আমি বেশ চুপচাপ!! ইলিশ মৌসুম শুরু হলেও কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ইলিশের দেখা মিলছেনা। জেলেরা সাগরসহ উপকূলের নদী মোহনার বিভিন্ন পয়েন্টে জাল ফেলে আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছেনা। এছাড়া সাগরে ঘন ঘন কালবৈশাখী ও জলদস্যুদের তাণ্ডবের ফলে জেলেদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। এখন সাগর পাড়ের জেলে পরিবার গুলোকে বিভিন্ন এনজিওর ঋনের কিস্তি ও মহাজনদের দাদনের টাকা তারা করে বেড়াছে।
স্থানীয় একাধিক জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ট্রলার ও জাল নিয়ে ইলিশ পাবার আশায় সাগরসহ নদী মোহনার বিভিন্ন পয়েন্ট চষে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু দিন রাত জাল ফেলে কোথাও কোন ইলিশ না পেয়ে তারা নিরাশ হয়ে তীরে ফিরে আসছে। জেলেপল্লী গিয়ে দেখা যায় জেলেদের করুন চিত্র, জেলেদের পরিবার পরিজনরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জেলেদের অন্য কোন আয়ের উৎস না থাকায় সাগর পাড়ের হাজার হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়ছে। অধিকাংশ জেলে ব্যাংক ও এনজিও ঋনের কিস্তির ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছেনা। তাদের পরিবার অনাহারে-অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছে।
মাছ ধরা ট্রলার ফয়সালের মালিক মনির মিয়া জানান, তার ট্রলারে ১২ জেলে নিয়ে সাগরে যাত্রা করেছে। এতে জ্বালানী, খাবার, বরফসহ প্রায় ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তার আশা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও জলদস্যুদের কবলে না পড়লে তাদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পরবে।
আজিজ মাঝি জানান, জলদস্যুদের ট্রলার আমাদের ট্রলারের চেয়ে বেশী শক্তির। ওদের ট্রলারে অস্ত্রসহ লোক থাকে ২০/২২জন ।
আমরা সাগরের মধ্যে ওদের ট্রলারের সাথে শক্তিতে কুলাতে পাছিনা। তাই বাধ্য হয়ে অত্যাচার সহ্য করে হয়। আবার কেউ কেউ তাদের ট্রলার খুইয়ে জীবন দিতে হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ এনে ট্রলারসহ জাল, জ্বালানী কিনে সাগরে ইলিশ শিকারে যেতে হয়। এ ঋনের টাকা প্রতি সপ্তাহে পরিশোধ করতে হয়।
গঙ্গামতির জেলে হাবিব জানায়, এ্যহন সাগরে আবহাওয়া খুব খারাপ। হ্যার পর জাল পাতলে মাছ ওডেনা। বইয়া থাক্কাইয়া লাভ কি। মোরা হগুল্ডি মিল্লা পুরান জাল গাইছি।
বেসরকারী সংস্থ্যা কোডেকের এক জরিপে জানা গেছে, এ সমুদ্র উপকূলীয় কলাপাড়া উপজেলায় ৪০ টি জেলে গ্রাম, ২হাজার ৫’শ ৩৩ টি জেলে পরিবার ২৭ হাজার ৮’শ ৪০ জন সদস্য রয়েছে।
এরা প্রতিনিয়ত জলদস্যুদের তাণ্ডবসহ সামুদ্রিক ঝড়োহাওয়ার সাথে জীবন বাজি রেখে গভীর সমুদ্র ও এ উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
মহিপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী জানান, বার বার আবহাওয়া অনুকূলে না থাকার কারনে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে যেতে পারছেনা। ফলে ওইসব জেলেদের একদিকে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে তাদের বসে বসে মূলধন খরচ করতে হচ্ছে।
কলাপাড়া কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট কমান্ডার এম এ তালেব জানান, সাগরে আমাদের অব্যাহত টহল রয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে জলদস্যুদের আক্রমণ কম লক্ষ্য করা গেছে।
সূত্র- Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।