আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একরাশ ভালোবাসার কবিতা

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! একরাশ ভালোবাসার কবিতা অনিয়মের ভালো লাগা ডঃ রমিত আজাদ তোমাকে আমার ভালো লেগেছে, কিন্তু কি করে বলি বলতো? আর তুমিই বা কিভাবে নেবে? আমার কি আর সে বয়স এখন আছে? যৌবন পেরিয়ে চলে এসেছি অনেকটা দূর, আর তোমার তো মাত্র শুরু, তদুপরি আমার পাশে রয়েছে ভিন্ন এক রমণী। যদি আমি সাহস করে বলেই ফেলি, যদি তুমি ফুঁসে ওঠো, যদি এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে শহরময়, আমি কি ধিক্কৃত হব না? তোমাকে কেমন করে বোঝাই, আমার বুক জুড়ে চলছে, উত্তপ্ত আগ্নেয় লাভার তীব্র তোলপাড়। তোমার ঘুরে দাঁড়ানোর ছন্দময় স্নিগ্ধতা, আমার অতৃপ্ত আত্মার মরুময়তা, বিন্দু বিন্দু করে জমা হওয়া নিস্পেষণ , আমার আবেগের আল্পনায় স্নিগ্ধ অনুরণন, তোমার মমতা খেলে আমার কবিতা হয়ে, এই গুমোট নগরীর জমাট আঁধার কেটে দিয়ে, ঐ যে শুনেছিলাম ভালোবাসার কোন বয়স নেই, তখন বুঝিনি, আর এখন বুঝতে পারছি বেশ, আমার না বলা কথা ভবঘুরের মত ঘোরে, নীরব বিবেকের অলিগলিতে, নিয়ম মেনে চলাই যেখানে রীতি, সেখানে অনিয়ম চলেনা, আমি তো নিতে পারব না, জন্ম নতুন এক। তাই আর হয়না বলা, কেবল স্বগতোক্তির মত নিজের কথা নিজেকেই বলি, সেকথা তোমাকে বলা হবে না হয়ত কোনদিনও, কিণ্তু তোমাকে আমার সত্যিই ভালো লেগেছে। আজ তাকে শাড়ীতে দেখেছি ---------------------------ডঃ রমিত আজাদ মেয়েটিকে প্রায়ই দেখি, অসম্ভব সুন্দর, নিস্পাপ একটি মুখ, বৃষ্টির পরে সবুজ সতেজ ঘাস যেমন, কখনো তুলনা করি বন ছেয়ে যাওয়া পিংক কাসিয়ার সাথে, ঐ সৌন্দর্য থেকে চোখ সরানো যায়না।

তার অনুপস্থিতি আমার মাঝে শূণ্যতার সৃষ্টি করে। আবার কখনো কখনো তাকে দেখি, অনেক মানুষের ভীড়ে হঠাৎ হঠাৎ দেখা দেয়, অনেকটা দক্ষিণা হাওয়ার দিনে, গাছের পাতা আর সুর্যের আলোর লুকোচুরির মত আর আমার চোখ ফিরে ফিরে আসে নতুন মুগ্ধতা নিয়ে। ব্যাতিক্রম কেবল তার পোশাক, আধুনিক যুগে সব মেয়ে আর অস্টপ্রহর বাঙালী পোশাক পড়েনা, সালোয়ার-কামিসের পাশাপাশি প্যান্ট-শার্ট, স্কার্ট-টপস চলছে বেশ, একসময় এগুলো ছিল নিতান্তই অপ্রচলিত, ইন্টারনেট আর আকাশ সংস্কৃতির যুগে, এখন এটাই হয়ত রীতি। বাঙালী নারীর আজন্ম লালিত পরিচ্ছদ শাড়ীটা এখন একেবারেই আনুষ্ঠানিক হয়ে গিয়েছে, খুব ইচ্ছে হতো চপলমতি ইনোসেন্ট ঐ মেয়েটিকে একবার শুধু শাড়ীতে দেখতে। অবশেষে দেখলাম, অপ্রত্যাশিত একটি জায়গায়, হঠাৎ করেই সে, ফিরোজা রঙের চমৎকার কারুকাজ করা শাড়ী পড়া, আমি থমকে গেলাম, অপ্সরী দেখিনি সত্যি, কিন্তু ঠিক ঐ মুহুর্তে মনে হলো, সেই তো অপ্সরী ।

