............................................
আমি প্রাইমারি স্কুলে পড়াকালীন সময় থেকেই অলস। ক্লাসে স্যাররা ক্লাসে কিছু লিখতে দিলে আমি লিখতাম না, আমি যেই মেয়েটার সাথে স্কুলে যেতাম সেই মেয়েটা লিখে দিতো। ওর নাম ছিল পুতুল। স্যাররা ওতগুলো শিশুদের মধ্যে কখনই এই ব্যাপার খেয়াল করতো না। পুতুল একদিন আমার কাজগুলো করতে পার্বতীকে দিল।
আর ঐ দিনই স্যার জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার, তোমার আর ওর হাতের লেখা এক কেন? পার্বতী বলে দিল যে আমারটা সে লিখে দিয়েছে। স্যার দুইজনাকেই সবার সামনে কান ধরিয়ে দাড় করিয়ে দিল। এটা ছিল আমার স্কুল জীবনের প্রথম পানিশমেন্ট। এই ঘটনা আবার পুরো এলাকায় রটে গেছিল। এলাকার মুরব্বীরাও আমাকে জিজ্ঞেস করতো, তোমাকে নাকি ঐদিন স্কুলে কান ধরিয়ে দাড় করিয়ে দিয়েছিল?
ক্লাস ফোরে নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম।
প্রথম প্রথম বড়রা কেউ স্কুলে পৌছে তো দিতোই সাথে ক্লাসরুমেও ঢুকিয়ে দিতো। একদিন একা একাই স্কুলে গিয়ে বসলাম ক্লাস ফাইভে। ক্লাস ফাইভের একটা মেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, আমি কোন ক্লাসে পড়ি? তখন পুরো ক্লাসের সবার দিকে তাকিয়ে দেখি কাউকে আমি চিনিনা। তার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ক্লাস থেকে বের হলাম এবং পুরো দিশেহারা হয়ে পড়লাম। এতগুলো ক্লাসরুমে নাম লেখা নাই।
দুইতলার এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত বারবার ছুটে বেড়াচ্ছি, কিন্তু আমার ক্লাসের কাউকে দেখতে পেলাম না। আমার ঠোঁট উল্টে কান্না পাচ্ছিল। তারপরে একসময় খুঁজতে খুঁজতে পেলাম আমার ক্লাসটাকে ২০৪ নং রুম। দরজায় লেখা চতুর্থ শ্রেনী।
আমার একটা ডাকনাম আছে, নামটা ছেলেদেরও হয়, মেয়েদেরও নাম হয়।
ধরা যাক, নামটা অনি।
তো আমাদের এলাকায় এই নামে একটা মেয়ে ছিল। মেয়েটা আমার চেয়ে বড়। সে ভালো ছিল, কিন্তু তার বান্ধবীগুলো বদের বাসা। আমি তাদের আশেপাশে থাকলে, ঐ বদগুলো আমার নাম ধরে চিল্লাতো।
আমি এতই হাবা ছিলাম যে(এখনও আছি) যে, আমি এদিক ওদিক খুঁজতে থাকতাম কে আমাকে ডাকে! খুঁজে পেয়ে যখন তাদের সামনে যেতাম তখন তাদের সেকি হাসি!(খাইয়ালামু)এই গাধাপোনা আমি ৩/৪বার করেছি।
আমার খালাতো ভাই বাবু ছোটবেলা থেকেই গুন্ডা গুন্ডা টাইপ ছিল। সে সবাইকে মারতো। একবার সে ট্রাফিক পুলিশকেও মেরেছিল। সে এতই উশৃঙ্খল ছিল যে খালা-খালুও তাকে কন্ট্রোল করতে পারতো না।
সবাই তার ভয়ে তটস্থ থাকতো। আর সেই বাবুও মাঝে মাঝে আমার সাথে বদমাইসি করতো। একটা পলিথিনে অনেকগুলো তেলাপোকা ধরে আমাকে ভয় দেখাতো। মাঝে মাঝে যখন তেলাপোকা পেতো না তখন শুকনো মরিচ তেলাপোকার মত রঙ বলে তা হাতের মুঠোর মধ্যে রেখে ভয় দেখাতো। কিন্তু কয়েকবার ধরে এমন মার দিয়েছিলাম যে আমাকে হুজুর হুজুর করতো।
আজও বাবু আমাকে ভয় পায়, তবে ও আর আগের মত নাই।
ছোটবেলায় একসাথে অনেকগুলো কলাম সাথে রাখতাম। আমার কাছে অতগুলো কলম একসাথে দেখে কিছু ছেলেমেয়ে আমাকে কলমচোর বলতো। এবং তাদের ধারণা ছিল তাদের হারিয়ে যাওয়া কলমগুলো আমিই চুরি করেছি এবং তারা আলোচনাও করতো। তাই আর বেশি কলম নিতাম না স্কুলে।
একটা সময় ছিল যখন ছোট ছোট বাচ্চাদের পটিয়ে পটিয়ে ঘরে আনতাম। গান ছেড়ে দিয়ে নাচাতাম। যেইটা নাচতো না, সেইটাকে ধরে আবার মারতাম।
(সবাই ইদানিং ছোটবেলাকার স্মৃতি নিয়ে পোস্ট দেয়, আমারো শখ হল কিন্তু লিখতে গিয়ে দেখলাম সেরকম কোনো স্মৃতিই আমার নাই)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।