...যে করে কালার চরনের আশা/ জানোনা'রে মন তাঁর কি দুর্দশা...
[গত ১৩ মার্চ ২০১০ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার গোকরা পাড়া গ্রামের শাল মোহাম্মদের পুত্র ভাটাশ্রমিক মোজাম্মেল হকের কর্তিত মুণ্ডের রক্তে লাল হয়ে উঠা কতিপয় পুঁজিপতি এবং ধর্মান্ধের প্রতি ঘৃনা থেকে দাড়ি ও প্যারাবিহীন এই গল্পটি উৎসারিত]
......একটা মস্তকবিহীন দেহ নেংটিহারা গেরামের ইটভাটার ধংসস্তুপের আনাচে-কানাচে ঘোরাঘুরি করতাছে, যদিও তার এই ঘোরাঘুরি ব্যাতিত অন্য কাজ করার মতো সামর্থ্য নাই; যেহেতু তার মস্তক নাই, তাইলে এইটাও বুঝা যাইতাছে যে তার এই ঘোরাঘুরি চরম বিক্ষিপ্ত; আবার এইদিকে কারা যেনো, হইতে পারে দমকল বাহিনী, অথবা, পুলিশ বাহিনী এই মস্তকহারা দেহের বিক্ষিপ্ত ঘোরাঘুরির দিকে নজর দিবার মত প্রয়োজন মনে করেনা, অবশ্য নজর দেওনের প্রশ্নও উঠেনা, যেহেতু এরা মর্ত্যের লোক তাই এইসব লৌকিকতার বাইরের জিনিসপাতি তাগো চোখ এড়ায়া যাইবো এইটাই স্বাভাবিক; তাই হয়তো এই দমকল বাহিনী কিংবা পুলিশ বাহিনী ক্রমাগত ভাটার চুলায় জল ঢাইলা যায়, তারপরো হয়তো আগুন নিভে না, কিংবা নিভু নিভু হইতে হইতে হয়তো কয়েকদিন পর নিভ্যা যায়, এতে কইরা পুলিশ বাহিনীই হওনের কথা - যারা ব্যাপক খোঁজ লাগাইবো; এবং একটা মস্তক খুঁজতে গিয়া তাঁরা হয়তো ধইরা’ই মস্তক পায়না, হয়তো প্রথমে তাঁরা পায় একটা ছুরি এবং তাঁরা সন্দেহ করে এইটা দিয়া’ই মস্তক এবং ধড় আলাদা করা হইছে, যদিও তাঁরা নিশ্চিন্ত হইবার পারে না বইলা মনে হয়, আসলে এঁরা নিশ্চিত হয়া’ই যায় কিন্তু প্রকাশ করবার পারে না - কেনোনা আইন তাগোরে নিশ্চিত হইতে দেয় না, তাঁরা বড়জোর ‘ধারনা’ করে, অথবা, হয়তো এই ‘ধারনা’ করাটা’ই তাগো চাকরি; ফলে ছুরির বাঁটে রুমাল প্যাঁচায়া ছুরিখান এরা গাড়িতে নিয়া রাখে, অথবা, একটা কাঠের তক্তা মতোন কিছুতে সাদা কাপড় বিছায়া ছুরিখান রাখে; গেরামের লোকজন হয়তো এইসব দেখে, আবার মনে হয় এঁরা হয়তো ছুরিখান দেখে না, তাঁরা দেখে মস্তকটা খুঁইজা পাওয়া গেলো কিনা; হয়তো এর পরপরই কোন পুলিশ ‘ইউরেকা’ বইলা চিল্যায়া উঠে, যদিও ‘ইউরেকা’ বলার কোন মানে নাই, কেনোনা এইটা বিজ্ঞানিগো রিসার্চের কাজ না, তাই হয়তো পুলিশ ‘ইউরেকা’ বলে না, তারা হয়তো বইলা উঠে ‘পাইছি’ এবং ব্যাপক লোকসমাগমের ভিতর থিকা কোন শব্দ বাইর হয় না, একটু আগেও যেখানে ফিসফাস কিংবা নিম্নস্বরে কথা চালাচালি হইতেছিলো সেখানে সব্বাই হয়তো হঠাৎ কইরা অলৌকিক কিছু একটার মখোমুখি হয়া পড়ে, অথবা, হয়তো মস্তকের কালো খুলিটা মাইনষের কিনা এই চিন্তায় বিভোর হয়, ফলে গুমোট নিরবতা ছাপায়া পুলিশ ‘ইউরেকা’ কিংবা ‘পাইছি’ বইলা চিল্যায়া উঠলে মানুষ সেইটা শুনতে পায়, হয়তো এরপর নিরবতা ভাইঙ্গা যায়, আবার এও হইতে পারে যে নিরবতা গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়া উঠে, একদৃষ্টে চায়্যা থাইকা লোকজন হয়তো অচল হয়া পড়ে, তাঁরা পাত্থরের লাহান অনড় হয়া পড়ে কিনা নাকি তাগো দৃষ্টি পুলিশের হাতের লগে লগে ছুইটা যায় তা ঠাহর হয় না, এবং তাঁরা বেলা কতো হইলো ভুইলা যায়, তাঁরা হয়তো ভাবে ঘর থিকা এরা খায়া’ই বাইর হইছে, ফলে খাওন নিয়া তাগো চিন্তা লাগে না, কুলবধুরা হয়তো চুলায় ভাত চড়াইতে হবে-তরকারি চড়াইতে হবে-এইসব ভুইলা যায়, অথবা, তাঁরা এইসব আগে থিকা’ই জানতো, ফলে সকলের ভাবলেশহীনতা একপর্যায়ে হয়তো সয়্যা আসে; আর পুলিশ একনাগাড়ে তিনদিন দমকল বাহিনীসহ যে উদ্ধারাভিযান চালায় তা হয়তো এখন শেষ হয়া যাইবো, অথবা, হয়তো শেষ হইবোনা, কেনোনা বাদী পরে লোকেরা শ্রমিক, বিবাদীরা পুঁজিওয়ালা, তাই হয়তো মাইনষের খুলি কুত্তার খুলি হয়া যাইতে পারে, আদালতও হয়তো সত্যি সত্যি’ই রায় দিয়া দিবো যে এইটা মাইনষের মাথা না-কুত্তার মাথা, আর ছুরিমতোন যা পাওয়া গেছে এইটা আসলে ছুরি না-এইটা চুলায় ইট খোঁচানোর লোহার দণ্ড; এরপর হয়তো মামলা ডিসমিস হয়া যাইবো, গেরামের লোকজনও হয়তো এতোদিনে সব ভুইলা গেছে, এবং ভুইলা যাওনের’ই কথা, কেনোনা তাগো বাল-বাচ্চা আছে, দুনিয়াবি কাম-কাইজ আছে, রাইতে শুইলেই হয়তো এরা ঘুমায়া পড়ে, তাই হয়তো এইসব মস্তক-কথা তাগো মনে থাকেনা; এরপর কতোদিন গ্যালোগা, হয়তো বিবাদীগো ঝামেলা মিট্যা গ্যাছে, তাঁরা হয়তো ইটের ভাটায় আবার আগুন দিবো, ইটের রঙ গনগইনা লাল যাতে হয় সেইদিকে খেয়াল রাখা লাগবো, গনক-কবিরাজের কথা কি ফালায়্যা দেওন যায়, আগেরবার গনকের কথায় মোজাম্মেলের মাথা কাইটা চুলায় দেওনের পর ইটা লাল হইতে লাগছিলো, অথচ ভ্যাজাল লাইগা গ্যালো, হয়তো গনকের কথামতো কাম হয় নাই, কামে ঘাপলা ছিলো বইলা হয়তো গনকের অভিশাপে এমন হইছে, এইবার আর এইরকম হইতে দেওন যাইবো না; এরপর হয়তো বিবাদীপক্ষ আবার গনকের কাছে যায়, তারা হয়তো একদিন শলাপরামর্শ করে, তারা হয়তো প্রতিদিন’ই শলাপরামর্শ করে এবং গনক এইবার রায় দেয় যে এইবার বেটিগো মাথা লাগবো; হয়তো এই কথা শুইনা বিবাদীরা বিমর্ষ হয়, তাঁরা হয়তো ভাবে আবার কোন ঝামেলা বাইধা যায় কিনা, গনক তাগো এই সমস্যা ধরতে পেরে হয়তো বলে ‘মালিক আপনাগো সহায় হোক, আমিতো আছি’ই...’, এবং বিবাদীরা আশ্বস্ত হয়া ইটভাটায় ফিরা আসে, অথবা, হইতে পারে তাঁরা ইটভাটায় আসে না, তাঁরা পুঁজিওয়ালার বাড়িতে পুনরায় বৈঠক করে, বৈঠকে কোন নারীর মাথা কাটা যাইবো এই নিয়া তারা হয়তো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইতে পারে না, পুঁজিওয়ালা হয়তো তাঁর সহযোগী বিবাদী শ্রমিকগণকে (হতে পারে এদের নাম সর্দার ইউনুস, জলিল, কফিল ইত্যাদি যারা মোজাম্মেলের মাথা কাটতে সহায়তা করেছিলো) তাগো কোন আত্মিয়কে বিসর্জন দিতে বলে, হয়তো ব্যাপক ট্যাকার লোভে কোন কোন শ্রমিকের লালা মুখ থিকা গড়ায়া লুঙ্গি ভিজ্যা যায়, অথবা, হয়তো এইসবের কিছুই ঘটে না, শ্রমিকগণ হয়তো প্তি হয়া উঠে, তাঁরা হয়তো চেইতা বইলা উঠে ‘পারলে আপনের বৌয়ের মাথা কাইটা চুলায় দ্যান’, মুখে প্রকাশ না করলেও এইকথা শুইনা হয়ত পুঁজিওয়ালা কষ্ট পায়, হয়তো এই কথা আড়াল থিকা তাঁর বৌ শুইনা ফেলে, আবার, হয়তো কাজের বেটি’ই শুইনা মেমসাহেবরে এই কথা বইলা দেয়, তারপর হয়তো বৌ ভিতর থিকা ছুইটা আসে, ‘এই কথা নাকি তুমি কইছো’ বইলা কাইন্দা উঠে, অথবা, হইতে পারে কাজের বেটির চুলের মুঠি ধইরা পুঁজিপতির সামনে নিয়্যা আইসা বৌ হয়তো বলে ‘হ্যার মাথা কাইটা চুলায় দ্যাও’, পুঁজিপতির চোখ হয়তো এতে চকচক কইরা উঠে, তাঁর সহযোগী শ্রমিকগণ হয়তো বইলা উঠে ‘হ হ এইটা’ই হোক’, কিন্তু কাজের বেটি হয়তো একদিন কান্দে, এরপর দুইদিন কান্দে, এরপর তিনদিন ধইরা হাউমাউ কান্দে, এতে হয়ত বৌয়ের মন গইলা যায়, অথবা, পুঁজিওয়ালা হয়তো তার গোপন সুখের কথা ফাঁস হয়া যাইতে পারে বইলা কাজের বেটির হুমকিতে নরম হয়া যায়,কাজের বেটি এই যাত্রা বাঁইচা যায়, নাকি বাঁচে না, নাকি আসলে সে মৃত তা বুইঝা উঠা যায় না, হয়তো সে মইরাই বাঁইচা থাকে কোনোমতে; এইভাবে হয়তো মাসে আটাশ/ঊনত্রিশ দিন মিটিং করে পুঁজিওয়ালা হয়তো বিচলিত হয়া পড়ে এবং চেইতা তার সহযোগি শ্রমিকগণের উপর বলে ‘একটা মাথা জোগাড় করতে পারোনা...