উচ্চ শিক্ষার প্রসার ঘটাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। শুরুতে এ সিদ্ধান্ত আশাজাগানিয়া হয়ে দেখা দেয়। খুলে যায় হাজার হাজার শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষার দ্বার। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাহাত্দ্য হারিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি ধারণ করেছে। আলু, পিয়াজ, সিমেন্ট, বালুর ব্যবসার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও এখন এক ব্যবসার নাম। বলা হয় এ ব্যবসায় অনায়াসে বিনিয়োগের কয়েক গুণ টাকা উঠে আসে। যে কারণে যখন যারা ক্ষমতায় আসছে, তারা তাদের দলভুক্ত লোকদের পাইয়ে দিতে একের পর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'লাইসেন্স' দিচ্ছেন। আর এ 'লাইসেন্সের' বদৌলতে দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। বিঘি্নত হচ্ছে শিক্ষার মান। বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার বদলে মূলত সার্টিফিকেট ব্যবসাই চলছে। তাদের ব্যবসায়ীসুলভ মনোভাবে প্রতিশ্রুতিশীল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বিঘি্নত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতিবাচক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষাকে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতি চলছে তা বন্ধে ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়নের সুপারিশও করেছেন তারা। সন্দেহ নেই দেশে উচ্চ শিক্ষার দ্বার অবারিত করার ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত বিশিষ্ট ভূমিকা রেখেছে। এ ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখতে এ সম্পর্কিত সব আইন-কানুনের যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। যথেচ্ছভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রবণতা রোধ করতে হবে। প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ঠিক মতো চলছে কি-না নজর রাখতে হবে। মানসম্মত উচ্চ শিক্ষা জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি। মানহীন উচ্চ শিক্ষা তার বৈপরীত্য বাস্তবতাই নিশ্চিত করে। যে কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে যে নৈরাজ্য চলছে তার অবসান ঘটাতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে দায়বোধ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।