আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জি-২০ দ্বিধাবিভক্ত, যুক্তরাজ্যকে ছোট দ্বী

সিরিয়া ইস্যুতে গোটাবিশ্ব এখন উদ্বিগ্ন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিরিয়ায় সামরিক হামলা চালানোর ঘোষণা অনেকটা দিয়ে রেখেছেন। আর এই হুমকির বিরুদ্ধে সরাসরি বিরুদ্ধাচরণ করে বসেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর এ অবস্থায় রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে সম্মেলনে বসেছেন বিশ্বের মূল অর্থনীতির ক্ষমতাশীল জি-২০ জোটের নেতারা। সেখানেই সিরিয়ায় হামলা চালানোর ব্যাপারে মার্কিন আরেক মিত্র যুক্তরাজ্যের উৎসাহকে ব্যঙ্গ করতে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ যুক্তরাজ্যকে দ্বীপ বললেন। শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি। রাশিয়ার আভিজাত্যের কথাও শুনিয়েছেন ব্রিটিশদের। আর এ (জি-২০) সম্মেলনের মূল আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সিরিয়ায় হামলার বিষয়টি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন বিশ্ব নেতারা। অথচ সম্মেলনে মূল আলোচ্য বিষয় হিসেবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কথা আলোচনা হওয়ার কথা। সম্মেলনের প্রথম দিন (বৃহস্পতিবার) সিরিয়ায় সামরিক হামলা চালানোর বিষয়ে জোট একমত হতে পারেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন হামলার জন্য এ বৈঠকে জনমত গঠনের চেষ্টা করছেন তখন ইউরোপের দেশগুলো এবং ব্রিঙ্ভুক্ত চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত এবং পোপ ফ্রান্সিস সম্ভাব্য যুদ্ধের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। প্রথম দিনের সম্মেলন শেষে নৈশভোজেই সিরিয়ার বিষয়টি নিয়ে নেতাদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে বলে জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী এনরিকো লেতা। ওাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেছেন, তাদের এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের কফিনে আরেকটি পেরেক ঠুকার মতোই ব্যাপার। ওদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, রাশিয়া বারবার সিরিয়া বিষয়ক প্রস্তাবনা আটকে দিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জিম্মি করে রেখেছে। সম্মেলনে চীনের সহকারী অর্থমন্ত্রী ঝু গুয়াংইয়াও বলেছেন, সিরিয়ার ওপর সামরিক হামলার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বিশেষ করে তেলের বাজারে এবং তেলের দাম অনেক বেড়ে যাবে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনও সেন্ট পিটার্সবার্গে রয়েছেন এবং তিনিও সামরিক হামলার বদলে কূটনৈতিক উপায়ে সিরিয়া সংকটের সমাধান খোঁজার কথা বলেছেন। তিনি এও বলেছেন, যদি সিরিয়ায় হামলা করতেই হয় তবে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষেই তা করতে হবে। আর জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও সিরিয়ায় সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়ার কথা বাতিল করে দিয়েছেন। পোপ ফ্রান্সিস অনুরোধ জানিয়েছেন, সামরিক পন্থায় নয়, শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করা হোক। তবে ব্রিটিশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, ফ্রান্স, তুরস্ক, কানাডা এবং যুক্তরাজ্য হামলা চালানোর ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে জোরালো সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু পিটার্সবার্গের সংবাদদাতারা বলছেন, জি-২০ তে সিরিয়ায় হামলার সমর্থকদেও চেয়ে বিরোধিতাকারীদের সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে।

সিরিয়া বিষয়ে জাতিসংঘের আশা ত্যাগ যুক্তরাষ্ট্রের : কথিত রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়া সরকারকে দায়ী করে দেশটিতে শাস্তিমূলক হামলার পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, আর এ হামলার জন্য জাতিসংঘের অনুমোদন চাইবে না যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার সিরিয়া বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা পরিত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। এ জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ জানিয়ে বলেছে, রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদকে জিম্মি করে রেখে মিত্র সিরিয়াকে নিরপরাধ শিশুদের বিরুদ্ধে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগের সুযোগ করে দিচ্ছে।

সিরিয়া উপকূলে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে রাশিয়া : যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর সামরিক অভিযানের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে সিরিয়া উপকূলে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই ভূমধ্যসাগরে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে রাশিয়া। গতকাল শুক্রবার নৌবাহিনী সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে রাশিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম ইন্টারফ্যাঙ্ জানিয়েছে, সিরিয়া উপকূলে সবচেয়ে বড় ল্যান্ডিং শিপ নিকোলাই ফিলচেনকভ পাঠাচ্ছে মস্কো। তবে যুদ্ধজাহাজটিতে কী ধরনের পণ্য থাকছে এ ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি নৌবাহিনীর সূত্র। এর আগে, গত রবিবার এসএসভি-২০১ প্রিয়াজোভি নামে একটি গোয়েন্দা জাহাজ পাঠায় রাশিয়া।

যুক্তরাজ্যকে ছোট দ্বীপ বলল রাশিয়া : যুক্তরাজ্য তো একটি ছোট দ্বীপ, তাদের কথা কেউ কানে তোলে না। আর বর্তমান সময়ে কূটনীতিক ক্ষেত্রে দেশটিকে টেনে আনা অপ্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। বিদ্রোহীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগে সিরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার হামলা চালানোর পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তিনি পার্লামেন্টে এ নিয়ে ভোট আনলেও তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন পার্লামেন্ট সদস্যরা। মূলত সিরিয়ায় হামলা চালানোর ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের উৎসাহকে ব্যঙ্গ করতে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ যুক্তরাজ্যকে দ্বীপ বললেন।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.