আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হয়তো এমনই



থমথমে চারপাশ। আঙ্গিনার কৃষ্ণচূড়া গাছটা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে। তার পাতাগুলো অনুভূতিহীন আজ। রাস্তার ধারে ধূলোর পুরুস্তর পড়েছে। পদচিহ্নগুলো যেন অনন্তকালের সাক্ষী হতে চলেছে।

। আজ একটু মৃদু বাতাস চাই… গাছের কান্নায় ভারী পরিবেশ,সেই বাগানে প্রবেশ যেন আজ কেবলই অনধিকারচর্চা। শোকে কাতর কৃষ্ণচূড়ার নির্বাক দৃষ্টি যেন সব ছারখার করে দিতে পারবে। দখিনের পানে সকলের আজ একই প্রার্থনা “আমার ঘরে এসো, আমায় আজ দোলাও তোমার ছন্দে, এসো …” যুগের পর যুগ কেটে যাচ্ছে এমনই ধূসরতায়… একসময় সব অতীত হয়ে গেল। কখনো কি বাতাস বইত এই ধরাতে? কখনো কি কৃষ্ণচূড়া ঝরে পড়ত তার ঝংকারে? ভুলে গেল সবাই…সবকিছু।

। সব। । অভ্যস্ত সৃষ্টি আজ ধরাকে ধূলোর স্তরে ডুবে থাকতে দেখে…নির্বিকার! দেখে অনুভূতিহীন জীবন…আজ আর তা দুঃখ নয়,বাস্তব। ।

সময় নামক দানবটাকে আজ বড় তুচ্ছ মনে হয়। পিছুটানহীন জীবন…বোঝা মুশকিল জীবন এগুচ্ছে নাকি তলিয়ে যাছে অনন্তে,কালোয়…কোথাও বাতাস নেই। বায়ুহীন ধরণী… এক ঝটকায় ঘুম ভাঙ্গলো ঘাসফুলগুলোর। আনত শিরে আজ অনুভূতির শিহরণ। অন্ধকার হয়ে পড়লো ধরণী! ধূলো আর ধূলো!! বাঁচাও…।

সবাই আজ জীবনের তাগিদে, বেঁচে থাকার প্রয়াসে চিৎকার করে চলেছে। লন্ডভন্ড হয়ে পড়ছে সব। বৃক্ষরাজি যেন দাঁড়াতে পারছে না। কেঁপে কেঁপে উঠছে প্রতিটি হৃদয়!! …এমন আর কখনো হয়নি তো! আতংক সর্বত্র। হয়তো আজই শেষ…অস্তিত্ত্বের সমাপনী বীণ বাজলো বলে… কারো কিছু মনে নেই।

কতটুকু ঝড়…কতটুকু ধ্বংস… কেউ মনে করতে পারল না। । চোখ মেলে হতবাক হয়ে পড়ল প্রজাপতিটি। তার পাশে উড়ে বেড়াচ্ছে রঙ্গিন কিছু, সে চিনতে পারল না প্রথমে তার সখাদের। ।

হতবাক!! এও কি সম্ভব?? এত রঙ কোথায় পেলে?? কৃষ্ণচূড়ার পাপড়িতে আজ রঙ্গিন বৃক্ষতল। বৃক্ষ নিজেই নির্বিকার!এও কি সম্ভব?? আমার অঙ্গে এত রূপ ছিল তাই??আজ শতাব্দির ইতিহাস, স্মারক সব হারিয়ে গেছে। পথের সেই ধূলোর স্তুপ গায়েব হলো কিভাবে?? পথিক স্তম্ভিত!!কেউ কখনো দেখেনি ধরার এমন রূপ। কেউ আগে অনুভব করেনি আজকের অনুভূতি! সবাই আজ সচল বাঁচার তাগিদে। ঘর বাঁধতে হবে মজবুত করে যেন গতদিনের সেই দানো সব লন্ডভন্ড করে দিতে না পারে।

কারো কারো ঘোর কাটেনি এখনো। রঙের মেলায় হারিয়ে গিয়েছে তারা। প্রতিদিন সেই দানো হানা দেয় আর লন্ডভন্ড হয়ে যায় সবকিছু, বারংবার। এত ঘাত,সেই অচেনা দানোর এত অত্যাচার…সবাই তটস্থ হয়ে পড়ে। চাঞ্চল্য সর্বত্র … এক সময় সকল সৃষ্টি অভ্যস্ত হয়ে পড়ল।

সেই দানোকে এখন আর আগের মতন ভয় হয় না। নিত্য ঘটনা যেন তাকে কেন্দ্র করে চলতে থাকে যেমন তেমন…। । একদিন বৈঠক ডাকা হয়। অনেক ভেবে সেই দানোর নাম রাখা হয় “বায়ু” ।

কেউ জানে না তার ঠিকানা বিধায় তার আগমন পথেরই এক দফারফা হোক। সেই পথের নাম দেয়া হয় “দখিন”। … কালের সাক্ষী বটবৃক্ষের তলে বসা বৈঠকের সমাপ্তি ঘটে। সবাই ফিরে যায় যার যার ঠিকানায়, সেই দানোর চিন্তা মাথায় নিয়েই। মুচকি হাসে কেবল সেই বটগাছ, বার্ধক্য যেন হাসিটকুও গ্রাস করে তার।

। (WALL-E দেখার বেশকিছুদিন আগে লিখেছিলাম, কিন্তু পরে কোথায় যেন মিল খুঁজে পেলাম। সবাই মাফ করবেন। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।