চপলমতি হেটে গেল বাতাসে ঢেউ তুলে, যেন পাহাড়ী ঝর্নার গায়ে ঝরে ঝরে পরছে সোনালী ফুল, তখনো নামেনি সন্ধ্যা এই ব্যাস্ত নগরীতে, বসন্ত এলো এলো বলে ঐ আকাশটাও পুরোপুরি নীল। শাড়ী? হ্যাঁ শাড়ীই তাকে এতটা সুন্দর করেছে, শাড়ীই তাকে দিয়েছে রমণীর রূপ, আচ্ছা এই সুন্দর বসনটি কি চিরস্থায়ী হতে পারেনা? চিরস্থায়ী সৌন্দর্য হয়ে তুলুক ঢেউ দক্ষিণা হাওয়ায়, নন্দনের প্রসুন হয়ে বসন্ত বাগানে ফুটুক কামিনী, তোমাকে আমি বারবার শাড়ীতে দেখতে চাই রমণী। নীল সিকোরী মূল: মারিনা রাতনের ভাবানুবাদ: ড: রমিত আজাদ স্মৃতির রং - নীল সিকোরী, অপার্থিব নিসর্গের সৌন্দর্যে প্রস্ফুটিত। ত্সিকোরীর নীল রঙে ভরা স্মৃতিবিধুর দিনগুলোতে, প্রিয়তম আমার, তুমি কি অস্টপ্রহর কেবল আমাকেই ভাবছ? আর ফুলগুলো পরম আকুলতায় অনুরাগ ভরা উদ্ভাসিত হৃদয়ে জড়িয়ে ধরেছে পেটিওলিট বিথীর প্রলোভিত ভাগ্যের কান্ড। এখনো উঠেনি চাঁদ নীলান্ত আকাশে, স্বচ্ছ প্রস্ফুটিত প্রভাতের উষ্ণতা কেবল ছুঁয়েছে সিভেরস্কি দোন্ত্স হ্রদের গভীর নির্বাক জল।

এই অধর ছুঁয়েছে স্মৃতির নীল রং, বেদনার রং গায়ে মেখে নিয়ে বলি, উল্লসিত নীল ত্সিকোরী ফুটে 'যদি', বিস্ময়বিহ্বল আলো 'আসবে কি'? (নীল ত্সিকোরী - গ্রীস্মের উজ্জ্বল দিনগুলোতে ইউক্রেনের প্রকৃতিতে ফুটে থাকা অদ্ভুত সুন্দর ফুল। ) আমি একবার দুঃখ ভুলে বসন্তের ফুল পেতে চাই ------------------- ডঃ রমিত আজাদ কাল ছিল শীতের শেষ রাত, আলোহারা রজনীর নিঝুম নিস্তদ্ধতা, আজ বসন্তের প্রথম দিন, ফুলের সৌরভের মাতামাতি, কোকিলের গান। সৌভাগ্যক্রমে এটিই তোমার জন্মদিন। কেমন আছ তুমি? খুব জানতে ইচ্ছা করে আমার। তুমি কি সুখে আছ? নাকি আমার মতোই কষ্টে কাটে দিন? নিঃসঙ্গতায় ভোগো? না, বোধহয়, তোমার তো স্বামী রয়েছে।

