যারা রাতের আকাশ দেখতে ভালবাসেন তারা তৈরী হয়ে যান,নতুন বছরের প্রথম মহাজাগতিক বৃস্টি দেখার জন্য।
যারা নিয়মিত রাতের আকাশ আকাশ পর্যবেক্ষন করেন তারা প্রতিদিন রাতে ৫-৬ টি উল্কার ছুটে চলা দেখতে পান। কিন্তু বছরের বিশেষ কিছু দিনে এই সংখ্যা হয় অনেক বেশী।
তখন প্রতি ঘন্টায় ১০-১০০ টির মতো উল্কা দেখা যায়। আবার স্থান ভেদে এই সংখ্যা অনেক বেশীও হয়।
একেই বলা হয় উল্কা বৃস্টি (meteor shower)।
আজ রাতে ৩-০১-১৩ এবং আগামীকাল ৪-০১-১৩ এই দুইদিনের দিবাগত রাতে নতুন বছরের প্রথম উল্কা বৃস্টি দেখতে পাবেন (তবে আজ রাতে হলো এই উল্কা বৃস্টির সর্বচ্চ মাত্রা)।
তবে এই মাত্রা আমাদের দেশ থেকেও যে দেখা যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই)।
এর নাম কোয়াড্রানটিডস (Quadrantids) উল্কা বৃস্টি। প্রতি বছর জানুয়ারী ৩/৪ তারিখে বুটিস (Bootes) মন্ডলে এই উল্কা বৃস্টি দেখা যায়।
কিন্তু এটা বুটিস মন্ডলে দেখা গেলেও এই মন্ডলের সাথে এর কোন সর্ম্পক নেই।
এই বুটিস মন্ডলের পাশে কোয়াড্রানটিডস্ নামের একটি তারা মন্ডল ছিল যা এখন আর পৃথিবী থেকে দেখ যায় না। কিন্তু উল্কা গুলো এই বুটিস মন্ডলের কাছ থেকেই ছুটে বের হয়।
যার ফলে অনেকে মনে করেন এই উল্কা পাত বুটিস মন্ডলের ।
১৮৩০ সালে Adolphe Quetelet ব্রাসেলস মানমন্দির থেকে এই উল্কা বৃস্টি আবিস্কার করেন।
এবং খুব শীঘ্রই ইউরোপ, আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই উল্কাপাত পর্যবেক্ষন করেন। পরবর্তীতে এই উল্কা বৃস্টির নামকরন করা হয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী Muralis এর নামে।
এই উল্কা গুলো বেশ বড় এবং উজ্জল এর মধ্যে কিছু উল্কা এতটাই উজ্জল যে এগুলো ছুটে চলে যাবার পড়ে আকাশে অনেকক্ষন এর আলোর রেশ থেকে যায়।
এই উল্কা পিন্ড গুলো সেকেন্ডে ২৫.৫ মাইল বেগে বায়ু মন্ডলে প্রবেশ করে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে এই বছর আকাশে অর্ধচঁন্দ্র (gibbous) থাকার ফলে ছোট আকারের উল্কাগুলো দেখা যাবে না ।
যদি তারা বলছেন এই বার প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৩০ টির মত উল্কা দেখা যাবে(অবশ্য স্হানভেদে কম বেশী হতে পারে) বড় আকারের উল্কগুলো শহরে বসেই দেখ যাবে।
তবে একদম অন্ধকার স্থান থেকে বড় এবং উজ্জল উল্কা গুলোকে অসম্ভব সুন্দর দেখা যায়।
যদি এই মহাজাগতিক বৃস্টি দেখতে চান তাহলে আপনাকে যা করতে হবে তা হলো শীতের কাপড় পড়ে মাথায় একটি ক্যাপ পড়ে নিবেন।
এই বার উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে বসে পড়ুন এমন স্থানে বসবেন যাতে করে এই দিকটা খালি থাকে।
এই বার খুব ভাল করে লক্ষ্য রাখুন দেখবেন আকাশের একটি নির্দিস্ট স্থান থেকে উল্কা গুলো ছুটে আসছে।
এই স্থানকে বলা হয় বিকিরন কেন্র্স ( Radiant Point )।
দেখুন এই উল্কা বৃস্টি বেশ মজা পাবেন। আর যারা পর্যবেক্ষনের জন্য দেখবেন,তারা প্রতি ঘন্টা অনুযায়ী কয়টি উল্কাপাত হয় তারা হিসাব রাখতে পারেন সেই সাথে এর মধ্যে বড় এবং উজ্জল উল্কা কয়টি এই ইত্যাদি।
প্রথম ছবি এবং ম্যাপ গুগল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।