দেশের ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখছে গার্মেন্ট শিল্প। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা দুই কোটির কম নয়। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের সিংহভাগ অর্জিত হচ্ছে এ খাত থেকে। নারীর মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে গার্মেন্ট খাতের অবদান অনিস্বীকার্য। এ শিল্পের অস্থিতিশীলতার পরিণাম যে কারণে সহজেই অনুমেয়। গার্মেন্টের অস্থিতিশীলতা মালিক ও শ্রমিক, সরকার সবার জন্য অকাম্য হলেও তা কিছুতেই এড়ানো যাচ্ছে না। বর্তমান সরকার দেশের অর্থনীতির স্বার্থে গার্মেন্ট শিল্পে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় এনেছে। এ সরকারের আমলে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ১৬০০ থেকে ৫৩০০ টাকা করা হয়েছে। গত ৫ বছরে টাকার দাম মোটামুটিভাবে স্থিতিশীল থাকলেও শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিম্নতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের ক্ষেত্রে মালিকপক্ষের আপত্তি থাকলেও তারাও শেষ পর্যন্ত তা মেনে নিয়েছে। গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকদের ঘোষিত মজুরি বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে কম হলেও দেশীয় বিবেচনায় তা খুব একটা কম নয়। গড়পরতা অন্যান্য শিল্পের চেয়েও এ মজুরি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের। তারপরও নানা অজুহাতে গার্মেন্ট শিল্পে অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠছে। বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পকে স্তব্ধ করতে যে পুতুল নাচের ইতিকথা চলছে তার নর্তক-নর্তকী হয়ে ভূমিকা পালন করছে কেউ কেউ। রাজনৈতিক কারণেও এ শিল্পে অস্থিতিশীলতা উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের পক্ষ থেকে যেমন উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, তেমনি শ্রমিক নেতারাও বলেছেন, গার্মেন্টের অস্থিতিশীলতা তাদের কাম্য নয়। শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে তারা সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মালিকপক্ষ মজুরি বাড়ানোর পরও যারা অসন্তোষ সৃষ্টিতে উসকানি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিলে তাতে তাদের আপত্তি থাকবে না। আমরা এ সমঝোতাকে আশাজাগানিয়া বলে অভিহিত করতে চাই। আমাদের বিশ্বাস মালিক, শ্রমিক ও সরকার যৌথভাবে বিভেদকামীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে গার্মেন্টে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।