অবশ্য আমারও রয়েছে স্ত্রী, তারপরেও কিন্তু আমি নিঃসঙ্গতায় ভুগী, কি অদ্ভুত তাইনা? সঙ্গ আছে তবু নিঃসঙ্গ আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, তুমিও কি সঙ্গ থেকেও নিঃসঙ্গ? আমার অংশিদার যেদিন আমাকে ঠকিয়ে ব্যবসা নিয়ে গেল, অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম, আমার বাবার উপহার একমাত্র জমিটি যেদিন দখল করে নিল, অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম, টাকার জন্য যেদিন আপন ভাই দুর্ব্যবহার করলো, অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম, কিন্তু তোমাকে যেদিন হারালাম, সেদিনের মত কষ্ট আর কোনদিনও পাইনি, ঐসব টাকা-পয়সা, জমি-জমার দুঃখ কবেই ভুলে গিয়েছি। কিন্ত তোমার সাথে বিচ্ছেদের কষ্ট, এখনও ক্ষত হয়ে জ্বলছে, ভালোবাসা যে এত দুঃখ, কষ্ট, জ্বালা আর যন্ত্রণা দিতে পারে তা কে জানত! তোমাকে ভালোবেসে, পৃথিবীর সব কিছুই আমার কাছে মেঘের মত রঙিন মনে হতো। মনে হতো পৃথিবীতে কষ্ট বলে কিছু নেই, সিদ্ধার্থ মিছেই বলেছেন, 'জগৎ দুঃখময়!' জগৎ সুন্দর, সুন্দর, অদ্ভুত সুন্দর, আমার পাশের রমণীটির মতই সুন্দর! আর এখন, আমার চারপাশে শুধুই যন্ত্রণা, সিদ্ধার্থ যথার্থই বলেছেন, 'জীবন মানেই দুঃখ!' গতরাত ছিল শীতের শেষ রাত, আমার অতৃপ্ত মনের প্রতীক, আজ বসন্তের প্রথম দিন, হাজার হাজার ফুলে ফুটে আছে তোমার ভালোবাসা । তোমার মধুর জন্মদিনে, আমি একবার দুঃখ ভুলে বসন্তের ফুল পেতে চাই। তোমার কথা প্রায়ই মনে পড়ে, তুমি কেমন আছো? ------------------------------------ ডঃ রমিত আজাদ আমার মন যে কতটা খারাপ তুমি বুঝবে না, রৌদ্র কেড়ে নেয়া কালো মেঘের থমথমে নীরবতা দেখেছ? অথবা তুহীন শীতে জমে বরফ হয়ে যাওয়া কোন নদী? তোমার ঐ পেলব হাতটি দাও, স্পর্শ করতো আমার হৃদয়, টের পাও কিছু? তবে আমার বুকের ক্ষত গলে হৃদয়ের ভিতরে ঢুকে যাও, এবার কি দেখতে পাও, সব বেদনা জমাট বেধে কেমন পাথর হয়ে আছে? আচমকা এলে, আচমকা গেলে, এ যেন সুরের বীণা বেজেই থেমে গেল, এ কেমন প্রেম বলতো? তার চাইতে না এলেই পারতে।

এটি একটি অপূর্ণ কবিতা, একটি অসম্পূর্ণ গান। না কিছুই নয়, স্রেফ তোমার জন্য নির্মল সাদা কাগজে কলমের ধাতব নিবের নিষ্ঠুর আঁচড় অনেকটা দেরী করেই পরিচয় হয়েছিলো আমাদের, হয়তো তোমার জন্ম হয়েছে অনেক পরে, অথবা আমি পৃথিবীতে এসেছি অনেক আগে, এমনটা না হয়ে যদি সব কিছু সময়মতো হতো, তবে কি ভিন্ন জীবন হতো আমাদের? বাতাসে দোল খাওয়া মাধবীলতা, কার্নিশ ছেয়ে হেসে ওঠা বাগানবিলাস, বাগান ভরা সুহাসিনী ডালিয়া ফুলের উজ্জ্বল বর্ণচ্ছটা, সারাটা বিকেল জুড়ে তোমার প্রতিক্ষা, তোমার কি মনে পড়ে? আমার কিন্তু বেশ মনে পড়ে, তোমার চুলে রৌদ্রের খেলা, তোমার ওড়নার ঝালর, তোমার শাড়ীর আঁচল তোমার কপোলের লাল আভা তোমার ভীরু চোখে উপচে পড়া হাসি, জাপানী কিমানোর মত পরিপাটি তুমি, অনেক কৌতুহলী চোখ এড়িয়ে, অথবা সবগুলো চোখের সামনেই, আমাদের নিষিদ্ধ অভিসার, অস্হির এই পৃথিবীতে একমুঠো সুখ। তুমি কি জানো, আমি এখনো তোমাকে খুঁজি? ঢাকার পথে পথে খুঁজি, ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে খুঁজি, মোবাইলের স্ক্রীনে খুঁজি, ফেইসবুকের পাতায় পাতায় খুঁজি, কেন? দু'টি প্রশ্ন করব, তোমার কথা প্রায়ই মনে পড়ে, তুমি কেমন আছো? আমার কথা ভেবে, তোমার মনও কি উন্মনা হয়না? সেই থেকে আমি আর কবিতা পড়িনা ------------------------------ ডঃ রমিত আজাদ সেই থেকে আমি আর কবিতা পড়িনা, কেবলই শুনি গান, সুরের মূর্ছনার আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হই, যেমনটি হয় কোঁচবিদ্ধ ছটফটে মাছ । হৃদয়টাকে টেনে ছিঁড়ে বুকের মাঝখানে একটা গহবর তৈরী করেছ, তাই আমি আজ একেবারেই হৃদয়হীন, সুদুর সাইবেরিয়ার হীমশীতলে নির্বাসিত। কালাপানির আন্দামান হলে ভালো হত, অন্ততপক্ষে মহাসাগরের গর্জন শুনতে পেতাম।

