আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তারুণ্যের এফএম রেডিও



তারুণ্যের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে চলে মিউজিক। মিউজিক যেখানে এফএম রেডিও স্টেশনগুলোর প্রাণ, সেখানে তারুণ্যের প্রাণ এফএম মিউজিক কালচার। এফএম রেডিও স্টেশনগুলো টিনএজারদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। জনপ্রিয় হবে না কেন? এই বয়সটা যে মিউজিকের। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এফএম রেডিও স্টেশন।

এবিসি, রেডিও আমার, রেডিও টুডে ও রেডিও ফুর্তি এ সময়কার তরুণদের কাছে পরিচিত নাম। আরজে মানে রেডিও জকি। কান টানলে যেমন মাথা আসে, তেমনি এফএম রেডিওর কথা বললে প্রথমেই আসে রেডিও জকিদের করা। রেডিও জকিরা সদাব্যস্ত শ্রোতাদের কথার জালে আটকে রাখতে। রেডিও জকিরাও বয়সে মননে চিন্তায় তরুণ।

টিনএজারদের সঙ্গে রেডিও জকিদের একটা সখ্য গড়ে উঠছে। টিনএজাররা থাকতে চায় সদাহাসিখুশি। এফএম ব্যান্ডের রেডিও স্টেশনের প্রোগ্রামগুলো মূলত টু ও কমিউনিকেশনস। আগের রেডিও অনুষ্ঠানগুলো ছিল ওয়ানওয়ে কমিউনিকেশন্স প্রোগ্রাম। অর্থাৎ উপস্থাপক যা বলত বা শোনাত শ্রোতারা একান্ত বাধ্য হয়ে তাই শুনতে হতো।

কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি এই একগুঁয়েমিতা দূর করেছে। জনপ্রিয় করে দিয়েছে রেডিও স্টেশনগুলো। এখন বাজারে তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয়ে ব্যবহার্য জিনিস হচ্ছে মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনে রয়েছে অনেক ফিচার বা সুবিধা। কথা বলার পাশাপাশি এসএমএস, এফএম রেডিও শোনা অন্যতম সুবিধা।

বর্তমান এফএম ব্যান্ডের রেডিও স্টেশনের প্রোগ্রামগুলো এসএমএসকেন্দ্রিক। রেডিও জকিদের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রিয় গান শুনতে অথবা কাউকে ডেডিকেট করছে টিনএজাররা। এতে অনেক রেডিও জকির নাম শ্রোতাদের মুখে মুখে। অনেক রেডিও জকি এখন দারুণ জনপ্রিয়। এখন আড্ডায়, ভ্রমণে, অবসরে তরুণদের সঙ্গী হেডফোনের রেডিও অথবা মোবাইল।

এফএম রেডিও স্টেশনের বেশিরভাগ প্রোগ্রামই মিউজিকনির্ভর। মিউজিকের বাইরেও কৌতুক, সংবাদ বিশ্লেষণ ও ভালোবাসার টপিকস নিয়ে প্রোগ্রাম বানাচ্ছে রেডিও কর্তৃপক্ষ। বর্তমান সময়ে টিনএজারদের কাছে বহুল জনপ্রিয় লাইভ অনুষ্ঠানে ভালোবাসার কথা বলে সফল বা ব্যর্থ জুটিরা। সেইসঙ্গে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করে উপস্থাপন করেন একজন রেডিও জকি, যাকে এ অনুষ্ঠানে লাভ গুরুকুল নামে ডাকা হয়। আপনি একজন টিনএজারকে জিজ্ঞাসা করলেই বিভিন্ন রেডিও স্টেশনের জনপ্রিয় প্রোগ্রামগুলোর সিডিউল জেনে নিতে পারেন নিমিষেই।

টিনএজাররাও বর্তমানে রেডিও জকি হতে আগ্রহী। বর্তমানে রেডিও জকি হতে তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। রেডিও জকি হতে কী লাগে? প্রশ্নটির উত্তর, শুদ্ধ বাচনভঙ্গি আর উপস্থিত বুদ্ধি। আপনার যদি এ দুটি গুণ থাকে তাহলে আপনি আজই একটি সিভি তৈরি করে পাঠিয়ে দিতে পারেন রেডিও স্টেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজারের কাছে। এফএমের কল্যাণে তরুণরা থাকছে আপডেটেড।

সেই সঙ্গে তাদের মধ্যে দেশি ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তৈরি হচ্ছে জনমত। এফএম রেডিওর কল্যাণে সবচেয়ে বড় উপকার হয়েছে কার জানেন? দেশীয় সঙ্গীতে। কিছুদিন আগেও হিন্দি গানে মিউজিক বাজার ছিল সয়লাব। তরুণরাও বুঁদ হয়ে থাকত ওইসব সঙ্গীতে। বর্তমানে অবস্থা পাল্টেছে।

তরুণরা এখন নজরুল, রবীন্দ্র, জারি, সারি, মুর্শিদী শুনছে। এসব গানের ভক্তকুল তৈরি হচ্ছে। এটা পুরো দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জন্য ইতিবাচক। বাজারে এখন বিভিন্ন দাম ও আকারের এফএম রেডিও পাওয়া যাচ্ছে। এফএম রেডিওগুলোর দাম হেডফোনসহ গড়পড়তা ১৫০-৮০০ টাকা।

রেডিও ছাড়াও এফএম স্টেশনগুলোকে টিউন করতে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন দরের সেলফোন। এফএম সংস্কৃতি যদি টিনেজারদের ম্যানিয়া না হয় তাহলে ভালোই তো। তারুণ্য আর এফএম সংস্কৃতি হাত ধরাধরি করে হাটবে। একজন আরেকজনের বন্ধু হবে। বন্ধুত্বতা তো মুক্ত আকাশ সংস্কৃতি।

দেশীয় ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির আবহে বেড়ে উঠুক আগামী দিনের টিনেজাররা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।