১.
ঢাকার আকাশে যখন
বৃষ্টি নামে
আমি আর বাবা
বৃষ্টিতে ভিজি
২.
ঢাকার আকাশে যখন
রাত নামে
আমি আর বাবা
আকাশ দেখি
আর বলি
বাবা, আকাশের কোন তারাটা তুমি !
[পাহাড় আর সাগর ঘেরা সবুজ শহরটা ছেড়ে আমাদের এই শহরে খুব হাপিয়ে উঠতেন তিনি। এখানে মোটেই থাকতে চাইতেন না।
মহাসড়কের পাশ ধরে একধারে সাগর আর অন্যদিকে পাহাড়, শহরে ঢুকতেই এপাশটা বেশ শান্ত। আমাদের বারণ সত্ত্বেও একটা বাড়ি করেন এখানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনের ছুটিতে আমি যেতাম।
বাবা নিজেই চিংড়ি, কোরাল আর এটা-সেটা আমার জন্যে রান্না করতেন, আর বলতেন হ্যারে, অনেক মজা হয়েছে না? আমি বলতাম হ্যাঁ অনেক স্বাদ।
পত্রিকায় লিখে টাকা পেতাম। সে টাকায় বাবার জন্যে একটা শার্ট কিনেছিলাম, বাবা ওটা বেশ যত্ন করে রেখেছিলেন। কত কথা মনে আসে, ছোট্ট বেলায় জ্বর হওয়া মানেই অনেক আনন্দ। বাবার কোলে করে ডাক্তারের কাছে যাওয়া, যা খুশি তখন আবদার করতে পারা।
সেই ছোট্টবেলায় বাবার সাথে পাহাড়তলীর জোড় দীঘিতে বরশি নিয়ে মাছ শিকার, সাগর পাড়ে এয়ারগান নিয়ে পাখি মারতে যাওয়া।
এমনকি যখন অনেক বড় হয়েছি, রাতের বেলায় টিভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছি, বাবা এসে কখন যে মশারিটা লাগিয়ে দিয়ে গেছেন। খুব গরমের সময় কোন এক সন্ধ্যায় একটা টেবিল ফ্যান কিনে এনেছেন। ফ্যান তো আছে, আবার টেবিল ফ্যান দিয়ে কী হবে? রাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি মাথার কাছে ঘুরছে টেবিল ফ্যানটি।
ডিসেম্বরের এক সকালে আমি, নিশাত, রুপক, মুন্না সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে পড়ছিলাম।
মনে মনে তখন কত ভাবনা। আর কটাদিন। জবে গেলেই বাবার জন্যে আগে একটা গাড়ি কিনবো। সে সকালটায় কেন যে এত মনটা খারাপ ছিলো পরে বুঝেছিলাম।
তারপর কত ডিসেম্বর গেলো।
কত গুলো দিন গেলো আমার বাবার সাথে কথা হয় না।
ডিসেম্বরের কোন এক শীতের রাতে চট্টগ্রামের আমাদের বাড়িটাতে আমার বাবা চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়েন। একদম কাউকে জানান না দিয়ে।
আমার বাবা যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক। শান্তিতে থাকুক।
]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।