রাজধানীর আবাসিক এলাকাগুলোর আবাসিক চেহারা হারিয়ে যাচ্ছে। এর কোনটি আবাসিক আর কোনটি বাণিজ্যিক এলাকা, তা ঠাওর করাও দায়। এমনকি ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী কিংবা উত্তরা মডেল টাউনের আবাসিক এলাকাও হারিয়ে যাচ্ছে অনিয়মের পাল্লায় পড়ে। এসব এলাকার কোনো কোনো আবাসিক ভবনের নিচতলা কারখানা কিংবা ওয়ার্কশপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দোতলা, তিনতলা ও চারতলায় বানানো হয়েছে মার্কেট। এরও উপরের তলাসমূহ ব্যবহৃত হচ্ছে আবাসিক ফ্ল্যাট হিসেবে। একই স্থানে শিল্প-বাণিজ্য-আবাসিকের সহাবস্থানে সৃষ্টি হয়েছে অস্বস্তিকর পরিবেশ। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে রাজউক থেকে আবাসিক ভবন নির্মাণের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা অনাবাসিক ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করে আসছেন। বরাদ্দের চুক্তিপত্র লঙ্ঘন করে আবাসিক প্লটে কেউ কেউ শিল্প-কারখানাও গড়ে তুলেছেন। চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে রাজউকের পক্ষ থেকে দফায় দফায় প্লট মালিকদের নোটিস এমনকি বাণিজ্যিক স্থাপনাসমূহ ভেঙে ফেলার চরমপত্রও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। রাজউকের দৌড় জানা থাকায় এসব নোটিসকে পাত্তা দেননি প্লট মালিকরা। কারণ বহু ক্ষেত্রেই এসব নোটিস দেওয়া হয় নিজেদের পকেটভারীর জন্য। ফলে আবাসিক প্লট অবৈধভাবে বাণিজ্যিক ভবন এমনকি শিল্প-কারখানা স্থাপন করেও প্রভাবশালীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্লট মালিকদের অভিনব প্রস্তাবও দিয়েছে। কাঠাপ্রতি স্থানভেদে চার থেকে আট লাখ টাকা 'রূপান্তর ফি' জমা দিয়ে বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে বৈধ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এ জন্য ৬০ দিনের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়। রাজউকের কর্মকর্তারা তদন্ত শেষে চুক্তিপত্রের চরম লঙ্ঘনকারী ১৩৯টি প্লট চিহ্নিত করেছেন। অনুমোদিত নকশা-ডিজাইন পরিবর্তন করে নির্মিত আরও প্রায় আড়াইশ ভবনের তালিকাও তৈরি করেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। নোটিস প্রদানকারী ও নোটিস গ্রহণকারীদের মধ্যে অদৃশ্য সমঝোতা গড়ে ওঠায় রাজউকের প্লট বরাদ্দের শর্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে নিয়ম ভঙ্গকারীরা। ফলে রাজধানীতে নিখাদ আবাসিক এলাকা বলে কিছুই থাকছে না রাজউকের দ্বারা গড়ে ওঠা কোনো প্রকল্পে। আবাসিক এলাকায় অফিস বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এমনকি কল-কারখানা গড়ে ওঠায় তা জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সুষ্ঠু নগরায়নের স্বার্থে এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।