আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেকারের কষ্ট

এতোই সাধারণ যে চোখে পড়ে না। চারদিকে অস্থির সময়। দেশে নানা ঘটনা, দূর্ঘটনা নিয়ে সবাই ব্যস্ত। আবার সামনে "মহাসেন" নামক আতংক। আমি আমার "কুয়ার" ভিতর নিরাপদে বসবাস করছি।

ক্লাস থাকলে ক্লাসে যাচ্ছি, না থাকলে বাসায় শুয়ে-বসে পত্রিকা পড়ে বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলছি। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত হচ্ছি, মাঝে মাঝে ২/১ টা সুখবর দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছি। এর মাঝেই চাকরি-বাকরির চেষ্টা করছি। পরিচিতদের কাছে নিজের সিভিটা একরকম জোর করেই গছিয়ে দিচ্ছি। তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে আমাকে সান্তনা দিচ্ছেন।

মোট কথা, আমার কুয়ার ভিতর লাইফটা অনেক ঝামেলা মুক্ত। তবে মাঝেই মাঝেই এই কুয়ার পৃথিবীতে কিছু কিছু ঝামেলা তৈরি হচ্ছে। আমার পরিচিত মানুষগুলোই এইসব ঝামেলার কারিগর। ২টা কাহিনী দিয়ে লেখা শেষ করব। দেখুন তো, এই ২টা কাহিনীর মধ্যে কোনো যোগসূত্র পান না কি? ১ম ঘটনাঃ প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট যখন বের হয় তখন আমি খুব বিপদে পড়ে যাই।

আমি নিজে তেমন ভালো ছাত্র না, আমার এস এস সির রেজাল্ট_ও যেমন তেমন। এই নিয়ে আমার আব্বা সুযোগ পেলেই মনে করিয়ে দেন যে আমি কেমন "বেকুব" টাইপের ছাত্র। ওনার এই মনে করিয়ে দেবার মাত্রা এস এস সির রেজাল্টের দিন একটু বেশীই হয়ে যায়। প্রতি বছরই ওনার কোনও না কোন পরিচিতের ছেলে/মেয়ে এস এস সি পরীক্ষা দেয় এবং তারা জিপিএ ৫ পায়!! তাই রেজাল্টের দিন আমাকে সামনে পেলেই উনি সেইসব ছেলেমেয়েদের অতি উচ্চ প্রশংসা করতে থাকেন, আর আমি অতীতে(!) কি করেছি তা মনে করিয়ে দেন। প্রতিবারের ন্যায় এবারো আমি এস এস সি রেজাল্টের দিন আব্বার কাছে কিছু কথা শুনলাম।

তবে এইবার এর সাথে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। যেমনঃ আব্বাঃ শুনছিস, এইবার তোর "ক" কাকার ছেলে তো জিপিএ ৫ পেয়েছে। আমিঃ ও, সে তো ভালো ছাত্র, পাওয়ারই কথা। আব্বাঃ তার আব্বা-আম্মা খুব খুশি। আমিঃ ও।

ভাবলাম,যাক, আর কিছু বলবে না। কিন্তু না, ডোজ তখনো শেষ হয় নাই!! আব্বাঃ তোর বন্ধু "ং" কি করে এখন? আমি (ঢোক গিলে)ঃ ঢাকায় চাকরি করে। আব্বাঃ আচ্ছা, আচ্ছা, চাকরি করে। সে না তোর সাথে পড়তো? (আমার আব্বা খুব ভালো করেই জানে সে আমার সাথে পড়তো এবং সে ঢাকার প্রাইভেট ইউনি থেকে বিএসসি পাশ করে জবে ঢুকে গেছে। ) আব্বাঃ বেতন কত পায়? আমিঃ জানি না, হবে ২০-২৫ হাজার।

আব্বাঃ আরে নাহ, আরও বেশী পায়, তোরে হয়তো বলে নাই। আমি তখন খুব ব্যস্ততার ভান করে আম্মাকে খুঁজতে লাগলাম!! ২য় ঘটনাঃ ছাত্রঃ ভাইয়া, আজকে কিন্তু ৯টা পর্যন্ত পড়াবেন। আগে যাইতে পারবেন না। আমিঃ আরে এত্তক্ষন কেউ পড়াশোনা করে না কি? তুমি খেলা দেখবা না? ছাত্রঃ না, পরশু আমার কোচিং এর পরীক্ষা। আমিঃ আরে ধ্যাত!! কোচিং এর পরীক্ষা আবার কেউ সিরিয়াসলি দেয় নাকি? তাছাড়া আমার কাজ আছে, আমি এতোক্ষন থাকতে পারব না।

ছাত্রঃ আপনার আবার কাজ কি? ভার্সিটিও বন্ধ, চাকরিও করেন না। আমি তখন খুব বিরক্ত হই এবং ব্যাস্তভাবে মোবাইল বের করে না জানি কোন নাম্বারে কল দেয়ার চেষ্টা করি!! বেকার মানুষের এতো দিকে কান দিলে চলে না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।