অব্যাহত হরতাল আর অবরোধের ফাঁদে পড়ে উৎপাদন ও পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় ভেঙে পড়ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রান্তিক পর্যায়ের চাষিরা। একদিকে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। ফলে দিনের পর দিন রাস্তায় আটকে থাকা ট্রাকে পচে নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টন ফলমূল, শাকসবজি। এ ছাড়া ফসলের মাঠেও নষ্ট হচ্ছে টনকে টন মৌসুমি শস্য। নিয়মিত কাজে যেতে পারছেন না দিনমজুর। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হতে চলেছেন। মহাজন বা এনজিওর ঋণের বোঝা বাড়ছে। হাত-পা গুটিয়ে সময় কাটাতে হচ্ছে মাসের পর মাস। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ভয়াবহ পরিণতির শিকার হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান, ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, সাম্প্রতিক সময়ে কৃষকের আয় কমেছে। মজুরি কমেছে দিনমজুরের। উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ছে ব্যাপকভাবে। ফলে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। সংস্থাটির তথ্য মতে, খাদ্যে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরের কাছাকাছি। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক। এর প্রভাব পড়ছে সর্বস্তরের মানুষের ওপর। বিশেষ করে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে চরমভাবে। বিবিএসের তথ্য মতে, ডিসেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। নভেম্বরে মূল্যস্ফীতির এ হার ছিল ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব মূল্যস্ফীতিতে পড়ছে। হরতাল-অবরোধ থাকলে গ্রাম থেকে যেমন ঢাকায় খাদ্য আসা ব্যাহত হচ্ছে-তেমনি খাদ্যবহিভর্ূত পণ্য দেশের প্রান্তিক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পেঁৗছতে পারে না। এর প্রভাব মূল্যস্ফীতিতে পড়ে বলে মনে করে বিবিএস। সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ফলে খাদ্যসূচকে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ শতাংশ। নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৫৫ ভাগ।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত মনে করেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বন্ধ না হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে দেশের বিনিয়োগসহ সার্বিক অর্থনীতি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।