হরতাল-অবরোধের রাজনীতি খেটে খাওয়া মানুষের সমূহ-সর্বনাশ ডেকে আনছে। দিনমজুরদের জন্য তা সবচেয়ে প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি করছে। নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায় দিনের পর দিন কাজ না থাকায় তাদের জন্য অনাহার-অর্ধাহার নিশ্চিত হয়ে উঠেছে। কে রাজা হবেন, আর কার ফাঁসি হবে তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা না থাকলেও ঘটনার প্রত্যক্ষ শিকারে পরিণত হচ্ছে হতদরিদ্র এসব মানুষ। রাজধানীতে কামলা, হাটের দিনমজুর, ঠেলাগাড়ি চালক, বাস ও রেলস্টেশনের কুলি-মজুর এবং হকাররা হরতাল-অবরোধের রাজনীতিতে সর্বস্বান্ত হতে চলেছে। ক্ষমতা যারা অাঁকড়ে ধরে আছেন এবং যারা ক্ষমতায় যেতে চান যে কোনো মূল্যে, তাদের র্যাট রেসের সাথে-পাছেও নেই এসব শ্রমজীবী মানুষ। ক্ষমতার লড়াইয়ের রথী-মহারথীদের জন্য খেটে খাওয়া মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইদানীং নিম্নআয়ের মানুষ হরতাল-অবরোধের প্রধান টার্গেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের লক্ষ্য করেই পেট্রলবোমা ছোড়া হচ্ছে, জ্যান্ত মানুষকেই পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের কর্মজীবী মানুষের মধ্যে। হরতাল-অবরোধ কিংবা বিক্ষোভে অভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীতে। রাজনৈতিক কর্মসূচি মানেই হামলা, ভাঙচুর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বোমা-ককটেল, গুলিবর্ষণের ঘটনা। কোনো কর্মসূচিকে আলাদা করে ভাবতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। বিক্ষোভ মিছিল হলেও তারা ককটেল-বোমার বিস্ফোরণ দেখতে পান। চলে পুলিশের ধাওয়া, গুলি, গ্রেফতার অভিযান। এসব কারণে হরতালেও বাইরে বেরুতে চায় না মানুষ, অবরোধেও বাসায় থাকা নিরাপদ ভাবে। পেটের দায়ে যারা বাইরে বেরুচ্ছে তাদেরই বিপদে পড়তে হচ্ছে। যারা ছোটখাটো চাকরি করেন তাদের বিপদও কম নয়। কর্মস্থলে যাওয়া-আসার সময় সিএনজি কিংবা রিকশা ভাড়া দিতে গিয়ে তাদের পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। আগুনে কিংবা ককটেলের আঘাতে মরা কিংবা আহত হওয়ার ভয় তো আছেই। বলা যায়, খেটে খাওয়া সব মানুষ জিম্মি হয়ে আছে অপরাজনীতির কাছে। যার অবসান হওয়া দরকার।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।