আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিশুরা সহিংসতার শিকার

চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার নির্দয় শিকার হচ্ছে শিশুরা। চলতি বছর শুধু সিরাজগঞ্জেই সহিংসতার বলি হয়ে মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে সাতজনই শিশু-কিশোর। একটি বিশেষ দল শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের প্রাণ হারাতে হয়। পুলিশের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মীদের সংঘর্ষে গুলি, টিয়ার গ্যাস, লাঠিচার্জে পথচারী শিশুদের হতাহতের ঘটনাও কম নয়। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অপরাধ। এ ব্যাপারে ইউনিসেফ তথা জাতিসংঘের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু 'চোরা নাহি শোনে ধর্মের কাহিনী' প্রবাদের সত্যতা প্রমাণে রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল-অবরোধে শিশুদের যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছে। তাদের হাতে ককটেল কিংবা পেট্রলবোমাও তুলে দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ভয়ে যেখানে সেখানে ককটেল ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। খেলনা কিংবা বল মনে করে সে ককটেল নাড়াচাড়া করতে গিয়ে আহত হচ্ছে শিশুরা। ইসলাম শিশু অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। যুদ্ধাবস্থায়ও যাতে নারী ও শিশুদের ওপর আঘাত হানা না হয় এমন নির্দেশই দিয়েছেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারপরও কোনো কোনো ধর্মীয় সংগঠন তাদের ঝুঁকিপূর্ণ সমাবেশ বা মিছিলে শিশুদের অংশ নিতে বাধ্য করছে। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার উদ্ভব ঘটেছে নির্বাচন নিয়ে মতানৈক্য এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে। স্বাধীনতার চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এ নিয়ে যে রক্তক্ষরণ ঘটছে তা দুর্ভাগ্যজনক। সভ্য সমাজের অংশ হিসেবে স্বাধীনতার পরপরই সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। মুক্তিযুদ্ধে হত্যা ও ধর্ষণসহ ভয়ঙ্কর ধরনের অপরাধে জড়িত ঘাতক-দালালদের বিচার না করার ব্যর্থতাও দুর্ভাগ্যজনক। সময় মতো সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ার পরিণতিতে প্রতিটি নির্বাচনের আগে স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে। যুদ্ধাপরাধীদের লালন করার নীতি ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার প্রত্যক্ষ শিকার হচ্ছে আমাদের শিশুরা। তারা শুধু হতাহতই হচ্ছে না, তাদের পড়াশোনাও হুমকির মুখে। এই অকাম্য অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। রাজনৈতিক দলগুলো সুবুদ্ধি, সুবিবেচনার দ্বারা পরিচালিত হলে বিদ্যমান সংকটের যবনিকাপাত ঘটানো সম্ভব। বৃহত্তর স্বার্থে তাদের সে দিকেই পা বাড়ানো উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.