"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার
সিনেমার শুটিং প্রায় শেষ নায়িকা মৌসুমী চেয়ারে বসে আছে।
আকালীর মা(তানজিলা হক): আফা জানেন বিষু স্যার কি বলে?
মৌসুমী: আফা টাফা কি?!! ম্যাডাম বলো, যা বলার তাড়াতাড়ি বলে মুখের সামনে থেকে দূর হও তো (বিরক্ত)
আকালীর মা: বলে কি....মৌসুমী আপু তো আমার থেকে অনেক সিনিয়র, তাছাড়া উনি অনেক হেলদি....আমার সাথে কি মানায়!! “ভালবাসার রশি দিয়া আমারে বাইন্ধ্যা থামা” গানটাতে ইনাকে কোলে নিতে যে কি পরিমাণ কষ্ট হয়েছিল....২দিন জিমে যাই নি। নান্নীর সামনে বইয়্যা এই কতাডিন কইছে....নান্নী শুইন্যাও কিছু কইলো না।
মৌসুমী: কি এতবড় স্পর্ধা!! আমার সম্পর্কে এসব বলে কি করে একটা নিউকামার!! হাউ ডেয়ার হি ইজ!!
(ক্রোধে অন্ধ হয়ে ডিরেক্টর জেবিন নান্নীর কাছে গেল)
মৌসুমী: দ্যাখেন নান্নী আমি এমনিই নিউকামারদের সাথে কাজ করি না, শুধু আপনার ছবি বলে করছি আর বিষুর মত ১টা চাইল্ড আর্টিস্ট আমাকে বলে কি! আপনার সামনে কিভাবে বলল!! আর আপনিও বা কিভাবে সেটা শুনলেন!! উহ্ আমি ভাবতেও পারছি না!! মাই গড!!
জেবিন নান্নী বিরক্ত হয়ে: কি হয়েছে মোসুমী তাতো আগে বলবে? (বৃদ্ধা জেবিন নান্নী মৌসুমী উচ্চারণ করতে পারেন না, বলেন মোসুমী)
মৌসুমী: আপনি এখনও বলছেন, কি বলেছে? যান করলাম না আমি আপনার সিনেমা.....হাতে থাকা স্ক্রিপ্টটা ছুঁড়ে ফেলে হাঁটা দিল মৌসুমী, সামনে একটা প্লাস্টিকের চেয়ার ছিল, সেটাকে লাথী মেরে চলে গেল।
জেবিন নান্নী: আকালীর মা বিষু কি করছে?
আকালীর মা: আয়নার সামনে চুল আঁছড়াইতাছে আর কুডুর কুডুর কইরা জম্মের মতন উহুন মারতাছে।
জেবিন নান্নী: ঐটার চুলের মুটি ধরে নিয়ে আয়(খাইয়ালামু)
আকালীর মা নান্নীর হুঙ্কার শুনে বিষুর কাছে গেল, সে একটু চিন্তিত সে কি একজন নায়কের চুলের মুটি ধরবে না ভদ্রভাষায় বলবে। পরে ভাবলো যা বলেছে তা ই করি আর আজকে সাংবাদিক আসার কথা বিষুর ইন্টারভিউ নেবার জন্য সে যদি চুলের মুটি ধরে নিয়ে যায় আর সাংবাদিক দ্যাখে পেপারে তার নামও উঠবে বিষুর সাথে।
বিষু অবাক হয়ে দেখছে তার প্রিয় চুল ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে একজন।
জেবিন নান্নী: এই তুমি মোসুমীরে কি বলছো?
বিষু: কই কিছু কই নাই তো
জেবিন নান্নী: তাহলে মোসুমী চলে গেল ক্যানো?
বিষু: অত কথা বাদ দিয়ে কন আমার চুল ধরে আনছেন ক্যান?!!
জেবিন নান্নী: তুমি কি মনে করো নিজেরে....নিজেরে দ্যাখছো আয়নায়? তোমার কি কোন ফেস ভ্যালু আছে? আমি চান্ছ দিছি বলে
বিষু: নান্নী আপনি আমাকে যা বলেন আমি শুনবো কিন্তু চেহারা আর চুল নিয়া কিছু বলবেন না। আমি আর এ ছবিতে থাকবো না (বিষু প্রায় কাদোকাদো হয়ে বলল)
বিষু বাইরে যেয়ে দাড়িয়ে একা একা বিড় বিড় করতে থাকলো, মুটকি ...মুটকি...মুটকি!! আগে মৌসুমীরে কইছি এখন তোরে কইতাছি....
জেবিন প্রডিউসার রেটিং এর কাছে যেয়ে বলল, আমি এইগুলান নিয়া কই যাবো?!! মোসুমী তো চলেই গেছে এখন বিষু কয় থাকপে না...কাম কেমনে করবো?
রেটিং গম্ভীর হয়ে বলল, বিষু কই?
আকালীর মা দেখিয়ে দিল....রেটিং বিষুকে ধরে ধুপুড় ধাপুড় মার শুরু করে দিল।
জেবিন নান্নী: আরে আরে করো কি!! করো কি!!
রেটিং হুহা করে হেসে বলল, আমি বকাঝকা পছন্দ করি না, ডাইরেক্ট মাইরে বিশ্বাসী।
বিষু ততক্ষণে মাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে কান্নাকটি করছে।
জেবিন নান্নী: যা সোনা আর কাদে না, লাস্ট ড্যান্সের শটটা দিয়া আয়। ড্যান্সডিরেক্টর চিকন আইস্যা পড়ছে।
চোখমুছে বিষু মেকাপ নিতে গেল, ড্যান্স মারতে তার ভালই লাগে।
আর আজকের গানটায় সে একা নাচবে...বাচা গেছে মৌসুমীর সাথে সব শট শেষ।
চিকন: দ্যাকো ওইরম ভাবে মাজা লাড়াইলে হইবে না, এট্টু মোচড়ান দিয়ে লাড়াইতে হইবেক।
বিষু মোচড় দিচ্ছে কিন্তু চিকনের পছন্দ হচ্ছে না।
চিকন জেবিনের কাছে যেয়ে বলল, ও নান্নী এই পোলা মাজা লাড়াইতে পারে না। আমি এরে দিয়া কিতা করতাম
সিনেমার শুটিং সব শেষ, নায়িকা মৌসুমী আগেই চলে গেছে তাই এ ছবিতে তার ডাবিং করছে ডাবিং আর্টিস্ট প্রিয়তমা কিন্তু সে মৌসুমীর মত হাসি দিতে পারছে না।
আকালীর মা: নান্নী আমাগো বস্তিতে একটা পুলা আছে, গ্যারেজে কাম করে।
জেবিন নান্নী: তো?
আকালীর মা: পুলাডা শাবানার মতন হাসে, আপনি কইলে মৌসুমীর হাসিও টেরাই মাইরা দ্যাকতে পারে।
জেবিন নান্নী: যা পারিস কর...আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না
টানা একসপ্তাহ মৌসুমীর ৪ডজন প্রেমের ছবির রোমান্টিক দৃশ্য দেখে রাশু মৌসুমীর হাসি দেয়া শিখলো। নান্নীর তা পছন্দও হল..এভাবেই শেষ হল এই সিনেমা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।