আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সারাবেলা খেলাধূলা ( যারা শৈশব পার করে এসেছেন)

আজকাল প্রায় একটা বিষয় নিয়ে আফসোস করি, ইশ্, পুরনো সময়গুলো যদি ফেরত পেতাম। আমার পুরনো সময় ফিরে পাওয়ার ব্যাপারটি আমার কাছে খুব মূল্যবান, কি কারনে এ কথা বলছি, তা কিছু পরেই ব্যাখ্যা করছি। প্রথম থেকে শুরু করি, আমার সময় কেটেছে চট্টগ্রাম এ। কলোনিতে থাকার সুবাদে এহেন কোন দস্যিপনা নেই যে করি নি। যারা কলোনীতে বড় হয়েছেন, তারা অবশ্যই আমার সাথে একমত হবেন, যে কলোনীতে বেড়ে ওঠার স্বাদ অনেক মধুর।

কলোনীর কিছু ব্যাপার শেয়ার করি যা অন্য ব্লগারদের ঈর্ষার কারন হবে... সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে স্কুলে যেতাম, যারা আমার বন্ধু ছিল, তারা কলোনীতেই থাকতো। ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়ার পর থেকে আমরা সারাদিন একসাথে। দুপুরে টিফিনের পর এর ক্লাস, বিকেলে খেলতে যাওয়া এমনকি রাতে গাছে উঠে ডাব চুরি করে খাওয়া, মোট কথা, ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের সাথেই সময় কাটতো। সারাদিন, এই ১৫-২০ জনের মধ্যেই মারামারি, এদের মধ্যেই গলাবাজি আবার এদের সামনেই যাবতীয় অপমান (সহজ বাংলায় পচানি ) খাইতে হতো। অনেক কথা বলেছি, এবার যে কারনে আজ লিখতে বসেছি, তা বলবো।

আমি কলোনিতে থাকতে এবং বন্ধুদের সাথে থাকতে এমন কিছু খেলার সাথে পরিচিত হয়েছি, যা আমি কখনো ভুলবো না। এখানে বলে রাখা ভালো,আমাদের কলোনীতে শুধুমাত্র বাবার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে, এবং বন্ধুদের কল্যাণে বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন খেলার সাথে পরিচিত হয়েছি। কিছু কথার কথা বলে রাখছি...মার্বেল, লাটিম, তাস, ঘুড়ি, দাড়িয়াবান্ধা , মাংসচুরি, আরও এ মুহূর্তে মনে না আসা অসংখ্য খেলা। এ সকল খেলার সাথে সবাই কম বেশি পরিচিত। আমার এ লেখার মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে একসাথে থাকার সুবাদে আমার বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা ও খেলার ধরন শেয়ার করা।

মার্বেল : মার্বেল খেলা সম্পর্কে সবাই কম বেশি জানি। চট্টগ্রামে এটা “লিলি খেলা” নামেও পরিচিত। আমি আজ লিখবো, আমি কলোনিতে থাকাকালীন মার্বেল এর কত ধরনের সাথে পরিচিত হয়েছি। মার্বেল এর বেশ কিছু প্রকারভেদ ছিল, ভেতরে রঙ্গিন শেড এর সচ্ছ মার্বেল ছিলো, যা ডাজ্ঞি মার্বেল নামে পরিচিত ছিল। এ ধরনের মার্বেল এর খুব চাহিদা ছিলো।

আর যে মার্বেল খেলায় বেশি পারদর্শী ছিলো, তাকে বলা হতো “জাক্কু” (এসব কিভাবে আবিষ্কৃত হলো তা কখনো চিন্তা করিনি) মার্বেল খেলার প্রকারভেদঃ বেশ কয়েক ধরনের মার্বেল খেলা প্রচলিত ছিলো। নিম্নে কিছু ব্যাখ্যা করা হলো ক্যাপ-গুটিঃ ক্যাপ-গুটি খেলার জন্য প্রথমে একটি এক ইঞ্চি পরিমান গর্ত খোড়া হয় যার পরিধি মুটামুটি ২ ইঞ্চির মতো হয়। প্রথমে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে মার্বেল ছুড়ে যে গর্ত তথা “ক্যাপ” এর নিকটে থাকবে সে মার্বেল প্রথমে খেলার অগ্রাধিকার পাবে। এ খেলার নিয়ম অনুসারে প্রথমে “ক্যাপ” করে “গুটি” অথবা গুটি করে ক্যাপ করতে হয়। আর তা করতে পারলেই পয়েন্ট।

নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে মারার সময় যদি যেকোনো খেলোয়াড়ের মার্বেল অন্য একজন খেলোয়াড়ের মার্বেল এ লেগে যায়, তবে তার নাম হয় ভান্ডাল। তখন মার্বেল ছোঁড়ার ব্যাপারটির পুনরাবৃত্তি হয়। বাদ-বাদঃ এ খেলায় দুটো দাগ থাকে, একটা দাগ থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক মার্বেল ছুড়তে হয়, আর দ্বিতীয় দাগটিকে বলা হয় জল্লা। এ খেলায় জল্লার পর একটি মার্বেল এর সমপরিমান একটি গর্ত খোড়া হয় যার নাম বিট। কোন খেলোয়াড় একসাথে বেশ কিছু মার্বেল নিয়ে ছুড়ে মারে যাতে তা জল্লার দাগটি পার হয়।

কোন মার্বেল যদি সরাসরি বিট এ পরে, তাহলে সে সবগুলো মার্বেল এর মালিক হয়ে যায়, এখানে বলে রাখা ভালো, ঐ নির্দিষ্ট সংখ্যক মারবেলের অর্ধেক একজন ও বাকিটা আরেকজনের থাকে। যদি কোন মার্বেল বিট এ না পড়ে, তাহলে অপর খেলোয়াড় যেকোনো একটি মার্বেল পছন্দ করে দেয়, যা অপর খেলোয়াড়কে নিজের হাতের একটি মার্বেল ছুঁড়ে লাগাতে হয়। যদি লাগাতে না পারে, তাহলে অন্য খেলোয়াড় সুযোগ পায়। চলবে..... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।