তিন দফা পিছিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গতকাল শেষ হয়েছে। বিরোধী দলের অবরোধ না থাকায় এটি সম্ভব হয়েছে। লাখ লাখ শিশু পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের প্রতি আমাদের রাজনীতিকদের ওই দয়া অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শেষ হলেও বিদ্যালয় পর্যায়ের বিভিন্ন শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা কবে শেষ হবে তা এখনো অনিশ্চিত। হরতাল ও অবরোধের কারণে বার বার পরীক্ষার সময়সূচি পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছুটির দিনেও হরতাল-অবরোধ চাপিয়ে দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে কিছুতেই রেহাই পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে রাজধানী ও শহরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার সংকট প্রথম থেকেই প্রকট। দুনিয়ার সব জাতি তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যত্নবান হলেও আত্দস্বার্থে নিমগ্ন আমাদের রাজনীতিকদের মধ্যে সে উপলব্ধি কতটা রয়েছে তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। 'সবার উপরে ক্ষমতা সত্য' এই নীতিবাক্যকে অনুসরণ করে তারা সাংঘর্ষিক রাজনীতি জাতির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে তেলেসমাতি ও তার বিপরীতে আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারাকে নিজেদের কৃতিত্ব বলে ভাবছেন। ছোটদের শিক্ষাজীবনকে পুড়িয়ে 'ভস্মীভূত' করারও প্রয়াস চালাচ্ছেন সমঝোতার বদলে সংঘাতের বিষমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে। যে কারণে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার শিকার হলেও সরকার ও বিরোধী দল কেউই সেদিকে নজর দিচ্ছে না। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ শেষ হতে চললেও দেশের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা অসমাপ্ত রয়ে গেছে। সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে চলতি বছর বার্ষিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কিনা তা একটি প্রশ্নের বিষয়। অতীতে কখনো কোনো রাজনৈতিক সংকটকালে এমন কঠিন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি। আমরা এই অনভিপ্রেত ও অকাম্য পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মান্যবর নেতানেত্রীদের কৃপা প্রার্থনা করছি এবং আশা করছি ৪ কোটি শিক্ষার্থীর প্রতি তাদের কৃপা প্রদর্শিত হবে এবং পরীক্ষা সম্পন্ন করতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে। নিদেন পক্ষে ছুটির দিন অর্থাৎ শত্রু ও শনিবার সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক কর্মসূচির বাইরে রেখে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি দয়া দেখানো হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।