কল্যাণের কথা বলি, কল্যাণের পথে চলি।
ইসলামের স্বর্ণযুগে বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান নিয়ে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সী অঙ্গরাজ্যের জার্সী সিটিতে অবস্থিত লিবার্টি সায়েন্স সেন্টার।
"ইসলামিক সায়েন্স রিডিস্কভার্ড্" শিরোণামের এই প্রদর্শনীর স্পন্সর হচ্ছে কেপ টাঊন ও দুবাই কেন্দ্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সাল্টেন্সি ফার্ম এম,টি,ই, স্টুডিওস।
৭০০ থেকে ১৭০০ খ্রীষ্টাব্দের মাঝে বিজ্ঞানের যে উন্নয়ন মুসলমান বৈজ্ঞানিকদের দ্বারা হয়েছে তার উপরেই মুলতঃ প্রদর্শনীটি।
"স্টেট-অফ-দ্য-আর্ট ইন্টারেক্টিভ টাচ স্ক্রীন" প্রযুক্তির মাধ্যমে মুসলিম বিজ্ঞানীদের জীবনী এবং আবিষ্কার সম্পর্কে জানতে পারবেন দর্শকরা।
এছাড়াও তাঁদের আবিষ্কারের কিছু মডেলও স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে।
উল্লেখযোগ্য প্রদর্শনীর মধ্যে রয়েছে খ্রীস্টীয় নবম শতকের স্প্যানিশ মুসলিম বিজ্ঞানী আব্বাস বিন ফিরনাসের ফ্লাইং মেশিনের মডেল, যা দিয়ে বিন ফিরনাস শুন্যে উড়াল দিয়ে ভাসমান ছিলেন কিছুক্ষণ। এটা সংঘটিত হয়েছিল ৮৭৫ খ্রীস্টাব্দে, লিওনার্দো দা ভিঞ্চির কয়েকশ বছর আগে।
রয়েছে ত্রয়োদশ শতকের মুসলিম চিকিত্সা বিজ্ঞানীদের ব্যব-হৃত অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি, যা আধুনিক শল্যচিকিত্সার যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে।
ইরাকী চিকিত্সক আলী ইবন আন-নাফীর ১২৪২ সালে আবিস্কৃত "হিউম্যান সার্কুলেটরী সিস্টেমের" ডায়াগ্রামও রয়েছে প্রদর্শনীতে।
বীজগণিত ও লগারিদমের জনক মধ্য এশিয়ার গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী মুহাম্মদ বিন মুসা আল-খাওয়ারিজমীর মহাকাশের বস্তুনিচয় অবলোকনের জন্য উদ্ভাবিত যন্ত্রপাতির রয়েছে এক শোকেস।
এছাড়াও আরো অনেক আবিষ্কার এবং বিজ্ঞানীদের জীবনী রয়েছে প্রদর্শনীতে।
জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান এবং পশ্চিমা সমাজে এর প্রভাব সম্পর্কে ধারণা দানের মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি ভারসাম্যপুর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে ভুল ধারণার অপনোদন করা এবং আন্তঃসাংস্কৃতিক বুঝাপরা সৃষ্টি মুলতঃ এই প্রদর্শনীর লক্ষ্য।
লিবার্টি সায়েন্স সেন্টারের সহ-সভাপতি ওয়েইন লা-বার এর মতে, "এই প্রদর্শনীটি মুলতঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে, তবে এটা একই সময়ে আমদেরকে একটা ভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে যথাযথ ধারণা দেবে যে সংস্কৃতিকে বর্তমানে কোননা কোন ভাবে অসূরীয় সংস্কৃতি হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়ে থাকে। "
উল্লেখ্য যে রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর ইউরোপ যখন সভ্যতার অন্ধকারে হারিয়ে যায় তখন মুসলমানরা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখে এবং এমন সব উদ্ভাবন ঘটায় যার উপর ভিত্তি করে আজকের বিজ্ঞানের উন্নতি।
মজার ব্যাপার হলো এতদিন ইউরোপীয় ঐতিহাসিকরা বিজ্ঞানের ইতিহাসের ১০০০ বছর (৫০০ - ১৫০০ খ্রীঃ) সম্পর্কে চুপ থাকতেন। আর এই সময়টিই হলো বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদানের স্বর্ণযুগ। আশার কথা হচ্ছে বর্তমানে ইউরোপিয়ান সভ্যতার উত্তরাধিকারীরা মুসলমানদের এই অবদানকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছেন।
প্রদর্শনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নীচের লিংকগুলো দেখুন।
নিউ ইয়র্ক টাইম্স আর্টিকেল
লিবার্টি সায়েন্স সেন্টারের হোম পেজ
ইসলাম অন লাইন আর্টিকেল
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।