আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুসুম ভরা বসন্তে-২

ঢাকা শহরের অলিতে-গলিতে ফুটে রয়েছে অজস্র ফুল। কিন্তু সেসব ফুলের ছবি তোলাও কম ঝকমারি নয়। কখনো বা হৈ হৈ করে তেড়ে আসছে দারোয়ান, কখনো পুলিশ। সাধারণ মানুষ তেড়ে না এলেও মাঝে মাঝে বাঁকা মন্তব্য করতে ছাড়ছে না। হয়তো গভীর মনোযোগে ছবি তুলছি, কেউ একজন পাশে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘ভাই কী করেন?’গেল মনোযোগ ছিন্ন হয়ে!
পরশু দিন ছবি তুলছিলাম কাকরাইলের এক ব্যাঙ্কের আঙিনা থেকে।

ভালোই ভালোই তুলেও ফেললাম। সেখান থেকে সরে গিয়ে
এক সরকারি ভবনের আঙিনা থেকে ছবি তোলার সময় বাঁধল বিপত্তি। পাশের সেই ব্যাঙ্কের এক দারোয়ান এসে বলল, ‘স্যার কী করেন?’
‘ছবি তুলছি। ’ তার দিকে না তাকিয়েই আমার জবাব।
‘কেন তুলছেন?’ দারোয়ানের পাল্টা প্রশ্ন।


বুদ্ধুটাকে কে বোঝাবে কেন ছবি তুলছি!
মেজাজ সপ্তমে চড়িয়ে হাঁদাটা পাল্টা প্রশ্ন করল, ‘কীসের ছবি তুলছেন। ’
বিরক্ত গলায় জবাবটা দিলাম। কিন্তু ব্যাটার মধ্যে সরে পড়ার কোনো লক্ষণ দেখলাম না। উল্টো প্রশ্ন করল, ‘আপনাকে দেখলাম আমাদের ব্যাঙ্কের সামনে থেকে ছবি তুলতে, কেন?’
কী জবাব দেব? ঠাণ্ডা মাথায় বোঝাবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু ব্যাটা কিছুতেই বুঝতে চায় না। কেউ ফুলের ছবি তুলতে পারে, সে কথা সে বোঝার আইল দিয়েও গেল না।

পাল্টা প্রশ্ন করল, ‘আমাদের ব্যাঙ্কে সুন্দর কোনো জিনিস নেই যে ছবি তুলবেন। ’
মেজাজ আর ঠিক রাখতে পারলাম না। কাউন্টার অ্যাটাকের পথ ধরলাম। উল্টো প্রশ্নবাণে জর্জরিত করলাম বুদ্ধুটাকে। ব্যাটার তখন ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা’-- সুড়সুড় করে কেটে পড়ল।


আজ পড়েছিলাম এক পুলিশের পাল্লায়। তুলছিলাম এক বাড়ির পাঁচিল ডিঙিয়ে রাস্তায় ঝুঁকে পড়া মালতি ও রাধাচূড়ার ছবি। তখনই পেছন থেকে হাঁক, ‘এই যে, শোনেন। ’ ন্যূনতম বিনয় বা ভদ্রতার লেশ নেই ব্যাটার চেহারায়। ‘কী করছেন?’
‘ফুলের ছবি তুলছি।

’ জবাবে বললাম।
‘জানেন এটা কার বাসা?’
ফুটপাথে হেলেপড়া ফুলের ছবি তুলতে গেলেও যদি জানতে হয় এটা কার বাসা, তো আমার ছবি তোলার সাধ নির্বাসনে দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না দেখি! ছোট্ট করে জবাব দিলাম, ‘না-তো?’
পুলিশের চেহারা দেখে তখন মনে হলো, না-জানাটাই আমার অপরাধ। চেহারায় আমাকে বেকায়দায় ফেলতে পারার বিজয়চিহ্ন অঙ্কন করে বলল, ‘বিচারপতির বাসা। ’
পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা জেনেও বললাম, ‘বিচারপতির বাসা বলে কি ফুলের ছবি তোলাও নিষেধ?’
‘এখানে সব হারাম। ’ বাহাদুরী কণ্ঠে জবাব দিল পুলিশ।


পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে নিজের চেহারায় পরশুদিনের পশ্চাদ্ধাবনরনত দারোয়ানের প্রতিবিম্ব এঁকে সেখান থেকে কেটে পড়লাম।

যত ঝক্কিই পোহাতে হোক, লোকে যতই পাগল ঠাওরাক আমাকে , গাছ-ফুলের ছবি আমি তুলবই।

ষোল--অপরাজিতা

সতেরো--অজ্ঞাত

আঠারো--মালতিলতা/বাগান বিলাস

উনিশ--অজ্ঞাত

বিশ--অজ্ঞাত

একুশ--কামিনি

বাইশ--গাঁদা

তেইশ--নাগেশ্বর

চব্বিশ--নাগলিঙ্গম

পঁচিশ--রঙ্গণ

ছাব্বিশ--অজ্ঞাত

সাতাশ--জিনিয়া (সম্ভবত)

আঠাশ--অজ্ঞাত

ঊনত্রিশ--অজ্ঞাত

ত্রিশ--অজ্ঞাত

সোর্স: http://www.sachalayatan.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।