আ মা র আ মি
বাস ছিলো পৌনে এগারোটায়। আমি সাড়ে ১০টায়ই রিকশা নিয়ে রওনা দিলাম টিএসসি থেকে। প্রতিবার বাস ধরা নিয়ে আমার খুব টেনশন হয়, এবারও টেনশন সাথে নিয়েই ছুটলাম। পৌছালাম সময়মতই মনেহয়, ঘড়ি দেখিনি আর। কাউন্টার নেমে সরাসরি সামনে যাকে পেলাম জিজ্ঞাসা করলাম, ৭ নম্বর বাস কি এসেছে? উত্তরে আমার সস্তি।
আচ্ছা, একটা সিগারেট খেয়ে নেব নাকি এসময়ে? খানিকটা সময় তো আছে হাতে, ঘড়ি দেখলাম এবার। ব্যাগটা কি রেখে যাব না কি? আশপাশ দেখলাম। এক মোটামুটি সুন্দরী বসে আছে ফ্যানের নিচটা দখল করে, একাই। আমিওতো একা যাচ্ছি। মেয়েটা কি আমার বাসের? আমার পাশের সিটটার মালিক কে? মেয়েটা নাকি? ধুর ছাই, ব্যাগ ঘারে নিয়েই বেরি্য়ে গেলাম।
পানি কিনলাম একটা, সাথে সিগারেট। একটা ধরিয়ে কাউন্টারের সামনে। ৭ নম্বার বাসের দেখাও পেলাম, উঠলাম না তাড়াহুড়ায়, জানি ডাক দিবে সুপারভাইজার একসময়। দাঁড়িয়া থাকতে আর ভাল্লাগে না। মেয়েটার দু'পাশেই চেয়ার খালি, তবু বসা হয়না, বসে না কেউই।
আমি গিয়ে বসলাম অন্যপাশে। অস্হিরতা বাড়ে অপেক্ষার, আবার বাইরে। হায়রে, আমার ৭ নম্বার বাস কই? তাড়াতাড়ি ছুট আবার কাউন্টারে, এবার খানিকটা রাগত স্বরেই কাউন্টারের লোকটা বললো,অপেক্ষা করেন, টাইম হইলে ডাকমু। আমি আবার ফ্যানের নিচে, খানিকটা অস্বস্থি নিয়েই। লোকটা কি ৭ নম্বর বাসের কথাই বলেছে, নাকি অন্যকোনটা।
অবশেষে বাস এলো আমার। উঠলাম আমি হাসিমুখে। খুঁজে নিলাম বসার জায়গাটা। আমার পেছনেই ছোট এক ছেলে, ১০-১২ বয়স হবে। বাসে আগামীকালের পত্রকা বিক্রি হচ্ছে।
ছেলেটা খুব বড় মানুষের মত মুখ করে নিলো একটা। আমি হাসলাম, এমন বয়সে একা একা জার্নি করার মজাই আলাদা! আমি পকেট থেকে এমপিফোরটা বের করতেই দেখি, সেও একটা বের করে ফেললো। আমি আবার মজা পেলাম।
বাস চলতে শুরু করেছে। আমার কানে গান,পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া।
আমার চারপাশে ভিড় অনেক। রাস্তায় জ্যাম। খানিক পর পরই কাউন্টার। বাস দাড়ায়, মানুষ ওঠে। গানটা মেলে না কেমন যেন।
আমি আমার পাশে বসা মানুষটার দিকে তাকালাম। খেটে খাওয়া ঘরে ফেরা মানুষ, আঁধারে চোখ, সাধারণ। আমি অসাধারণ চোখে তাকিয়ে থাকলাম গানে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।