ঘরে-বাইরে সর্বত্রই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। সপ্তাহ দুয়েক আগে বাড়িতে ঢুকে সাবেক এক পুলিশ
কর্মকর্তাকে খুন করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় অপরাধীরা। এই অপরাধের কূলকিনারা খুঁজে না পেতেই গত পরশু রাতে আবার বাসায় ঢুকে বাবা-মায়ের সামনে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে। আবার রাস্তায় বেরুলে পড়তে হচ্ছে ছিনতাইকারীদের কবলে। হঠাৎ করেই সারা দেশে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের দাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
পুলিশ ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ২ হাজার ৯০৬ জন খুনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে রাজনৈতিক খুনের শিকার ২৬২ জন। এক হিসেবে দেখা যায় সারা দেশে প্রতিদিনই খুন হচ্ছেন ১২ জন। তবে গত দুই মাসে এই খুনের সংখ্যা প্রতিদিন ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ২০১২ সালে প্রতিদিন গড়ে খুনের সংখ্যা ছিল ১১। পুলিশ সদর দফতরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সারা দেশে ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে ৭৮৮টি। ছিনতাই হয়েছে ৩৭৪টি। এগুলোর সবকটিই থানায় ডায়েরিভুক্ত কিংবা মামলা হয়েছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক ঘটনায় ভুক্তভোগীরা উল্টো পুলিশি হয়রানির ভয়ে থানায় যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আবার অজ্ঞাত মৃতদেহ, রহস্যজনক মৃত্যু অথবা পারিবারিক কলহের ঘটনায় যেসব লাশ উদ্ধার করা হয়, পুলিশ এগুলোকে অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মামলা নথিভুক্ত করে। ফলে ওইসব ঘটনায় হত্যা মামলা না হওয়ায় খুনের প্রকৃত পরিসংখ্যান পুলিশের তালিকায় উল্লেখ থাকে না।
গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, রাজধানীতে প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। তবে এসব ঘটনার মধ্যে গড়ে ১০টি ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের কয়েকটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, খুন, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মামলার আসামিরা জেল থেকে বেরিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেয়ে রাজনৈতিক মামলার আসামিদের গ্রেফতারে ব্যস্ত থাকছে বেশি। সম্প্রতি রাজনৈতিক কর্মসূচি রাজপথে বন্ধ থাকলেও পুলিশকে তা পাহারায় থাকতে হচ্ছে। এ কারণে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সময় দিতে পারছে না পুলিশ। দুর্বৃত্তরা এখন নানা কৌশলে ডাকাতি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটাচ্ছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার জানান, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করা যাবে না। প্রতিটি অপরাধের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত হচ্ছে, আসামিও গ্রেফতার হচ্ছে।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান জানান, উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। বেশিরভাগ খুনের ঘটনার নেপথ্যে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক কিংবা পারিবারিক কোন্দল। এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।