আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি বড্ড খ্রাপ মানুস

প্রতিহিংশার রঙে রঙহীন বিবর্ন আমার আকাশ চিৎকার করে আর হাহাকার, ক্ষুধা আর ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়া আমি শুনি বিদ্ধস্ত ক্ষত দেয়ালের শেষ দীর্ঘশ্বাস মৃত্যুর ছায়া দেখি সময়ের আয়নায় ...

নিজেরে নিয়ে যত কম লিখতে চাই, ততই বেশী লিখতে ইচ্ছে করে। অন্য কারো চক্ষে ভাল/খ্রাপ যেটাই হই না কেন! আমি নিজে জানি আমি কেমন? যেমন ছোট একটা উদাহরন দিলেই বোঝা যায় – আমার এই ছোট্ট জীবনে কম কইরা না হইলেও পনেরটা মাইয়্যা ছিল। পাঁচ আমার প্রিয় সংখ্যা কিনা। ম্যাজিক্যাল ফিগার, গনিতের প্রাইম নাম্বার। সবগুলারে নিয়া বলতে গেলে তো বই লিখতে হব।

তয় সব গুলান মাইয়্যার কুন না কুন স্পেশালিটি ছিল। যে সকল কারনে সবাই প্রেমে পড়ে আর কি। কারও চোখ সুন্দর, কারও ক্ষেমা কারও বা দৈহিক গঠন। আমি অন্য কাউকে ছোট করে বলছি না। কেউ কেউ প্রেম করে মন দেখে।

কিন্তু শেষটা ওই একখানেই। তো আমার থিওরী হইল শেষটা যখন ওইখানে তো শেষ থেকেই শুরু করা ভাল। ধরি আমার শেষ যে মেয়েবন্ধুটি ছিল(আধুনিক ভাষায় গার্লফেন্ড বলা যায়) তার নাম নীলা। নীলাকে আমি চিনি তাও আট বছর হবে। আমার সাথে শুধু বন্ধুত্বের সম্পর্কই ছিল অন্য কিছু না।

সুখের বন্ধু বলার চাইতে দু:খের বন্ধু বলাই ভাল। যখনই ওর বয়ফেন্ডের সাথে ঝগড়া হইত তো আমার কথা মনে পড়ত নাইলে না। অ্যাচুয়ালী সব মাইগ্যা গুলান এমনইটা হয়। আমি আবার নিশাচর কিনা রাইতে জাইগা থাকি দিনে ঘুমাই। অনেকবার রিং হবার পর ঘুমজড়ানো গলায় ফোন ধরতেই---- আমি : হ্যালো কে? নীলা : আমি নীলা চিনতে পারিস নাই! আমি : আবার ঝগড়া করছিস? নীলা : হমমম আমি : একে তো এই অবেলায় ঘুম ভাঙ্গায়লি! এখন পারবি অ্যাজাইরা প্যাচাল! নীলা : তুই এমন ক্যান? আমি : আমি এমনই.... নীলা : আজ কি তুই ফ্রি আছিস? আমি : আমি অলটাইম ফ্রি..... নীলা : আজ কি আসতে পারবি? আমি : পারুম তয় আমার কাছে কুন ট্যাকা পয়সা নাই! তোরে মন খ্রাপের ট্রিট দিতে পারুম না।

তুই দিলে আইতে পারি। নীলা : আমি কি তোরে ট্রিট দিতে কইছি! আমি : না তা কস নাই! তয় আমি যা সত্য তাই কইলাম। তুই আমারে আসা-যাওযার ভাড়া দিবি তাইলে আসুম! নীলা : আচ্ছা আয়, আমি ধানমন্ডিতে তোর জন্য ওয়েট করব। আমি : ওকে আমি আইতাছি ঘন্টাখানেকের মাঝে। বেশ কয়ঘন্টা চিটিং সার্ভিস নামক বাসে উইঠা মানুষ জনের ধাক্কা খাইয়া যানজটের লগে যুদ্ধ কইরা বিজয়ীর বেশে আমার গন্তব্যে পৌঁছোলাম।

চোখ ধাঁধানো সুন্দরী বলা যাবে না নীলাকে কিন্তু শাড়িতে বাঙ্গালী মেয়েদের চিরকালই অন্য জগতের মনে হয়। আবার কলেজ লাইফের দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেল ওকে দেখে। আমারে দেইখ্যা কয় এই অবস্থা ক্যান তোর। আমি কইলাম কি অবস্থা খুব ভাল আছি। খাই-দাই ঘুইরা বেড়াই।

কয় না তোর দিকে তো তাকান যায় না। গাজ্জাখোরের মতন লাগতাছে দেখতে! তোরে পরীর লাহান লাগতাছে! কি আমার মতন গাজ্জাগোরের লগে হাঁটতে লজ্জা করতাছে তোর? লজ্জা করলে দুরে সইরা হাঁট কাছে আসিস না। বেশ খানিক খন চুপ থাকার পর কয় তুই আর মানুষ হইবি না। জানিস না একটা মেয়ের সাথে ক্যামনে কথা কইতে হয়। আমার জাইনা কাম নাই।

তুই ভাল কইরা জানিস আমি মাইয়্যা মানুস দুই চক্ষে দেখতে পারি না। যদিও তোরে লগে ক্যান হাঁটতাছি কথা কইতাছি - এর কোন কারন আমার জানা নাই। আর এইটা নিয়া কুন প্রশ্ন করবি না তুই। দেখ সুন্দর বিকেলটা শেষ হয়ে আসছে। তোর হাতটা একটু ধরি।

মুখ ঝামটা দিয়া কয়! তুই জানিস না আমার বয়ফেন্ড আছে। যা তাইলে দুরে গিয়া মর তুই। এমন মিষ্টি বিকেলে অনুভুতি গুলো একটু যেন ক্যামন হয়ে যায়। দেখি নীলার হাত আমার হাতে! আমার হাত ধরে হাঁটছে। হাতটা নিয়ে খেলতে খেলতে বললাম চল দুরে তোথাও হারিয়ে যাই।

যেখানে কেউ থাকবে না - শুধু তুই আমি থাকব। ছোট্ট একটা ঘর বানাব ২ জন মিলে। তুই কোমোরে শাড়ি পেচিয়ে আমার জন্য রান্না করবি। মাটির চুলোয় আগুন ধরাতে গিয়ে তোর চোখ দিয়ে পানি গরাবে ---- আমি তোর চোখের জল মুছে দিব। সামনে কাঊকে দেখে কল্পনার এলোমলো অবস্থা থেকে বাস্তবে আসলাম।

দেখি নীলা এক ঝটকায় অনেকখানি দুরে সরে গেছে। বলল এখন আমি বাড়ি যাব। শুধু যাবার সময় বলে গেল তুই “বড্ড খ্রাপ”।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।