সব হারিয়েও যা পেলাম সেটা কিছুতেই তোমার ভালবাসা নয়। চট্টগ্রাম। পুরাতন রেলস্টেশন। সেপ্টেম্বর। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা।
রেল লাইনের ধার ঘেঁষে হেঁটে আসছে মেয়েটি। মুখচোখ ওড়না দিয়ে ঢাকা। হাতে একটা প্যাকেট। একপাশে সাড়ি করে ফেলে রাখা মালগাড়ির পুরানো বগি। দিনের আলো প্রায় নেই বললেই চলে।
অন্ধকারের মাঝে ঘাপটি মেরে থাকা যে বিপদ তা্র মত একটি যুবতী মেয়ের সর্বনাশ করতে পারে সেই বিপদের ভয় তার অন্তত নেই। প্রতি সন্ধ্যায় এভাবেই তো কাজে যেতে হয়। কাজ ! হুহ্ ! ঘেন্নাও হয় না আজকাল।
হঠাৎ পথরোধ করে দাঁড়াল কারা যেন ! ৪ জন ওরা । চাহারা আর কাপড়চোপড় বলছে ভাল ঘরের ছেলে।
শরীরে চিকচিক করছে ঘাম না পানি কি যেন! এগিয়ে এসে মেয়েটির বুকে হাত দিয়ে ধাক্কা মারল একজন। নিজেদের মধ্যে অশ্লীল ভাষায় কথা বলছে। গাঁজার গন্ধ ভুষবুষ করে বেরিয়ে আসছে মুখ দিয়ে। দুজনের হাতে বোতল। ঝটপট পকেট থেকে ছোট ছোট কতগুলো ট্যাবলেট খেয়ে হামলে পড়ল ছেলেগুলো।
মুখ চেপে ধরে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে গেল পাশের পুরাতন বগির ভেতর। মেয়েটির দুর্বল বাধা মুক্তির অনর্থক প্রয়াস ঠেকল কেবল।
চারপাশ পুরো অন্ধকারে ঢেকে গেছে। একদল জোনাকির দিকবিদিক ছোটাছুটি.........আর বগির ভেতর ৪ জন পালাক্রমে............!
প্রায় একঘন্টা পর। ক্লান্ত ছেলেগুলো পুরুষ(!) বীরের বেশে বেরিয়ে এল যেন।
ঘোর কাটছে তাদের আস্তে আস্তে। যা ঘটিয়েছে তার মর্মার্থ পরিষ্কার হতে আরো সময় লাগবে হয়তো। কিন্তু একি !
হা হা হা হা হা.........হি হি হি হি হি হি হি হিহহি হিহহি..................! ! !
হাসছে মেয়েটি। বিধ্বস্ত দেহটা কোন রকমে বগির দরজায় হেলান দিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে সে । হাসির দমকে থরথর করে কাঁপছে শরীর।
লাল টকটকে দুচোখে উলঙ্গ ঘৃণা।
ছেলেগুলো ফিরে চাইতেই আস্তে আস্তে হাতের প্যাকেটখানা তুলে দেখাল সে। ছুঁড়ে দিল ছেলেগুলোর দিকে। ধনুকের ছিলার মত ছুটে এসে সেটা নিল একজন। ভেতরের কাগজ বের করে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে পড়ত লাগল।
মোবাইলের অল্প আলোতেও মেয়েটি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে ধীরে ধীরে রক্ত সরে যাচ্ছে ছেলেটির মুখ থেকে। মরা মানুষের মত সাদা দেখাচ্ছে এখন।
মেয়েটি তৃপ্ত। বড় সার্থক লাগছে এই মুহুর্তে নিজেকে। বিকেলে হাসপাতালের ডাক্তার রিপোর্ট দেখে যখন বলল তার এইচআইভি পজিটিভ, ভেবেছিল নোংরা সমাজটার সাথে লড়াই করে সে বুঝি হেরেই গেল।
কিন্তু এখন......... হাহা হা হা হা হা.হা হা হা হা হা হা হা হা .....!!!!!!!
কত মেয়ের সর্বনাশ দেখেছে সে ! একদিন নিজেরও। সমাজ তাকে আশ্রয় দিয়েছে ? দেয় নি। সমাজের মুখে থুঃ ! নিরুপায় হয়ে পেট চালাতে হোটেলে শুতে হয়েছে তাকে। দেখেছে সমাজের নামিদামি কুত্তার বাচ্চা গুলার আসল চেহারা ! হারামিগুলার ভালমানুষির মুখে লাথ্থি !
বজ্রাহতের মত দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেগুলোকে দেখে করুণা হচ্ছে না তার । বয়স যা-ই হোক।
পুরুষ তো ! শালার বেজন্মার জাত !!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।