পরাঞ্জয়ী... শুভ্র,
তোমার মন্দ থাকবার দিনগুলো ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে জানতে পেরে ভালো লাগছে। থিতু হচ্ছো জীবন নিয়ে, জীবিকার টানে সেই সুসংবাদটা বড্ড ঘটা করেই দাও আজকাল! আমার ভালো লাগে। স্রেফ গলার কাছে কী যেন দলা পাকিয়ে ওঠে। কোন ফাঁকফোকর না পেয়ে সে চোখ ঠেলে বাইরে বেরিয়ে আসে। যাবার সময় তোমাকেই যখন আটকাতে আমার সাধ্যে কুলালো না, তাকে আমি আটকাই কেমন করে বলো? যখন আমার মতামতের অপেক্ষায় প্রশ্ন ছুড়ে দাও অবাক লাগে তখন।
নিজের জীবনটা কে কবে অন্যের হাতে ঘটা করে তুলে দিয়েছে বলতে পারো?
যাবার জন্য বোধ করি কোন কারন লাগেনা, তাই না শুভ্র? মন ছুটলেই মানুষ ছুটে বেরিয়ে যায়। ভেবে দেখবারও সময় পায়না, যাকে পেছনে ফেলে চলে যায় তার বুকের নদীর পাড়টা ভেঙে যায়, ভাসিয়ে নিয়ে যায় জীবনটাকে কোন এক দূষিত সমুদ্রে। মানুষের "মনের ভেতরকার মানুষ"টাকে আমি আজও চিনলাম না। তাই নিজেকে চেনাও হয় না। দু'জন মিলে দেখা স্বপ্নগুলো যখন স্বার্থপরের মত শুধু একজন পূরণ করে অন্য কোন মানুষের হাত ধরে, তবে আরেকজন তখন অবশ্যম্ভাবীভাবেই নিঃস্ব হয়ে যায়।
না থাকে স্বপ্ন, না থাকে স্বপ্ন দেখার ঘুম!
আমিও মেনে নিয়েছি, তুমি যাবে, থাকবেনা কিছুতেই! এ ছাড়া অন্য কিছু যে করবার নেই তাও তো মিথ্যে নয়! নিজের মনের সমস্ত দরজা জানলা আমি বন্ধ করে দিয়েছি। যেন চলে যাবার সময় কোন অনুযোগ, অনুনয়, অনুরোধ তোমার পথ না আটকায়। কতবার বুকের ভেতর একটা ছোট্ট কথা হাতুড়ি পেটায় মুখের গহ্বর হয়ে বেরিয়ে আসার জন্য "তুমি যেওনা, যেওনা আমাকে ছেড়ে"! আমার অহং, আমার পাহাড় সমান অভিমান তাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখে। বের হতে দেয়না, দেবেও না বোধ করি কোনদিন!
তুমি হয়ত খেয়াল করোনি,আমি তোমার চোখের দিকে তাকানো বন্ধ করে দিয়েছি। ঐ মায়াহীন শূন্য চোখে চাইবার শক্তি আমার নেই।
যে চোখে নামলে একদিন ঠাই হারাতাম, আজ সে চোখে কোন গভীরতা অবশিষ্ট নেই। তুমি দেখতে পাওনা বুকের ভেতরে অন্তহীন বয়ে যাওয়া ঝড়। যে ঝড়টা আমায় শান্ত হতে দেয়না কিছুতেই। এই দোমড়ানো মোচড়ানো মনটা নিয়ে আমি কার কাছে কোথায় যাবো শুভ্র? এ যে কাউকে দেয়া যায়না, কোন মতেই না! ঠকাতে শিখিনি বলেই তো আজ একলা ঘরে শুন্য জীবনের অপেক্ষায় ঘড়ি দেখি! ঘন্টা গুনি!
যাবার আগে আমার দায়িত্বটা অন্য কাউকে দিয়ে যেতে চাও। সেই চেষ্টায় তোমার রাত্রি দিনের ঘুম হারাম।
কিন্তু সে কী এতই সোজা? জীবনটা কি এমন কোন গন্তব্য যেখানে পৌছতে এক ট্রেন থেকে আরেক ট্রেনে শুধু নিজেকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়া? সে হয়ত তোমাদের সংজ্ঞায় তেমনটি হতে পারে, কিন্তু এমন প্রয়োজন আমার কোন কালেই ছিলনা, সে তোমার চেয়ে বেশি আর কে জানে বলো? তাই বৃথা কালক্ষেপন না করে নিজের সুখের গাঁটটাকে আরেকটু শক্ত করে বাঁধো।
আমাকে নিয়ে ভেবোনা। আমাকে যেখানটাতে ফেলে যাচ্ছ, ঠিক ফিরে এসে সেখানটাতেই পাবে। কোনদিন যদি দম নেবার জন্য এক টুকরো বাতাস খোঁজ, চলে এসো। আমি তোমার সব প্রয়োজন বুঝি সে তো জানোই তুমি।
ভরিয়ে দেব যতখানি চাও! পাপবোধের বালাইটা বিদেয় হয়েছে আমার কাছ থেকে। একলা চলতে আমি শিখে গিয়েছি। আমাকে নিয়ে ভেবে আর নিজেকে কষ্ট নাইবা দিলে। দেখো পরজনমে আমি ঠিকই পরীর মত রূপ নিয়ে কোন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা কোন নামিদামি দেশের সিটিনজেনশীপ নিয়ে জন্মাবো, সেদিন তুমি কিছুতেই আমাকে ফেলে যেতে পারবেনা, আমি যেতে দেবনা!
ভালো থেকো।
রাত্রির অপেক্ষায়...........
সুমনা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।