আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খোলাচিঠি ,ধূসর আকাশ আর গভীর রাতের কথকতা



প্রিয় লি, আমার লি, জানিনা আমার এই চিঠি তুমি কখনো পড়বে কিনা কিংবা এই চিঠি সম্পর্কে তোমাকে আদৌ কিছু বল্বো কিনা । কিন্তু আমার যে আবুঝ স্বভাব হয়ত দেখা যাবে কাল-ই তোমাকে বলে দেব। আমার একটা বদ রকমের ভালো অভ্যাস আছে জানো তো, “ আমি তোমাকে সবকিছু বলে দেই । ” ইংরেজীতে একটা কথা আছে,জানো হয়ত YOUR WORST NIGHTMARE আমার WORST NIGHTMARE কী জানো? তোমাকে হারানো । তুমি কখনো দুঃস্বপ্ন দেখেছো? দেখেছো, আমি জানি।

কিন্তু কখনো দুঃস্বপ্ন জীবন যাপন করেছ? আমি করি। যখন কোন কারণে তোমার মন খারাপ হয় অথবা তোমাকে দুঃখ দিয়ে ফেলি(হোক তা মনের অজান্তেই) বা তুমি আমার উপর রাগ করো, তখন আমার জীবন দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নাহ। আমি বাতাসের জন্য হাস-ফাস করি। মনে হয় ফুসসুস ও তোমার মত অভিমান করে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমি হাস-ফাস করি ।

হাতড়ে বেড়াই, হাতড়ে ফিরি তোমার মুঠোফোন বার্তায়, তোমার ফেসবুকের ওয়াল পোস্টগুলোতে, আমার করা সেই ভিডিওগুলোতে ( যা কিনা তোমার সৌন্দর্য্য কে ধরতে অপারগ ),খুঁজে ফিরি প্রান আমি তোমার প্রোফাইল পিকচারগুলোতে। এক চিলতে অক্সিজেনের জন্য বুক চেপে আসে, দেয়াল্গুলো ছোট হয়ে আসে,আমার আকাশ ধূসর হয়ে ওঠে ;( কী জানি বলছিলাম ? ও হ্যা ,দুঃস্বপ্ন । জখন তোমায় চিঠিটা লিখছি,তখন রাত ১১টা। আজ সারা দিন তোমার সাথে কাটিয়ে আসলাম জীবনের সবচেয়ে স্মরনীয় মুহুর্তগুলো। আমি জানি- আমি বড্ড স্বার্থপরের মত তোমায় পেতে চাই ।

কিন্তু কী করবো- এই তোমাকে দেখলে যে আমার ভিখারী থেকে ডাকাত হতে ইচ্ছা করে , অন্য সবার সাম্নের ডাকাবুকো ছেলেটাও যেন একপাশে সিথি করে চুল আচড়ানো সুবোধ বালক হয়ে যাই , বহুলোকের বুকে কাঁপন ধরানো এই আমার হাতের তালু দরদর করে ঘামতে থাকে। আমার কী দোষ বলো? আজ সিএনজি তে ফেরার সময় থেকেই কেমন যেন লাগছিল,ঠিকবোঝাতে পারবো না। যে বা যা তোমাকে কষ্ট দেয়,তাকে আমি ঘৃণা করি। আর কারণ টা কখন আমার সংকীর্ণ মনের স্বার্থপর বাসনা,তখন আমার মাথাই ঠিক থাকে নাহ । I love you so much that I have started hating myself ;(( এটাকে তুমি ন্যাকামি বলতে পারো,বলতে পারো craziness, বলতে পারো অতি তাড়াহুড়ার infatuation , তবে আর যাই বলো,এটাকে ক্ষণিকের ধারণা বলে সন্দেহ করো নাহ, আমি সহ্য করতে পারবো নাহ।

এখনো আমি রিক্সায় একপাশে সরে বসার কায়দা টা রপ্ত করতে পারিনি,আমি জানিনা ক্যাম্নে হালের sheesha খায় আমি জানিনা, জানিনা ক্যাম্নে সবার সামনে তোমার হাত ধরে হাটতে হয়, শুধু জানি ভালোবাসি তোমায়,বড় ভালোবাসি । এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে তন্দ্রার মত এসেছে জানিনা। তন্দ্রার মাঝে দেখালাম তোমায়- বড্ড বিষন্ন দেখাচ্ছিল তোমায়। পরে এসেছিলে তোমার সেই প্রিয় জিন্স আর হাতা গোটানো শার্ট টা। আনমনে আঙ্গুল চালাচ্ছিলে সেই চুলে যা কিনা বহু রাতেই আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছে, কোন কারণে বড্ড আবেগী,বড্ড অভিমানী ছিলে এই তুমি ।

