আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বালকের প্রথম প্রেম

ভালবাসা কি ইহা বুঝিতে বুঝিতে বালকের বয়স কখন যে ১৯ পার হইয়া গেল,তা বালক নিজেও টের পাইল না...। । জীবনের ১৯টা বসন্ত একাকী নিশ্চিন্তে কাটাইয়া দেওয়ার পর,তাহার মাথায় ভালবাসার ভুত উদয় হইল। এই ভূত কোন সুন্দরী ললনাকে দেখিয়া নয়,বরং এর নেপত্থ্যে রহিয়াছে”বাংলা সিনেমা”। এক পড়ন্ত বিকালে বালক যখন টেলিভিশন খুলিয়া বসিল,ঠিক তখনই কোন এক চ্যানেল এ শুরু হইতেছিল বাংলা সিনেমা “সখি ভালবাসা কারে কয়”।

খেলা ব্যাতিত আর কিছু না দেখা বালাক সেইদিন কিঞ্চিত কৌতুহল হইয়া সিনেমা খানা দেখিল এবং সিনেমা শেষে তার অর্জিত জ্ঞান হইল যে,অনেক হইয়াছে আর না,এইবার একখানা প্রেম করিতে হইবে মোরে......... কিন্তু জীবন তো আর সিনেমা না,তাই বালকেরও কোন ললনার বিপদের মুহূর্তের নায়ক হয়ে উঠা হয় না......। এইভাবে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হইবার পর বালক যখন আশা-ভালবাসা ছাড়িয়া শান্তির জীবনে ফিরিয়া আসিতেছিল,তখনই তাহার জীবনের সবচাইতে আকাঙ্খিত অনাকাঙ্খিত ঘটনাখানা ঘটিল............ সহজ সরল বালক তাহার শিক্ষাঙ্গনে আতেল এবং পাংচুয়াল হিসেবে কিঞ্চিত পরিচিত ছিল। একদিন রৌদ্র উজ্জল এক বসন্তের সকালে এক সুন্দরী সহপাঠী ললনা আশিয়া তাহার সহিত বন্ধুত্ত পাকাইল। সরলমতি বালক দুনিয়ার গরলতা না বুঝিয়া ব্যপক আনন্দিত হইল এবং ভাবিল্‌,জীবনে তবে বসন্ত আসিল। ললনা দিনে-রাতে তাহার সহিত মুঠোফোনে বাকচিত করিতে লাগিল,আর মিষ্টি মধুর কথা দিয়া বালকের হ্রদয়ে ঢেউ তুলিতে লাগিল।

বালক ভাবিল,ললনা তাহার মাঝে বিগলিত হইয়াছে। তাই বালক,ললনার জন্য নিবেদিত হইল,ললনার প্রয়োজন মিটাইতে ব্যকুল হইল,ললনার পরিক্ষার নোট তৈরি করিয়া দিল,এসাইনমেন্ট করিয়া দিল,কেরানিকে ঘুস দিয়া ললনার শ্রেণীকক্ষে উপস্থিতির হার বাড়াইয়া নিল... আর ললনার কন্ঠে বালকের প্রশংসায় মধু ঝরিয়া পরিতে লাগিল,চটপটি-ফুচকা খাইবার হারও চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়িতে লাগিল,বালকের মানিব্যাগের স্বাস্থ্যহানি হইতে লাগিল...। বালক ভাবিল,যা বুঝার বুঝিয়াছি,এইবার মুখে বলিয়া লই হ্রদয়ের কথা। কিন্তু ললনার বাসনা,যা বুঝার বুঝিয়া লও,মুখে কিছু নয়...। ।

কিছুদিন পর পরিক্ষা আসিয়া উপস্থিত হইল এবং বালক ও ললনা পাশাপাশি বসিয়া পরিক্ষা দিল। ললনার জন্য বালক তাহার খাতা এবং সময় উৎসর্গ করিল। পরিক্ষা একদিন শেষ হইল এবং একই সহিত ললনার মুঠোফোনের ব্যালেন্সও শেষ হইল। সরলমতি বালক ভাবিল,হ্রদয়ের কথা বলিবার সময় আসিয়াছে কিন্তু ললনার যে দেখা নাই। তাই দিল ললনার মুঠোফোনে রিং।

মিষ্টভাষী ললনার মিষ্টি কন্ঠস্বরের বিলুপ্তি না বুঝিয়া বালক যেই কহিতে যাইবে হ্রদয়ের কথা,ললনা তাহাকে থামাইয়া দিয়া কহিল,আমার বয়ফ্রেন্ড ফোন করিতেছে,তুমি তবে রাখ...। সরলমতি বালক বুঝিল না ঘটনা কি হইল,তাহার মনে শুধু প্রশ্ন রইল,সখি ভালবাসা কারে কয়?আর বন্ধুত্ব মানে কি??বালক্ ব্যাপক কষ্ট পাইল,তাই পরিক্ষায় ডি গ্রেড পাইয়াও মন বিশেষ খারাপ করিল না,শুধু চাহিয়া দেখিল,ললনা এ+ সেলিব্রেট করিতেছে তাহারে ভুলিয়া......... পুনশ্চঃ ললনা এখন তাথার কথিত তিন নম্বর বয়ফ্রেন্ড লইয়া জীবন উপভোগে ব্যস্ত,আর বালক...জীবনের শিক্ষাসফর শেষে কানাডায় পিএইচডি লইয়া ব্যস্ত। পূর্বে প্রকাশিত @ বালকের প্রথম প্রেম ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।