া না পেয়ে জেদ চেপে গিয়েছিলো ।
শেষে যখন তার সাড়া মিললো, বুঝলাম জিতে গেছি । সে আমার দেয়া এ্যাড্রেসে লিখেছিলো, “হ্যা, ওকে । বন্ধুত্ব হ’তে পারে”।
আমি তড়িঘড়ি মেইলে তাকে অন্য একটি ম্যাসেঞ্জারের এ্যাড্রেস দিয়ে বললাম, এক্ষুনি চ্যাটে কথা বলো । আমার সেলফোনের নম্বর দিয়েছিলাম, দিয়েছিলাম একটা ছবি ।
তার বয়স তো আমি জানি ই, বিস্তর ফারাক । তোয়াক্কা করলাম না । প্রথমেই তুমি সম্বোধন । একটু ভয় ছিলো মনে, যদি ধরা পড়ে যাই । আমার ভাঙা স্বর সেদিন কি আরো ভেঙে গেছিলো ! ওপাশ থেকে এক মায়া ঝরা কন্ঠের আকুলতা যেন আমার এই অপূর্ণতাকে ঢেকে দিলো পূর্ণতার সুতো বুনে বুনে ।
সে একটি রাত গেছে আমার । কী মধুর, কী আশ্চর্য্য একটি রাত । সে রাত যেন কোজাগরী পূর্ণিমার রাত । বসন্ত বাতাসের সাই সাই রাত। এরকমের রাত আমার আর কাটেনি কারো সাথে ।
মরি টেনে নেয়া বাঘিনির মতো আমি তাকে টেনে নিয়েছিলাম, আগলে রেখেছিলাম । বুঝলাম , আমি নিজেই নিজের পাতা ফাঁদে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছি । কিন্তু ততোক্ষনে ঢিল ছোঁড়া হয়ে গেছে । আমার পাঠানো লম্বা মেসেজটিতে যে কাহিনী আমি তাকে লিখেছি, তা যে তাকে কোনও ভাবে রেখাপাত করেছে কি করেনি, প্রথম রাতের আলাপে তার কনাটুকু রেশ ও আমাকে সে পেতে দেয়নি । তার গভীর সঘন, সহজিয়া বাক্যালাপ তাকে অনন্য করে তুলছিলো ।
সোজা-সাপ্টা, সাহসী, সংকোচহীন । একদম আলাদা । এরকম মানুষের দেখা আমি পাইনি ।
ন্ .. না তার সাথে আমার দেখা হয়নি ! এরকম একজন মানুষের সাথে আগে কখনও যোগাযোগ হয়নি, এটাই বোঝাতে চাইছি ।
পরের দিন খুব সকালেই তাকে এসএমএস করে লিখলাম, “ এ কাপ অব হট্ কিসেস……” ।
আমিও কি আবেগে ভেসে যাচ্ছিলাম !
নিজেকে সমর্পন করার এ কি তীব্র আকুতি আমার মধ্যে ! যে আমি দিনের পর দিন প্রেম প্রেম খেলা খেলে গেছি অনেকের সাথে অবলীলায়, সে আমার কি হ’লো আজ ! মিথ্যে দিয়ে যার শুরু হয়েছিলো, আমি তাকে সত্যের কাছাকাছি টেনে আনলাম কেন ! আমার কি মতিভ্রম হয়েছে ? এতোদিন তো কেবল নেশাই ধরিয়ে দিয়েছি অনেকের , এবার যে আমি নিজেই নেশার ঘোরে মাতাল । দিকশুন্যহীন এ কোন অথৈ পাথারে এসে পড়লাম আমি ! আমার হোশ ফিরবে তো !
অনলাইনে তার প্রোফাইল পড়ে কারো বন্ধুত্ব পাতানোর কথা নয়, শুধু তার বয়সের কারনে । বিশেষ করে ইয়াং মেয়েদের তার প্রতি আকর্ষনের কোনও কারন নেই । বিদেশী মেয়েদের কথা আলাদা । ওরা নাকি বয়েসের তোয়াক্কা থোড়াই করে ।
আমাদের বাঙালী মেয়েদের এদিকে সূচীবাই আছে । যদিও প্রোফাইলে দেয়া নিজের ছবিতে অনেক তরুন দেখাচ্ছিলো তাকে । বেশ স্লীম লাগছিলো দেখতে, তরুন কেউ । বয়েস বোঝা যাচ্ছিলো না । অথচ বয়সের ঘরে অন্য অঙ্ক লেখা ।
ইচ্ছাকৃত ভাবেই বয়স ভাড়িয়েছে ? চেহারাও আহামরি কিছু নয়, প্রথম দর্শনেই ভালোলাগার হয়তো কোনও কারন নেই । আমার কেবল তার প্রোফাইলে লেখা একমাত্র লাইনটা খুব ভালো লেগেছিলো । সচারচর যা কেউ লেখেনা । নিজেকে সবাই খুব উঁচুতে তুলে ধরতে, নিজের গুনগান গাইতেই ব্যস্ত সব সময় । এক একজন যেন স্বয়ং ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির, চরিত্রে রামচন্দ্র ।
এখানে তার ছিটেফোঁটাও নেই।
কেবল একটি লাইনে নিজেকে সে তুলে ধরেছে এভাবে, “ আমি যা, আমি তাই ” ।
ক’জনার বুকের সাহস আছে এভাবে লেখার । আমার ভালো লেগেছিলো, আর তাকে একটু বাজিয়ে দেখতে দারুন ইচ্ছে করছিলো । তিন তিনবার তাকে আমি আমন্ত্রন পাঠিয়েছি সাড়া মেলেনি ।
রাগ করে কিনা ! কোনও তরুনীমেয়ের আহ্বানে সাড়া দিতে কোনও পুরুষের এতো সময় লাগার কথা নয় । আমাকে বাজিয়ে দেখতে চাইছিলো কি ! বরং আমিই তো বাজিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম তাকে ।
( চলবে..... অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন তিন/চার দিন )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।