manikmonzur@gmail.com
কী কারণে আলোকিত করো অন্ধকার ঘর?
দেখতে পাচ্ছো না
সমস্ত গৃহ পুরাতন হয়ে গেছে
সমস্ত আসবাবপত্র নড়বড়ে হয়ে রয়েছে
সমস্ত পরিধেয় বস্ত্র ছিঁড়ে গেছে
সমস্ত বই পোকায় কেটে ফেলেছে
একটিমাত্র কবিতার পাণ্ডুলিপি ছাড়া
কারণ সেটি হৃদয়ের আলোকিত অঙ্গনে সাজানো ছিলো।
এখন কৃষ্ণপক্ষ
পৃথিবীপৃষ্ঠে নেমেছে পাতালপুরির আঁধার
ভালোবাসা
তাতেও প্রাণ নেই...
আলো নেই
রঙ নেই
সুর নেই
ছন্দ নেই
গন্ধ নেই
আনন্দ নেই
বর্ণ নেই
ধর্ম নেই
ভাষা নেই
নীতি নেই
আছে শুধু
দ্বন্দ্ব
সংঘাত
জরা
মৃত্যু
কষ্ট
পরাধীনতা
সন্ত্রাস
ধর্মহীনতা
অপমৃত্যু
ধর্ষণ
ছিনতাই
রাহাজানি
আর আছে বেদনা বিদূর রিক্ততা।
প্রাণপাখি যেনো এক কাগজের নৌকা
দুষ্টু খোকার কোমল হাতে বানানো পাতার ঘড়ি
বাবার মুখে শোনা রূপকথা:
রূপবতী রাজকন্যা
রূপবান রাজকুমার
ও পাতালপুরি
তুষ্ট খুকির মুখের খৈ
মানিকপুরের সুবিখ্যাত মহিষের দই
বাড়ন্ত বালিকার বালির মূর্তি
পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের জ্যোতি
উর্বশীর উষ্ণউচ্ছ্বাস
কখন ফুরিয়ে যায় কী জানি।
বড়ই একা লাগে
...শুধু একা
ধু ধু বনের মতো একা
সাহারা মরুভূমির মরীচিকার মতো একা
অগ্নিগিরির জ্বলন্ত লাভার মতো একা
হিমালয়ের চূড়ায় জমাটবদ্ধ বরফের মতো একা
আটলান্টিকের উত্তাল তরঙ্গের ন্যায় একা
ইরাকের বুকে বুলেটবিদ্ধ শিয়াশিশুর কান্নার মতো একা
প্যালেস্টাইনের বুকে
ইঙ্গ-মার্কিন পেনাস্ত্র হামলায় রক্তরেখা।
আজারবাইজানের ভাঙাদেয়ালে লেলিনের ধ্যানি চোখের মতো একা
মৃত্যুর হিমশীতল স্পর্শের মতো একা
নবজন্মের উষ্ণজরায়ুর বিষ্ণুব›ধনের মতো একা
কালোদুনিয়ার কঠিন কবরে কফিনের মতো একা
চিতার অনলে পোড়া ধূসর ছাইয়ের মতো একা
ক্রুশবিদ্ধ খ্রিষ্টের মতো একা
সত্যসাধনায় সিদ্ধার্থের মতো একা
হেরাগুহায় মুহম্মদ (স.) এর মতো একা
বড়ই কষ্ট লাগে,
...শুধু কষ্ট
কালো কষ্ট, শাদা কষ্ট, দারুচিনি রঙের কষ্ট
কষ্টে কেটেছি বিবর্ণ কৈশোর
রাতভর বৃষ্টিতে ভিজেছি হাড়ভাঙা শীতে কেঁপেছি
গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়েছি।
মঙ্গায় ক্ষুধার্ত থেকেছি।
বন্যায় বাস্তুভিটা হারিয়েছে।
মিছিলে স্বজন হারিয়েছি
বড়ই সুখ জাগে শুধু সুখ বাট্রান্ড রাসেলের সুখ
টাইটনিকের ডুবে যাওয়ার সুখ
জর্জবুশের দখলদারিত্বের সুখ
নেলসন মেন্ডেলার কালোমানুষের অধিকার আদায়ের সুখ
ইউনুসের নোবেল বিজয়ের সুখ
এরশাদ শিকদারের স্বর্ণকমলের সুখ
রওফুন বসুনিয়ার স্বৈরচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানের সুখ
র্যাপিড একশান ব্যাটেলিয়ান টিমের
ক্রস ফায়ারে মানুষ মারার সুখ
চৌষট্টি জেলায় বাঙলা ভাইয়ের বোমা হামলার সুখ
আমার ভাইয়ের রক্তে কেনা
মন্ত্রীর গাড়িতে জাতীয় পতকা উড়ানোর সুখ
রাজপ্রাসাদে রাজার সুখ
নাট্যমঞ্চে নটরাজের সুখ
মুক্তমঞ্চে ঠকবাজের সুখ
মন বলতো বড় হয়ে নাকি আমি সুখি হবো
এক দুই তিন করে
একদিন বড় হলাম
বারো চব্বিশ ছত্রিশ করে
তিন যুগে এসে ছাড়ালাম
অথচ নিয়তির নৈশব্দ নিয়ন্ত্রণে
সুখ নিলয় রচিল না কভু এ ভবে।
হয়তো বার্ধক্যের জীর্ণতায়
শীর্ণ জারুলতরু
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখে
রু অমরাবতীর ঢালে
শ্যামা বাসা বুনে
পরাজয় নিশ্চিত জেনেও
মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত
লড়াই করে যায়
সংসপ্তক পুরুষ
কোলহারা প্রেমিকও
হৃদয়ের কোনো অজানা
বন্দরে তার প্রেমতরি ভিড়ায়
নীড়হারা ঝড়ের পাখিও
আবার নতুন করে
কুঞ্জ-নিকুঞ্জ গড়ে
নয়নের ঐ নীলে
লীন হয়ে যায়।
এই শীর্ণকুঠিরের হৃদয়দুয়ার
খুলে দাও।
দূর নীলমার ঐ নত্র থেকে
চেয়ে পরিয়ে দাও নীলজোছনা টিপ।
জোনাকফুলে গেঁথো মালা
জ্বেলে আলোর দ্বীপ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।