বালের ইট বানাইবা’, অথবা সে হয়তো খুব দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়া পড়ে, এতে হয়তো তার ব্লাড প্রেশার বাড়ে, সে হয়তো হাসপাতালে ভর্তি হয়, হয়তো সে সিংগাপুর গিয়া চিকিৎসা নেয়; সহযোগি শ্রমিকগণ এতে দিশাহীন হয়া হয়তো ব্যাপক খোঁজাখুঁজি শুরু করে, এরপর একদিন সর্দার ইউনুস পুঁজিওয়ালারে ফোন দেয়, পুঁজিওয়ালা হয়তো তখোন ঘুমায়, হয়তো ফোনের রিং শুইনা তড়াক কইরা লাফায় উঠে, ফোন উঠায়া সে বলে ‘হ্যালো......’; সর্দার ইউনুসের কথায় পুঁজিওয়ালা একদম সুস্থ হয়া উঠে, হয়তো সে বাড়ি ফিরা আসতে চায়, আবার কি মনে কইরা সে বাড়ি ফিরা আসে না, সে সর্দার ইউনুসকে ফোন দেয়, বলে ‘হ্যালো......’; সর্দার ইউনুস এরপর তাঁর লগের লোকজন নিয়্যা কামে যায়, তখন সর্দার ইউনুস নিভ্যা থাকা ভাটার চুলায় আলুথালু গোছের কোন বেটি’কে দেখতে পায়, হয়তো সে পাগল, অথবা, হতে পারে সে ভয়ানক শোকে বিহ্বল, এতে কিনা কে জানে- সর্দার ইউনুসগো লালা গড়ায়া পুনরায় লুঙ্গি ভিজ্যা যায়, বেটিরে তাঁরা ধইরা নিয়্যা পার্শ্ববর্তী ধানেক্ষেত লয়া যায়, ভিজা লুঙ্গিতে চটচটে আঠালো লালা হাতে লাগলে তাগো মনে হয় ‘মাল পইড়া গ্যালো নিকি’, এবং তারা এই কথা সমস্বরে বইলা উঠে এবং এরপর’ই হয়তো সর্দার ইউনুস, নয়তো জলিল, নয়তো কফিল প্রথমে বেটির উপর উপগত হয়, হয়তো তাঁরা পুনরায় সমস্বরে বইলা উঠে ‘অহনো গতরে রস আছে’; এবং এই সংগমলীলা চলাকালীন শোঁ শোঁ শব্দে ধানক্ষেত উথাল-পাথাল ঢেউ খ্যালে, যদিও এই উথাল-পাথাল মুলত এক মস্তকবিহীন পুরুষের কৃতকাজ, যদিও এইসব সর্দার ইউনুসরা দেখতে পায় না, যদিও বেটির গোঙ্গানি, অথবা, আত্মিক টানেই কিনা কে জানে-মস্তকবিহীন পুরুষ ধানতে উথাল-পাথাল কইরা তোলে, যদিও মস্তকবিহীনের কান কিংবা চোখ নাই, কেনোনা কান কিংবা চোখ যেহেতু মাথার লগেই থাকে, তাই হয়তো মস্তকবিহীন এইসবের কিছুই দেখতে কিংবা শুনতে পায় না, হয়তো, ফলে সে নিজের খেয়াল মতো’ই ধানক্ষেত উথাল-পাথাল করতে করতে দূরে বিস্তীর্র্ণ অঞ্চলে হারায়া যায়; সর্দার ইউনুসরা দেখে যে কোন বায়ু হঠাৎ আইসা ধানক্ষেত আউলায়া সামনের দিকে চইলা গ্যাছে, অথবা, তাঁরা হয়তো ছুরি বাইর কইরা ধাঁর পরখ করে, এরপর’ই সর্দার ইউনুস-সংগীরা বেটির জঙ্ঘা-মস্তক চাইপা ধরে, সর্দার ইউনুস হয়তো ছুরি চালায়, অথবা, জলিল’ই হতে পারে ছুরি চালায়া ধড় থিকা মস্তক আলাদা কইরা বাকি দেহটা ধানেেত পুঁইতা রাখে; এই কার্য সমাধা হইলে পুনরায় সর্দার ইউনুস পুঁজিওয়ালারে ফোনে বলে ‘হ্যালো......’; পুঁজিওয়ালা তারপর ভাবে এইবার পুলিশ গ্যাঞ্জাম করলে কমু আমিতো হাসপাতালে কিংবা সিঙ্গাপুর আছিলাম এবং সে হয়তো এরপর নিঃশ্বব্দে হাসে আর হয়তো কাজের বেটির লগে রতিকর্মে লিপ্ত হয়; এবং পাগলী বেটির (ধইরা নেয়া যাইতে