একদিন তুমি তো আমারই ছিলে, তোমার সুমিষ্ট নারীকন্ঠের ডাক, এই কানে ঢেলেছে সুধা মৃন্ময়ী বসন্ত হয়ে, স্বপ্নে তো নয়, বাস্তবেই তোমাকে চুমু খেয়েছি সহস্রবার, একেবারে বুকে জড়িয়ে, নিস্পেষিত করেছি, অজস্র আকুলতা নিয়ে। আবেগঘন মুহুর্তগুলোতে ঘনঘন দীর্ঘশ্বাসের সাথে ছিল ফিসফাস কথপোকথন, এই আঙুলের সব উষ্ণতা দিয়ে তোমাকে ছুঁয়েছি। হ্যাঁ, নিশ্চিত তোমাকে ছুঁয়েছি বাধাহীন, বারংবার, দেখিয়েছি তোমাকে, আমি কতটুকু উত্তাল হতে পারি, মনে হয়েছে যেন আমিই তোমার স্বামী। সদ্য পঠিত কবিতা রেখে, ছুঁয়েছি তোমার অধর, তোমার দেহবল্লরীকে মনে হয়েছে খরস্রোতা নদী যেন তোমার সজল আঁখী, তোমার পেলব ঠোট, তোমার গোপন তিল একসময় এই সবকিছুর অধিকার শুধুই আমার ছিল। আমার আকাশ বিদ্ধ করেছে ডাকিনীর তীর, পূর্ণিমার চাঁদ গিয়েছে নিভে , নিঃশব্দে নেমেছে ঘোর অমাবশ্যা , আজ তোমার গায়ে পরপুরুষের ঘ্রান পেচিয়ে আছে সম্মোহিত সাপ হয়ে।

ক্লান্তিকর খেলা শেষে, আমার হতাশা আর নিরুত্তাপ তুমি । আমি ডানা ঝাপটানো একটি নিঃসঙ্গ বিহঙ্গ যেন, টর্নেডো ভেঙেছে কপাট, ভূমিকম্প গুড়িয়ে ঘর, সুনামীর তীব্র স্রোতে উঠেছে ভয়াল ঝড়। মনের গভীরে চোখের জল ঝড়ে ঝড়ে হয়ে গেল যেই নদী, ধীরে ধীরে বাড়ছে সে নদীর জল, এই প্লাবন এলো বলে, আমাকে কি ধুর্ত প্রেমিক বলবে? কিংবা প্রতারক যুবক? কোন মায়াবী খাঁচায় তো তোমাকে পুরে রাখিনি, তুমি মুক্ত বিহঙ্গ, উড়ে যাও যেখানে চাও। আমি বড়জোড় লিখতে পারি একঝাক চিঠি। প্রেমের অনন্তলোক ছুঁয়ে, আমার চিঠিগুলো কাগজের পতঙ্গ হয়ে, একের পর এক ঢুকে পড়বে তোমার জানালা গলে দুর্নিবার পূর্ণিমার আকাশ ছেঁয়ে দেবে তমশায়, নিশি জাগা তুমি আর তোমার স্বামী নিশ্চিত বঞ্চিত হবে জোছনার মাধুরী থেকে।

