I love you more than I can say... http://on.fb.me/ZU9ABE
১.
জানো, আমি ছোট থাকতে বিড়ালের বাচ্চা কোলে নিয়ে ঘুম পাড়াতাম। আমি যেখানে পড়তে যেতাম সেখানে একটা বিড়াল থাকতো। কয়েক মাস পরপরই বিড়ালটা কতগুলো ইঁদুরের মতো বাচ্চা দিতো। জন্মের পরপরই ক্যাঁচকোঁচ শুরু করে দিত। সপ্তাহখানেক পরে গায়ে লোম গজালে কি সুন্দর ফুটফুটে লাগতো বিশ্বাস করবা না।
আমি ওগুলোর গলায় অনেক আদর করতাম। আর আদর পেয়ে ওগুলো চোখ বন্ধ করে ফেলত।
ছেলেটা যে বিড়াল পছন্দ করে, মেয়েটা তা অনেক আগে থেকেই জানতো। এভাবে বিড়ালের বাচ্চা কোলে নিয়ে ঘুম পাড়ানোর ঘটনাও জানতো। কিন্তু প্রতিবারই যখন ছেলেটা এই কথা বলতে যায়, মেয়েটার যেন রাগ ওঠে।
তারা দু'জন ঠিক করেছিল তারা বাসায় দু'টো বিড়াল পালবে। কিন্তু বিড়াল দু'টো হলে বাচ্চাকাচ্চা দিয়ে ভরে ফেলবে এই ভয়ে শেষে একটা বিড়াল পালার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ছেলেটার মুখে বিড়ালকে এতো আদর করার কথা শুনে মেয়েটার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
'আমাদের বাসায় বিলাই পালা নিষেধ,' রুল জারি করে যেন মেয়েটা।
'ওমা! কেন? বিলাই কী দোষ করেছে?'
'বিলাই কোনো দোষ করেনি, দোষ করেছ তুমি,' দ্বিগুণ রাগ দেখিয়ে বলে মেয়েটা।
'আমি আবার কী করলাম?'
'আমাদের বাসায় বিলাই থাকলে তুমি সারাদিন বিড়ালের পেছনেই কাটাবা। আমাকে তোমার আর চোখে পড়বে না। এ জন্য বিড়াল পালা আমাদের ঘরে নিষেধ। আমি বিলাই একেবারে ঘরের বাইরে ফেলে দিব। '
'আমি কি বলেছি নাকি যে আমি তোমাকে ভুলে গিয়ে বিলাই নিয়ে থাকবো?'
'না, আমি এতোকিছু জানিনা।
বিলাই পালা নিষেধ ব্যস নিষেধ। '
'না আমি বিলাই পালবো,' ছেলেটা যেন কাঁদো-কাঁদো গলায় বলে। তা দেখে মেয়েটার মন নরম হয়। সে বলে, 'আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু ততোটুকুই আদর করবা যতটুকু না করলেই না।
'
ছেলেটা যেন খুশি হয়ে ওঠে আবার। 'আচ্ছা ঠিক আছে। প্রতি বেলা খাবার দেয়ার সময় বিলাইটার গাল চুলকে দিবো। গলায় চুলকে দেব। আর যদি কোলে আসতে চায় তাহলে কোলে নিব।
'
বিলাই কোলে নেয়ার কথা শুনে মেয়েটার মেজাজ আবার খারাপ হয়ে যায়। সে বলে, 'আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে তোমার বিলাই নিয়ে তুমিই থাকো। আমি থাকবো না তোমার সাথে। '
'সে কি! তাহলে বিলাই থাকবে কই?' বিচলিত হওয়ার ভান করে ছেলেটা।
মেয়েটা রেগে বলে, 'কেন? আমি বুঝি সারাদিন বিলাই কোলে নিয়ে থাকবো? '
'না, তা না। কিন্তু বিলাই তো তোমার আর আমার সংসারে থাকবে, তাই না? তুমিই যদি না থাকো, তাহলে তো আমাদের সংসারও হলো না। আমাদের সংসারই যদি না হয়, তাহলে বিলাই আসবে কোত্থেকে?'
কিন্তু তার এই কথার জবাব দেয় না মেয়েটা।
২.
কথাগুলো শুরু হয় একটু অন্যভাবে। ছেলেটা প্রথমে বলে, সে আজ দোকানে খরগোশ দেখেছে।
কিউট কিউট দেখতে খরগোশগুলো তাকে দেখে খাঁচার ভিতর থেকেই এগিয়ে এসে ডাকাডাকি শুরু করে। ছেলেটার এই কথা শুনে মেয়েটারও মনে পড়ে তার ছোটবেলার কথা।
সে অনেক ছোট থাকতে খরগোশ নিয়ে খেলত। খরগোশ নিয়ে আবার কীভাবে খেলে, এমন প্রশ্ন করে ছেলেটা। মেয়েটা বলে, খরগোশ কোলে নিত।
খরগোশ ছেড়ে দিলে খরগোশ দৌড়াতো, মেয়েটাও পেছন পেছন দৌড়াতো। খুব অল্পবয়সের ছিল তখন মেয়েটা। ছেলেটা মনে মনে কল্পনা করে এই দৃশ্য। বাচ্চা একটা মেয়ে একটা সাদা খরগোশের পেছনে ছুটছে। আচ্ছা, খরগোশটা তখন বেশি কিউট ছিল, নাকি মেয়েটা? মেয়েটার দিকে তাকায় সে।
সে নিশ্চিত, মেয়েটা বেশি সুন্দর ছিল।
খরগোশ নিয়ে খেলার কথা বলার পর ছেলেটারও বিড়ালের বাচ্চা কোলে নিয়ে ঘুম পাড়ানোর কথা মনে পড়ে যায়। তখনই সে কথাগুলো মেয়েটাকে বলে।
৩.
'কী হলো কথা বলছো না কেন?' ছেলেটা জিজ্ঞেস করে।
'না, ঠিক করেছি তুমি বিলাইকে বেশি আদর করলে আমিও দু'টা খরগোশ ধরে আনবো।
ওগুলোকে আদর করে আর ওদের সাথে খেলে সময় কাটাব। '
রেগে যায় ছেলেটা, 'আমি খরগোশকে কান ধরে বের করে দিব। খরগোশের কান বড় আছে, বের করতে সমস্যা হবে না। '
'তাহলে তুমিও বিলাই পালতে পারবানা। ' মেয়েটা বলে, 'পাললেও খুব বেশি আদর করতে পারবানা।
'
'আচ্ছা ঠিক আছে বললাম তো। তোমাকে বেশি সময় দেব। '
মেয়েটা খুশি হয়।
তার হাসিমুখ দেখে ছেলেটাও খুশি হয়।
সেই মুহুর্তের পূর্ব পর্যন্ত ছেলেটার মনে খরগোশ নিয়ে আর মেয়েটার বিড়ালের প্রতি একরাশ হিংসা বাসা বাঁধে।
এই হিংসাও যেন অনেক সুইট, অনেক ভালোবাসার, অনেক স্বপ্ন আর অভিমানে ভরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।