আমি কাক নই, আমি মানুষ...
উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্টানে বাংলা ভাষা এখন উপেক্ষিত। মাতৃভাষা নিয়ে আমাদের অনেক রকম আনুষ্টিানিকতা থাকলেও এ ভাষার চর্চা এবং মর্যাদা রক্ষায় আমাদের অবহেলা,অনাগ্রহ আর দায়িত্বহীনতা এখন চরম পর্যায়ে পৌছাছে। এ ক্ষেত্রে জাতি হিসাবে আমাদের দৈন্যতা যেনো ফুটে উঠেছে। এ দৈন্যতার চিত্র প্রকাশ পেয়েছে স¤প্রতি নয়াদিগন্তের এক রিপোর্টে। এতে বলা হয়েছে উচ্চশিক্ষা প্রসারে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার চর্চা নেই।
বাংলা সাহিত্য সেখানে উপেক্ষিত। অনার্স, মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি কোর্স কোথাও বাংলা সাহিত্যের জায়গা নেই। উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে কেবল বাজারমুখী বিষয়গুলোর ওপর। ব্যবসায়িক মনোভাব নিয়ে গড়ে ওঠা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলার প্রতি কোনো নজর দিচ্ছে না।
দেশের ৫২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দু’টি ছাড়া অন্য কোথাও বাংলা সাহিত্যে অনার্স, মাস্টার্স বা পিএইচডি কোর্স নেই।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে বাংলাভাষা ও সাহিত্য পড়ানো হলেও সেখানেও আছে নানা রকম সমস্যা। এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংখ্যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি। কিন্তু এ বিপুলসংখ্যক ছাত্র মাতৃভাষা সম্পর্কে থাকছে অঞ্জ। অথচ অনেক দেশে বিদেশী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য সে দেশের ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামুলক। আর আমাদের নিজ দেশে মাতৃভাষা পড়ানো হচ্ছেনা।
মাতৃভাষা, জাতীয় সংস্কৃতি বা আত্মপরিচয়কে পরিহার করা আত্মহত্যার শামিল। বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তা জাতীয় আত্মহত্যার পথে আমাদের যাত্রা যেনো নিশ্চিত করছে।
তবে আশার দিক হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃপক্ষ বলছে, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যদি বাংলায় অনার্স চালু করতে চায়, সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য আইন কিছুটা শিথিল করা হবে। একটি বিষয়ে অনার্স চালু করতে যেসব শর্ত মানতে হয়, বাংলার ক্ষেত্রে তাতে কিছুটা ছাড় দেয়া হবে। কোনো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি যদি বাংলায় অনার্স খোলার আগ্রহ প্রকাশ করে তাদের সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে মঞ্জুরী কমিশন।
আমরা মনে করি পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয় শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় উচ্চ শিক্ষার সব রকম সুযোগ থাকা উচিত। কোর অবস্থাতেই আমরা মাতৃভাষাকে উপেক্ষা করতে পারিনা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের উচিত বাংলা ভাষায় উচ্চতর পড়ালেখায় কেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগ্রহী হচ্ছেনা তা খতিয়ে দেখা। শুধু বিষয় চালু করলে হবেনা ছাত্রদেরও এ ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে হবে। শিক্ষক স্বল্পতার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
আমরা আশা করি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলায় উচ্চতর পড়াশোনার পথ সুগম করে জাতিকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নেবে। আমরা যদি মার্তৃভাষার ভিত্তি মজবুত করতে না পারি তাহলে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ বাধাগ্রস্থ হবে। বাংলা ভাষা চর্চা একটি আনুষ্টাকিতায় পর্যবাসিত হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।