আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিভীষিকা ...

কৃষ্ণচূড়া কখনো বিবর্ণ হয় না। ঝরে পড়ার সময় তার লাল রঙটা নিয়েই সে ঝরে পড়ে যায়। রক্তিম কৃষ্ণচূড়াও তার জন্য নির্ধারিত সময়টুকু পেরিয়ে আসার পর তার রক্তিম আভা নিয়েই ঝরে পড়ে গেছে। আর কোনও রক্তিম কৃষ্ণচূড়াকে পাওয়া যাবে না এ ঠিকানায়।

“The approach to a building may be perpendicular to the primary facade of the building or .....” ইকবাল স্যার কে ক্লাসরুমে ঢুকতে দেখে আরেফিন স্যার থেমে গেলেন।

ইকবাল স্যার আরেফিন স্যারকে প্রায় ফিসফিস করে কিছু বললেন। কি বললেন শুনতে পেলাম না আমরা , শুধু দেখলাম আরেফিন স্যারের মুখটা হঠাৎ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ইকবাল স্যার চলে যেতেই আরেফিন স্যার বললেন ,”আজকে তোমাদের সব ক্লাস ক্যান্সেল করে দেওয়া হয়েছে। তোমরা বাসায় চলে যাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। সময় নষ্ট না করে যত দ্রুত পার এই এলাকা ছেড়ে চলে যাও।

“ কথাগুলো বলেই স্যার বেরিয়ে গেলেন আমাদের কোনো রকম প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে। আমাদের সবার মনে একটাই প্রশ্ন – কি হলো বা হতে যাচ্ছে ? হঠাৎ অনেক গুলো জীপের আওয়াজ শুনতে পেলাম। প্রায় একই সাথে প্রচন্ড শব্দে কোথা থেকে যেন উড়ে এলো একটা হেলিকপ্টার। কৌতুহল সরে গিয়ে হঠাৎ মনে জড়ো হলো প্রচন্ড ভয়। অবচেতন মনে কার কণ্ঠ যেন শুনতে পেলাম, “আর সময় নেই।

পালাতে হবে এক্ষুনি। পালাও। “ ছুটছি ... ছুটছি ... ছুটছি ... বিচ্ছিন্নভাবে ছুটে চলেছি আমরা সবাই; যে যেদিকে পারছি । একসময় দল ছাড়া হয়ে পড়লাম। খেয়াল করলাম ছুটতে ছুটতে ফায়ার এক্সিটের সামনে চলে এসেছি।

হঠাৎ শুনি ভারী বুটের শব্দ। করিডোর ধরে কারা যেন এগিয়ে আসছে। ফায়ার এক্সিটের দরজা খুলে লুকিয়ে পড়লাম অন্ধকারে। বুটের শব্দ এগিয়ে আসছে। দমবন্ধ করে অপেক্ষা করছি।

বুটের শব্দ এক্সিটের দরজার কাছে এসে হঠাৎ থেমে গেল। ভারী গলায় কেউ একজন অপরিচিত এক ভাষায় কিছু বললো। বলার ভঙ্গিতে ছিল আদেশের সুর। হঠাৎ বুটের শব্দ ক্রমাগত দূরে সরে যেতে লাগলো। ফিরে যাচ্ছে ।

দরজার ফুটো দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম। জলপাই রঙের, সামরিক বাহিনীর মত এক ধরনের ইউনিফর্ম। ডান বাহুর কাছে ধাতব তারা। কিন্তু কারা এরা? অন্ধকারে কে যেন হঠাৎ আমার মুখটা চেপে ধরল। চিৎকার দিতে গিয়েও পারলাম না।

ফিস ফিস করে একটা কন্ঠ বলে উঠলো , “চিৎকার করিস না। আমি শামা। ” বুঝতে কেন যেন অনেক সময় লেগে গেল । আবছা অন্ধকারে ভালোমত দেখতে পারছি না। আমরা দুজন নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ করে রেখেছি, যেন নিঃশ্বাসের আওয়াজে বুঝে ফেলবে আমাদের অবস্থান।

আবারো প্রশ্ন জাগলো মনে – কি হচ্ছে , কেন হচ্ছে ? আচমকা চুলে হ্যাঁচকা টান অনুভব করলাম। কার শক্ত মুঠোতে চুলগুলো যেন আটকা পড়ে গেল। কণ্ঠ চিড়ে বেরিয়ে এলো আর্তনাদ। সাথে শুনতে পেলাম কর্কশ কন্ঠে অপরিচিত সেই ভাষা । অজানা-অচেনা এক ধ্বনি বাজছে কানে ।

শুনতে শুনতে তলিয়ে গেলাম গাঢ় অন্ধকারে ...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.