আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কথন - ২

.....কথামালা (২০০৮-২০১০)। ।

ভাল সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ না পেয়ে অনেকে ভর্তি হয় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তো আরেক চিড়িায়াখানা, তাই এগুলো থেকে বাঁচতেও অনেক সময় ভাল ছাত্ররাও এখানে ভর্তি হয়। কিন্তু বাবা-মায়ের সাথে থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করার সৌভাগ্য অনেকেরই হয় না।

যারা বাবা মাকে ছেড়ে আসে তাদের কতটুকু সুযোগ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলো দেয়? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আবাসন নিয়ে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনে । এখানে বলা হয়েছেঃ "প্রায় অর্ধশত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। নেই আবাসিক হল ও যাতায়াতের জন্য নিজস্ব যানবাহন। নিজস্ব আবাসিক হল না থাকায় আবাসন ও যাতায়াত খাতে শিক্ষার্থীদের যেমন অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে, পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতেও থাকতে হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নিজস্ব আবসিক হল না থাকার কারণে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর চেয়ে প্রায় দশ গুণ বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্যানুযায়ী দেশের ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ২ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এদের অর্ধেকই মফস্বল থেকে এসেছে। স্বল্পসংখ্যক আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে বসবাস করলেও প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী উচ্চভাড়ায় মেস বা প্রাইভেট ছাত্রাবাসে থাকছে। " আরও বলা হয়েছেঃ "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এম আলিমুল্লাহ শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যাকে কোনো সমস্যাই মনে করেন না। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের মতো একটি বড় শহরে শিক্ষার্থীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে হলে একটি কমিউনিটির মধ্যে থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, তারা টাকা খরচ করে বাসা ভাড়া করে থাকছেন। শিক্ষার্থীদের এভাবেই স্বাবলম্বী হতে হবে। " সাথে আরও কিছু ভাবনা যোগ করলামঃ - ক্যাম্পাস ও ছাত্রবাসঃ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখানো পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসেপ্ট নিয়ে গড়ে ওঠেনি সেটা আবারও প্রমানিত হয় এখান থেকেই যে, বলতে গেলে কোন বিশ্ববিদ্যালয়েরই সকল ছা্ত্র-ছাত্রীদের জন্য মানসম্মত হোস্টেল নেই (বেসরকারি কিছু মেডিকেল কলেজের এই সুবিধা অবশ্য আছে। )। অধিকাংশ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়েরই সত্যিকারের ক্যাম্পাস না থাকাটা খুবই দুঃখজনক।

ব্যবসা করা ভাল কিন্তু বাড়াবাড়ি করা ঠিক না। অন্তত ছাত্রছাত্রীদের সাময়িক থাকার যায়গাটা দিন! - কিন্তু বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটা সমস্যা টিউশন ফিতে। অত্যাধিক টিউশন ফি অনেক বাবা মায়ের জন্যই চাপের কারন। বিদেশে টিউশন ফি লোনের ব্যবস্থা থাকলেও (যা পরে চাকুরী করে পরিশোধ করা হয়) বাংলাদেশে এমন কোন সুযোগ নেই। - সবচেয়ে মজার ব্যপার হলো বাংলাদেশের বেসরকরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবার স্কলারশীপও দেয়! টিউশন ফি বা বেতন মওকুফকে যে স্কলারশীপ বলে সেটা বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছ থেকেই জানা গেল।

- কোচিং/স্কুল/'কলেজ কিংবা গারমেন্টস/'কম্পিউটারের ব্যবসা থেকে হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক বনে যাওয়া কর্তৃপক্ষ অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়েরর তাৎপর্য্য বুঝতে পারেন না। ব্যবসায়ী মালিকের বেতনভুক্ত ভিসি সাহেবও অনেক সময় প্রতিবাদের ভাষা না পেয়ে চুপচাপ থাকাই শ্রেয় মনে করেন। আর ইউজিসির বড়বাবুরা উপর দিয়ে একটু হাম্বিতাম্বি করে আবার নতুন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও এক নতুন বিভাগের ফিতা কাঁটতে যান। আরও ছাত্র ভর্তি হয়। আরও টাকা আরও টাকা.. সব মিলিয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব কাছ থেকে দেখে মালিক পক্ষকে কেন যে বলতে ইচ্ছে করে- এটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয় যে সব সময় লাভই হবে।

একটু লস করে হলেও ভাল কিছু ছাত্রকে (ভর্তি পরীক্ষার মধ্যমে) বিনা পয়সায় পড়ার সুযোগ দেন। তাদের থাকার জায়গা দিন। এরা ভাল করলে দেশও ভাল করবে। অন্যান্য লেখাঃ - বাংলাদেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.