সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............
নাগরিক যন্ত্রনা-৬(দানব ট্যাক্সি ড্রাইভার)
ঢাকায় যাত্রী পরিবহনে চলাচলকারী বেশীর ভাগ ট্যাক্সি ক্যাব ত্রুটিপুর্ণ। বলতে গেলে সব টেক্সিক্যাবের সিট ছেড়া, তেল চিটচিটে সিট, গাড়ির ভেতরে ধুলা আর পুতিগন্ধময়! গাড়ির বডি লক্কর ঝক্কর মার্কা। ডোড় লক ঠিক নেই, কোনটার আবার সাইড গ্লাশও নেই। এসি যদিওবা আছে-কিন্তু তা দীর্ঘ দিন যাবত নস্ট করে রাখা হয়েছে ইচ্ছাকৃত ভাবে। এভাবেই যেসব টেক্সি ক্যাব রাস্তায় এখনো ধুকে ধুকে চলছে সেগুলোর ড্রাইভারগুলো যেনো সাক্ষাত মুর্তিমান আতংক!নোংড়া কাপড়ের বিশ্রী দাঁতগুলো বের করে ড্রাইভার প্রথমেই বলবে মিটারে যাবনা/ মিটার ঠিক নাই! যদিও সরকারী নিয়মে টেক্সিক্যাব আপনার কাংখীত যায়গায় যেতে বাধ্য-কিন্তু সে যাবেনা! ড্রাইভারের স্বেচ্ছাচারিতা আর পাইলটি ভাব মেনে নিয়েও আপনি বাধ্য টেক্সিক্যাবে যেতে।
অনেক অনুরোধ উপরোধের পর যদিওবা আপনার কাংখীত স্থানে যেতে রাজী হয়-ভাড়া হাকাবে ৬০ টাকার যায়গায় ২৬০ টাকা! বাধ্য হয়ে যখন আপনি টেক্সিতে চড়বেন-অসয্য গড়ম আর ধুলোবালির মাঝেই পা গুটিয়ে বসে থাকতে হবে অবধারিত ট্রাফিক জ্যামের কারনে। তারউপড় গাড়ির ভিতরে বোনাস হিসেবে পাবেন মশার কামড়।
প্রসাশনের নীরবতার সুযোগে ড্রাইভার আর ট্যাক্সিক্যাবের মালিকদের দৌরাত্ম্য দিনের পর দিনে বেড়েই চলছে! যেসব গাড়ির চালকদের বিরুদ্ধে মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ অথবা কোন ত্রুটি পাওয়া যাবে-তাদের রুট পার্মিট বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার জন্য ডি এম পি'র কড়া নির্দেশ থাকলেও এবিশয়ে যথাযথ প্রতিফলন কখনোই দেখাযায়নি। একশত ভাগ ড্রাইভারই মিটারে যেতে আগ্রহী নয়। যেসব গাড়িতে এসি আছে বলে যাত্রী তোলা হয়-যাত্রী তোলার পরই "এই মাত্র" এসি নস্ট হয়ে যাবার কথা বলে অসুস্থ্য যাত্রীদের বিড়ম্বনায় ফেলে।
আগে জানজটের কথা বলে ড্রাইভার বেশী ভাড়া আদায় করত। এখন জানজটের সাথে যোগ হয়েছে-গ্যারেজ ভাড়া, মালিকের জমা বেশী, মিটার নস্ট, রাস্তা খারাপ, গ্যাসের জন্য দীর্ঘ লাইন, দুরত্ব কম সহ নানান ছলছুঁতায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়! একজন ক্যাব চালকের সাথে কথাবলে জানাযায়-যোগাযোগ মন্ত্রনালয় গাড়ির জমা নির্ধারিত ৪৫০ টাকা কিন্তু মালিক ৯০০/১০০০ টাকার কমে গাড়ি নিয়ে বেড় হতেই দেয়না। তারউপড় ইদানীং চাঁদাবাজীর পরিমান আকাশ্চুম্বী হয়েছে। আগে যেখানে শুধু পুলিশকে চাঁদা দিতে হত-এখন পুলিশ ছাড়াও ক্ষমতাশীন ক্যাডারদের চাঁদা নাদিলে গাড়ির চাকা ঘোড়ানো অসম্ভব-যার কারনে বেশী ভাড়া আদায় করে নানান ছলছুতায়!গাড়িতে এসি না থাকা প্রসঙ্গে ড্রাইভার আরো জানায়-মালিকের নির্দেশেই এসি'র কনেকশান নস্ট করে রাখা হয়-কারন এসি চালালে খরচ বেশী পরে।
বি আর টি'র হিসাবমতে ঢাকা সিটিতে বর্ত্মানে ১৩০০০ অটোরিকশা এবং ট্যাক্সিক্যাব আছে ৬০০০ টি।
কিন্তু এর বাইরে হাজার হাজার অবৈধ সি এন জি এবং টেক্সিক্যাব রাস্তায় চলাচল করছে-যা দেখার কেউ নেই।
(টেক্সি/ সি এন জি ড্রাইভারদের সাইজ করার জন্য ছোট্ট একটা টিপসঃ ওদের চাহিদা মত ভাড়ায় হাসিমুখে গাড়িতে উঠে আপনার বাড়ির কাছাকাছি এসে গলির ভিতর ঢুকাবেন। ন্যায্য ভাড়া ৬০ টাকা ড্রাইভারের হাতে দিবেন। ড্রাইভার যখন বলবে "এইডা কিদিলেন বাই? ভাড়াতো ১৬০টাকা কইয়া লইছিলাম"। তখন ঠাস করে আশিসিক্কার একটা চড় মেরে বলবেন-"---এই নে বাকী টাকাটা তোর গালের উপড় দিয়া দি্লাম"।
তারপর আরো কিছু কিল ঘুষি দিয়ে ছেড়ে দিবেন। সম্ভব হলে সি এন জি ড্রাইভারকে ওর ড্রাইভিং চেম্বারে বসিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে চাবিটা দূরে ছুড়ে ফেলে দিবেন। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।