আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেন আত্দহননের চেষ্টা

টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের ২০ জন সদস্য কর্তৃপক্ষের কথিত নির্যাতনের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর ধরনের প্রতিবাদ জানিয়ে এখন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ঠিকমতো খেতে না দেওয়া ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে এসব কিশোর ব্লেড জাতীয় অস্ত্র দিয়ে নিজেদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। আত্দহননমূলক এ অপচেষ্টায় কিশোরদের শরীরে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং আঘাত উপশমে ২০ জনকেই সেলাই দিতে হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের সদস্যদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়। তাদের মতে, এক কিশোরের কফ সিরাপ খাওয়া নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এ জন্য ভর্ৎসনার শিকার সংশ্লিষ্ট কিশোর এবং তার সহযোগীরা জানালার কাচ বা টিউব লাইটের ভাঙা কাচ দিয়ে নিজেদের শরীর ক্ষতবিক্ষত করে। টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থানকারী কিশোরদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। মূলত এটি একটি কিশোর সংশোধন কেন্দ্র। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত হলেও বয়স বিবেচনায় যারা শিশু-কিশোর তাদের কারাগারের বদলে এখানে পাঠানো হয়। হারিয়ে যাওয়ার পর পুলিশের হাতে উদ্ধার পাওয়া এবং নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানো কিশোরদেরও ঠাঁই হয় এই কেন্দ্রে। এখানে অবস্থানরত কিশোরদের রক্ষণাবেক্ষণের সব দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং এ জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে তা মিটানো হয়। কেন্দ্রের কিশোরদের ওপর নজর রাখার জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীও রয়েছে। তারপরও কেন্দ্রের ২০ জন কিশোর এত চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে আত্দহননের অপচেষ্টা চালাতে পারে তা একটি বিবেচ্য বিষয়। ধারালো অস্ত্র বা ভাঙা কাচ দিয়ে তারা যেভাবে আত্দহননের চেষ্টা চালিয়েছে তাতে প্রাণহানির আশঙ্কাও ছিল। কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে কিশোরকে রাখা হয়, তারা যাতে অপরাধ প্রবণতা থেকে নিজেদের সরিয়ে আনতে উদ্বুদ্ধ হয়। কিন্তু এসব কেন্দ্রের পরিবেশ অপরাধপ্রবণ কিশোরদের সংশোধনের বদলে আরও উগ্র হতে অবদান রাখছে কিনা ২০ কিশোরের ভয়ঙ্কর কাণ্ড সে সংশয় সৃষ্টি করেছে। আমরা মনে করি, গত মঙ্গলবার রাতের ঘটনা সম্পর্কে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত। কিশোরদের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখাই শুধু নয়, কেন তারা এমন ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ নিল সে বিষয়টিও উদঘাটিত হওয়া দরকার। শিশু-কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা থেকে ফেরানোর প্রকৃষ্ট পথ হলো তাদের ভালোবাসার ডোরে আবদ্ধ করা। সমাজ বা চারদিকের পরিবেশ তার প্রতি যে বৈরী নয়, এটি প্রমাণ করা। হুমকি-ধমকি-ভয় দেখিয়ে তাদের মনোজগতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। যেসব কিশোর এসব কেন্দ্রে ঠাঁই পায় তারা আমাদের কারও না কারও সন্তান। তাদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের প্রতি যত্নবান হওয়া আমাদের সবারই দায়িত্ব হওয়া উচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.