পারে পাগলি বেটির নাম জ্যোৎস্না) মস্তক হয়তো ছুরি সমেত গনকের কথানুযায়ী আবার চুলায় নিক্ষেপ করে আগুন দেয় সর্দার ইউনুস অথবা জলিল অথবা কফিল, এতে আগুন গনগন কইরা জ্বইলা উঠে, এবং এতে ইট ব্যাপক লাল হয়, ফলে ব্যাবসাও বেশ ভালো হইতে থাকে, এবং দেশের বাজারের চাহিদা পুরণ কইরা এখোন বিদেশেও রপ্তানি হয় এই ইট; হয়তো এই ইট ছাড়া ভবিষ্যতে কোন কাজ না করলে গৃহস্থের অসম্মান হইবো-এইরকম বিজ্ঞাপনে ছেয়ে যায় ধানক্ষেত, হয়তো পুরা দেশ’ই ছেয়ে যায়, কিন্তু এই খবর রাখে না মোজাম্মেল কিংবা তাঁর বৌ জ্যোৎস্নার মস্তকবিহীন দেহ, মনে হয় য্যানো সেই আদ্দিকাল থিকা’ই এরা ধানক্ষেতময় ছুইটা বেড়ায়, হয়তো কখোনো এরা একে অপরের নাগাল পায়, অথবা, কোনদিন’ই পায় না, তাই পুনরায় ছুটোছুটিতেই এরা হয়তো মগ্ন থাকে, গেরামবাসীও এই কোম্পানীর মনস্তাত্ত্বিক আগ্রাসনে হয়তো এইসব ভুইলা যায়, অথবা, সবাই হয়তো এইরকম বিস্মৃতিপরায়ণ হয় না, তাঁদের মধ্যে হতে পারে সাদ্দামের বাপ নয়তো চান মিয়া এইসবের কিছু কিছু মনে রাখে, হয়তো মোজাম্মেল এবং তাঁর বৌ জ্যোৎস্নার যে দুই সন্তান আছে তাঁরাও কিছু কিছু মনে রাখে, হয়তো অবসরে এরা এইসব নিয়্যা ভাবে, অথবা ভাবাভাবির কোন দরকার’ই হয়তো পড়ে না, কেনোনা মোজাম্মেল ও তাঁর বৌ জ্যোৎস্নার দুই সন্তান এখন আর খাবার নিয়্যা ইটভাটায় যায় না, যাওয়ার কোন প্রয়োজন যদিও নাই তবুও এরা ভাবে ‘আগে বাপের লিগা খাওন নিতাম, বাপ মইরা গ্যালো, হ্যারপর মায়ের লিগা খাওন নিতাম, মায়ে জিনি কই হারায়া গ্যালো’; হয়তো এইসব ভাবনার গভীরে কোন উছলে উঠা শোক আছে তবুও গেরামবাসী যখোন ইটভাটায় কোন পাগলি বেটি’কে দেখেনা, যার ক্রন্দন বিলাপে ভাটার আশপাশ প্রকম্পিত হতো, যার চোখের নিচে অশ্রুজনিত ঘা’য়ের চিহ্ন ছিলো এবং যে হয়তো তাঁর স্বামীকে আবার পাবে বইলা ইটভাটায় জীবন কাটায়া দিবার পণ করছিলো, অথবা, যে চাইছিলো আর কোনভাবেই স্বামীর পরিচিত ভিটায় ফিরা না যাইতে, ফলে হয়তো এতে স্বামীর কথা ভুইলা থাকন যায়, এইসব ভাইবা যে ইটভাটায় উন্মাদিনীরূপে রাত-বিরাত কাটায়া দিতো, সেই মোজাম্মেলের বৌ জ্যোৎস্না’কে বহুদিন না দেইখা সাদ্দামের বাপ নয়তো মধু নয়তো চান মিয়া চায়ের দোকানে ইটারঙ্গা চা খায়া হয়তো বইলা উঠে, অথবা, হয়তো পুরো গেরামবাসী’ই একদিন ঘুমঘোরে বিষ্ফোরিত বোমার শব্দের মতো সমস্বরে বইলা উঠে ‘বেটি গ্যালো কই’......
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।