বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।
ক'দিন ধরে ছোটবেলার ঈদ উদযাপনের কিছু স্মৃতি মনে পড়ছে। ব্লগে অনেকেই ছোটবেলার ঈদ উদযাপনের স্মৃতি নিয়ে অনেক সুন্দর লেখা লিখছেন, সেগুলো পড়ে পুরোনো সেই স্মৃতিগুলো আরো বেশী মনে পড়ছে।
ছোটবেলায় ঈদের কেনাকাটাও অনেক মজার ছিল। অনেক উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদের কেনাকাটা করতে যেতাম।
জামাকাপড়, জুতা এসব পছন্দের জিনিস কিনে বাসায় এসে আলমারীতে লুকিয়ে রাখা, ঈদের দিন সকালের আগে সেগুলো বের না করা, এরকম শিশুতোষ পাগলামী অনেক করতাম। এখন সেইসব পাগলামীগুলো মনে পড়ছে, আর আপনমনে হাসছি। ছোটবেলার মতো ঈদের কেনাকাটার সেই আগ্রহটাও আর নেই। এবার তো ভাবছি ঈদে কিছুই কিনবো না, কারণ ঈদে তেমন কোথাও বের হওয়া হয়না এখন আর, শুধু শুধু কেনাকাটা করে কি লাভ? আজ সকালেও আমার মায়ের সাথে ফোনে কথা বলছিলাম, আমার মা বলছিলেন, ঈদে কি কি কিনতে চাই। আমি জানালাম, কিছুই কিনবো না, এখন আর সেই বয়স আছে নাকি !!! আমার এই কথা শুনে আমার মা হেসে বললেন, তুই কি বুড়ো হয়ে গেছিস নাকি যে কেনাকাটা করা যাবেনা? আমিও মায়ের সেই কথা শুনে কিছুক্ষণ হাসলাম।
ছোটবেলার সেই উন্মাদনাটা যে মরে গেছে, সেটা তো আর মা'কে বোঝাতে পারবোনা, তাই ব্যাপারটা কোনোরকমে পাশ কাটিয়ে গেলাম।
ভাবছি, কি দ্রুত সেই দিনগুলো পার করে এলাম!!! ঈদের দিন সকালে গোসল করে নামাজ পড়তে যাওয়া, নামাজ পড়ে এসে বাবা-মা কে সালাম করা, পরিবারের সবাই একসাথে বসে খাওয়াদাওয়া করা, তারপর আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, মুরুব্বীদের সালাম করে সেলামী নেয়া , এসবই এখন খুবই মিস করি। ছোটবেলায় পরিবারের সবাই একসাথে মিলে ঈদ করতাম। এখন সময়ের বিবর্তনে পরিবারের এক একজন এক একদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছি । বড় দুই ভাই দেশের বাইরে, এই প্রথমবারের মত আমাদের বাসায় আমার বাবা-মায়ের সন্তান হিসেবে একমাত্র আমিই থাকব, একথা ভেবে খুবই খারাপ লাগছে।
বড় দুই ভাইয়া, ভাবীরা এবং তাদের বাচ্চাদের সাথে কখনো একসাথে ঈদ করা হয়নি, হয়তো ভবিষ্যতেও কখনো হবেনা ।
ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথেও অনেক বেড়াতাম ঈদের দিনে। এখন আর সেই বন্ধুত্বের বৃত্তটি নেই, আমার পরিচিত মানুষজনের গন্ডিটা অনেক ছোট হয়ে গেছে শৈশবের তুলনায়। আগের মত তেমন বন্ধুও নেই, তেমন হৈ-হুল্লোড়ও নেই।
ছোটবেলায় কত সুন্দর, নির্ঝঞ্চাট দিন কাটাতাম, কোনো টেনশন ছিলনা, ছিলনা ভবিষ্যত নিয়ে ভাবনার কোনো ব্যাকুলতা।
আর এখন কত কিছু ভেবে জীবন পার করতে হয়, শৈশবের সেই আনন্দটুকু কবেই যে শেষ হয়ে গেল, টেরই পেলাম না।
হায়রে শৈশব......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।