আমার আকাশেও এখন আর চাঁদ ওঠেনা, তবু সিদ্ধার্থের মত গৃহত্যাগী হতে চাই, পাশে শুয়ে থাকা বধু আর শিশু ইচ্ছেটাকে অবদমিত করে এই ভয়ার্ত আঁধারে কার কাছে যাব আমি, তোমাকে ছাড়া? সেই তুমিই রয়েছ ফিরে, হয়েছ বৈরী, অসহায় আমি আজ আকাশের মত একলা। আমাদের বিচ্ছেদে অনেক কেঁদেছি আমি, তুমিতো দেখনি সে কান্না! আমি একাই সে অশ্রুবারির দর্শক। তোমার কাছে ফিরে যাবার আর কোন পথ নেই তো খোলা। এখন হাতড়ে বেড়াই, কেবলই স্মৃতি, কেবলই স্মৃতি, কেবলই স্মৃতি, বারবার মনে পড়ে একটি মায়াবী মেয়ের মুখ! নারী ও সমুদ্র -------- ডঃ রমিত আজাদ চুলগুলি অযত্ন বিন্যস্ত, এলোমেলো উড়ছে মোলায়েম কেশগুচ্ছ , উচ্ছাসী সাগরের হাওয়ায় সমুদ্রের ছায়া পড়ে তার চোখে, সমুদ্রের ঐ আশ্চর্য্য নীলের মত তার চোখও ঠিকরে দিচ্ছে তীব্র রঙের ছটা। খুব দূরে দূরে একেবারে দিগন্ত ঘেসে সাগরের ঢেউ ছুঁয়ে ছুঁয়ে, এক টুকরো মেঘে ক্ষণে ক্ষণে জাগে বিদ্যুতের চমকানি, আর আমি থেমে থেমে দেখি তার রূপ-ঝলকানি মনে হয় সে এত কাছে, যেন তার হৃদস্পন্দন শুনতে পাই।

কেমন উদগত আবেগে, তার লাবণ্য, দীপ্তি সৌরভে সুগন্ধী নিশ্বাসের মদিরায়, মনে জেগে ওঠে নেশা। এইতো প্রথম এমন করে নারী ও সমুদ্র দেখা । কোন কালে কোন কবি যেন তুলনা করেছিলেন নারী ও ফুলের, আরো হয়েছে তুলনা নারী ও নদীর। আর এই ক্ষণে বলে ওঠে আমার উন্মত্ত মন-রুদ্র উদ্বেলিত নারীর একমাত্র তুলনা ঐ উচ্ছসিত সমুদ্র। তুমি কি চোখের ভাষা পড়তে পার? - ডঃ রমিত আজাদ তুমি একদিন জানতে চেয়েছিলে, আমি তোমাকে কতটুকু ভালোবাসি।

প্রিয়তমা আমার, সমুদ্রের গভীরতা, সেও তো মেপে ফেলা যায়। ভালোবাসার গভীরতা আমি কোন ফিতায় মাপব? বুঝিয়ে বলতে বল? আমাদের জানা কোন ভাষায় বলতে গেলেও তা কেমন যেন দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে। আমি বরং শ্বাশত ভাষাতেই বলি। কোন সে ভাষা? শব্দের পিঠে শব্দ জুড়ে দিয়ে নয়, ধ্বনির পর ধ্বনি উচ্চারিত করে নয়, চোখে চোখ রেখে নির্বাক সে ভাষা। কোমল প্রাণ আমার, তুমি কি চোখের ভাষা পড়তে পার? তোমার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে, আমার চোখ ভেদ করে হৃদয় ছুঁয়ে দেখ, মহাসাগরের সুনীল স্বচ্ছ জলের মতই আমার ভালোবাসা সত্য।

