নরসিংদীর পলাশে আরমান দম্পতির লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের ধারণা ছিল সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, ডাকাতি অথবা পূর্বশত্রুতার কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। হত্যার কারণ দু-এক দিনের মধ্যেই তদন্তে বেরিয়ে আসবে। কিন্তু পুলিশের ওই আশাবাদের পর পেরিয়ে গেছে দশ দিন। তারা এখনো হত্যার কারণ জানতে পারেনি। কারা এই নৃশংস খুনের সঙ্গে জড়িত, তা এখনো অজানা পুলিশের কাছে। উদ্ধার হয়নি নিহতের মোটরসাইকেলটিও।
এ অবস্থায় খুনের শিকার ওই দম্পতির ছেলে-মেয়েরা চরম আতঙ্কের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ, মামলার তদন্ত হচ্ছে, অচিরেই খুনিরা ধরা পড়বে- এমন সব কথাবার্তার মধ্যেই পুলিশের তদন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। তবে ওই দম্পতির পরিচিত লোকজনই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছে। ২৭ আগস্ট ভোরে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্ধুর ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে ঘরের দরজা ভেঙে ঘোড়াশাল সার কারখানার মেশিনারি বিভাগের সাবেক মাস্টার অপারেটর আরমান ভূইয়া (৭০) ও তার স্ত্রী সালমা বেগম (৫৫)-এর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত দম্পতির পারিবারিক সূত্র জানায়, ২৬ আগস্ট রাত ১০টায় আরমান ভূইয়ার কাছে ফোন করেন তার মেয়ে আসমা বেগম। আরমান ভূইয়া ফোন ধরেই বলেন, মায়ের সঙ্গে কথা বল। আসমা তখন তার মায়ের কণ্ঠ শুনতে পান। মা তাকে ফোনে জানান, বাসায় মেহমান। খুব ঝামেলায় রয়েছেন। পরে কথা বলবেন। এ কথা বলেই ফোনটি কেটে দেন আসমার মা। এর পর থেকে তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করতে পারেনি। ২৭ আগস্ট ফোন ছিল বন্ধ। পরে রাত ১০টায় পুলিশ ওই বাসার দরজা ভেঙে দম্পতির লাশ উদ্ধার করে। মামলার বাদী আরমান ভূইয়ার মেয়ে ফাহমিনা রহমান জানান, আমার বাবার কোনো শত্রু ছিল না। কী কারণে তাদের হত্যা করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত হালদার জানিয়েছেন, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, পূর্বশত্রুতা ও ডাকাতি- এ তিনটি বিষয় সামনে রেখে জোড়া খুনের তদন্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ড দুটি পরিকল্পিত। অপরাধীরা অত্যন্ত চতুর। আর এখানকার স্থানীয় প্রেক্ষাপট অনুযায়ী তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষ সহিংস হয়ে ওঠে। তাই সব কটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তদন্ত চলছে দ্রুত গতিতে। আশা করি অচিরেই এ হত্যাকাণ্ডের জট খোলা সম্ভব হবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরমান ভূইয়ার শালা তারা মিয়া (৪৫) ও রফিকসহ (৩০) বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নানা সন্দেহ তৈরি হওয়ায় রফিককে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।