আগামী ৪ নভেম্বর থেকে বিএনপির তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির সিদ্ধান্তে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রায় ২১ লাখ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা শুরু হওয়ার সময়েই হরতাল আর অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের অনিরাপদ পরিবেশ নিয়ে ব্যাপক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবক, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ।
এদিকে গত তিন দিনের হরতাল কর্মসূচির কারণে 'ও' লেভেলের শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে একটি বছর কেড়ে নিয়েছে দলটির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পরীক্ষার্থীদের হরতালের আওতামুক্ত রাখার ঘোষণা দিলেও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট বোর্ড এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয়। আগামী ৪ নভেম্বর থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দুটি পরীক্ষাই পড়ছে বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির দিনে। ফলে দেশজুড়ে বোমাবাজি, ককটেল নিক্ষেপ আর গোলাগুলির মতো বিচ্ছিন্ন ঘটনায় অনিরাপত্তার পরিবেশে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পরীক্ষা। কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকমহল।
জানা গেছে, এবার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা প্রায় ২১ লাখের মতো শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষা উপলক্ষে আগামী ৩ নভেম্বর রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। অবরোধের প্রথম দিনেই জেএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। জেডিসিতে থাকছে কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ পরীক্ষা। তিন দিনের মধ্যে এই দুটি পরীক্ষারই দ্বিতীয়টিও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। জেএসসিতে অনুষ্ঠিত হবে বাংলা দ্বিতীয়পত্র। অন্যদিকে জেডিসি নেবে আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা।
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, অবরোধের প্রশ্নে তারা কোনো ছাড় দেবেন না বলেই শীর্ষ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সারা দেশ অচল করে দেওয়া হবে, ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, এতগুলো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা কোনো রাজনৈতিক দলের আদর্শ হতে পারে না। প্রতি বছরই বিএনপি ও জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে পরীক্ষায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা সব দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের সন্তান। তারা শুধু আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সন্তান নয়। এটা বিএনপি ও জামায়াতের ভাবতে হবে। বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের বৈঠকের মাধ্যমে অবরোধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে অবরোধ শিথিল করার বিষয়টি ম্যাডামের সঙ্গে আলোচনা করে জানানো হবে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসলিমা বেগম বলেন, অবরোধের সিদ্ধান্তের কথা আমরা খবরের কাগজে জেনেছি। তবে পরিস্থিতি বুঝেই শিক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।