মহাকাশের ঝকঝকে তারাগুলোর মতই আমার ভালোবাসা পবিত্র। (বিদেশী কবিতার ছায়া অবলম্বনে রচিত) বিচিত্র মন হৃদয়ের রজনীগন্ধা তুমি, তুমি নীল অপরাজিতা বলেছিলে হেসে, "আমায় নিয়ে লেখনা একটি কবিতা"। আমি কবি নই তবু, লিখব আজ কিছু পংক্তিমালা, বাতায়ন খুলে সাজিয়ে দেব হাজার তারার মেলা। শব্দের ঝড় উঠবে ফুঁসে নন্দিত কোন অরণ্যে, কবিতার তার তুলবে সুর, তোমাকে স্পন্দিত করার জন্যে। যদিও প্রথম প্রেম নয়, তবুও শীতের কুয়াশায়, তোমার শ্যামল ছবি রহস্যময়, আমার বুকে তুলেছিল ক্ষুদ্ধ আলোড়ন, সাগরের গর্জনের মত অশান্ত, উদ্দাম।

তোমার মনের কথা আমার দুহাত ছুঁয়ে যাওয়া, কি জানতে চাও বল? কেন আমি এতই বেপরোয়া? অমিত তৃষ্ণা আমার, তাই আমি হয়েছি অবাধ, নিষেধের বেড়াজাল ভেঙ্গে, নিয়েছি প্রেমের সাধ। দুরন্ত স্রোতের মত, দিগন্ত রেখার টানে, ছুটে গিয়েছি নিঃসীম শূণ্যের পানে। সুহাসীনি শীতের ডালিয়া অথবা সুর্যমূখী, বৈকালের টলটলে জল সেচে, তোমার হৃদয়ের সকল উষ্ণতা আমাকে দিয়েছ তুমি অতি নিঃসংকোচে। ময়ুরাক্ষী নদীটির কলহাস্য যেন গানের আসরে তুলেছে বীণার ঝংকার, মানস সরোবরে সদ্য প্রস্ফুটিত নীলপদ্ম সেজে হয়েছে অলিক উপহার। যদি জানতে চাও, এই কাহিনীর ইতি ডাকবে কবে ? আমি বলব, শেষ নেই, এ গল্প অবিরাম চলেই যাবে।

সেই জমি, কাজ, রাজনীতি আর মেয়ে মানুষের গল্পের মত, জাহাজের ডেকে, রেলের বগিতে, বাসের সিটে, মানুষের মুখে যত, কাহিনী বদলায় না, গল্প বদলায় না, বদলায় শুধু পাত্র, তুমি আমি তো মহাকালের স্রোতে দুটি ক্ষুদ্র বিন্দু মাত্র। কি উদ্দেশ্য? দোহাই তোমার, এমন প্রশ্ন করনা। উদ্দেশ্যহীনভাবে কি ভালোবাসা যায়না? জানি তুমি আমার অন্তরঙ্গতায়, আবেগঘন স্পর্শকাতরতায়, বিন্দুমাত্রও কুন্ঠিত নও, বরং তুমি বারংবার কেবল স্পন্দিতই হও। তবুও অতটা অশান্ত হবনা, দূরেই থাকি, অত কাছে যাবনা, ভয় হয়, আমার উত্তপ্ত স্পর্শে , যদি তুমি ছাই হও শেষে। তুমি আমায় ভালোবেসেছিলে - ড: রমিত আজাদ তুমি আমায় ভালোবেসেছিলে, আমি তোমায় ভালোবাসিনি।

তুমিও জানতে তা, তবু তুমি এসেছিলে, পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে উদ্ভাসিত হৃদয়ে। তোমার ভাষাহীন নির্বাক চোখ, তমসায় ছেয়েছিল। তোমার অভিমানি মন, এ মনে পায়নি ঠাঁই। পরাজিত প্রেম আকুল হয়ে ছুটেছে নিরুদ্দেশ, বেদনার রং গায়ে মেখে নিয়ে বলেছিলে, "আপনি মিথ্যে করে হলেও বলুন, ভালোবাসি"। আমি মিথ্যে করে হলেও বলেছিলাম, "ভালোবাসি"।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.