আমি বরাবরের মত ব্যস্ত তোমার আস্থে খুন্সুটি করতে। টানছি তোমার চুল, তাতে যদি অন্তত তোমার রাগান্বিত হাসি টা পাই। এই হাসিটা দেবার সময় তোমার থুত্নি যে তির তির করে কাপে,তুমি কী তা জানোএই কাঁপন যে আমার বুকে ভুমিকম্প হয় তা কী তুমি জানো? কিন্তু তাতেও মহারাণীর মুখে কোন হাসি নাই, বরং মুখটা যেন আষাঢ়ের আকাশ করে রেখেছেন...। বাধ্য হয়ে আমি মহারাণীর নাকে দিলাম হাত দিয়ে টোকা। অভিমানী মহারাণীর ক্ষ্যাপা উত্তর-“কী?” কিছুক্ষণ পর আবার খোচা দিয়ে আমিও বলি- “কী?” কিন্তু এইবার খোচাখোচি আঙ্গুল দিয়া নাহ, নাক দিয়েই ।

চোখের ভাষা বুঝতে বলে চোখ লাগে, তাইলে নাকের আদর বুঝতে লাগে নাক। মহারণীর তা আছে আর এজন্যি হয়ত তার রাগ ভাঙ্গা শুরু করলো। বল্লেন- ‘কী চাও তুমি??” সভয়ে আমার উত্তর-“তোমার হাসি। “ ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি দিয়ে মহারাণী বলেন-“শুধুই হাসি?আর কিছু নাহ?” আমি বলি-“চাই তো সব ই কিন্তু আপাতত শুধু হাসি টা হলেই চলবে । ” যেই না বলেছি এইটা,সাথে সাথে এক ভুবন ভোলানো হাসি দিয়ে মহারানী বল্লেন-‘ওটা তো দেও্যা যাবেনা “ যাক মান ভাংলো তোমার।

পর নির্ভ্রতায় যেইনা ছুয়ে দিতে যাব তোমার হাত, হঠাৎ দেখি ছুতে পারছি না আমি তোমায়। আমার শিরদাড়ায় শিতল স্রোত! আমি আবার হাত বাড়াই,কিন্তু ধ্যরতে পারিনা তোমায়। কোন এক আজানা অভিশাপে যেন তুমি মিলেয়ে যাচ্ছ বাতাসে। আমি প্রাণপণে চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না তোমায় ধরতে। যেতেযেতে তুমি পুরোটাই মিলিয়ে গ্যালে।

চারিদিকের আলো নিভে গেল। কালীপূজার আগের রাতে মন্দিরে যে অমাবস্যার অন্ধকার,তেম্নি এক অন্ধকার যেন আমাইয় খামচে ধরেছে। শ্বাস নিতে পারছি না,দম বন্ধ হয়ে আসছে। এক বুক বাতাসের জন্য এই বুকে উথাল-পাথাল। ছখের সামনে ভেসে উঠলো আমার ছোট্ট বেলার সেই নাদুস-নুদুস ছবিটা,তারপর মাঠ-ঘাট ,স্কুল কলেজ পেরিয়ে এই বর্তমান ।

মৃত্যর আগে বলে সমগ্র জীবনটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে,আস্লেই তাই। তুমি ছাড়া আমার জীবন আস্লেই মৃত্যুর সমান। ঠিক এমন সময় চোখটা খুলে গেল। দেখি আমি বিছানায় শোয়া। কেম্ন জানি লাগছিল।

বলে বোঝাতে পারবো নাহ। মনে হচ্ছিল না লিখলে মারাই যাব। তাই বস্লাম লিখতে। আমি জানি আমার এই চিঠি তোমাকে কষ্ট দিবে,রাগ করবে তুমি। তবুও লিখছি।

কেন লিখছি?জানিনা। আসলেই জানিনা আর পারছিনা লিখতে। তাই তোমার ভিডিওগুলোর দিকা নিষ্পক তাকিয়ে থাক্লাম। খুব ইচ্ছা করছিল এখনি নিচে নেমে যাই। রিকশাওয়ালার সাথে চিল্লাপাল্লা করে ৩০টাকায় রিকশা ঠিক করে চলে যাই তোমার বাসা সাম্নে,সবার অগোচরে ঢুকে যাই তোমার রুমে।

চুপ্টি করে দেখি,ঘুমন্ত তুমি কী জলজ্যান্ত তুমির থেকেও বেশী নিষ্পাপ? লোভাতুর এই আমি যদি আমার ঠোটের স্পর্শে তোমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেই,খুব কী দোষ হবে??? ;(( ইতি- ন বিঃ দ্রঃ এই চিঠি লেখক কতৃক সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত । ইহার কোন ব্যবহার,অপব্যবহার, কপি-পেস্ট,পোস্টারিং,ব্যানার,ইত্যাদি করিয়া আমার চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা করলে,তাহা বরদাস্ত করা হইবে নাহ

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.