আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হঠাৎ জাতীয় পার্টির মহাসচিব বদলের নেপথ্যে

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের বিশ্বস্ত মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের বাদ পড়া নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে তুমুল আলোচনা হচ্ছে। আকস্মিক এ বিদায়ের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না হাওলাদার। তবে এ ব্যাপারে গতকাল টেলিফোনে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্যদিকে নতুন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, পার্টির চেয়ারম্যানের দেওয়া দায়িত্ব পুরোপুরিভাবে পালন করবেন। এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেছেন, পার্টিতে বিভক্তি নেই তা প্রমাণের জন্যই বাবলুকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে দুই মাস ধরে দল-উপদল নিয়ে চলছে কোন্দল। সরকারের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়েও নেতারা আছেন বিভক্তিতে। বিভিন্ন মহল থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতির ওপরও রয়েছে নানামুখী চাপ। সব কিছু কাটিয়ে উঠতে কৌশলী ভূমিকা নিয়েছেন এরশাদ। কারণ জিয়াউদ্দিন বাবলু সব সময় এরশাদের বিশ্বাসভাজন ছিলেন।

গত ডিসেম্বর থেকে এ সম্পর্কে কিছুটা ফাটল ধরে। রওশন এরশাদকে নিয়ে নির্বাচনমুখী অবস্থানে ছিলেন বাবলু। অন্যদিকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এরশাদের পক্ষে ছিলেন হাওলাদার। মাঝে এরশাদের নির্বাচনবিরোধী অবস্থান হাওলাদারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। তারপরও তিনি এরশাদকে ছাড়েননি।

এখন আকস্মিক বিদায়ের কারণও হাওলাদার অনুধাবন করতে পারছেন না। ধারণা করা হচ্ছে, সরকারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার অংকে নতুন মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। দায়িত্ব নেওয়ার পর জিয়াউদ্দিন বাবলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে ভালো করে জানেন। কারও চাপে নয়, দলের চেয়ারম্যান মনে করেছেন, তাই আমাকে গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারা অনুযায়ী মহাসচিব পদে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, নতুন মহাসচিবের এ দায়িত্ব পালন অনেক কঠিন হবে।

তারপরও তৃণমূল পর্যায়ে পার্টিকে শক্তিশালী করব। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদের সহায়তায় দলকে ক্ষমতার কাছাকাছি নিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, সংসদীয় সরকারে বিরোধী দল ছায়া সরকার হলেও ২৪ বছর ধরে সংসদে কার্যকরী বিরোধী দল ছিল অনুপস্থিত। এই প্রথম সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে সংসদে কার্যকরী বিরোধী দল হিসেবে উপস্থিত থাকছে। সামনের দিনে সংসদে জাতীয় পার্টি আরও গঠনমূলক সমালোচনা করে সরকারকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে।

এদিকে বরিশাল অফিস জানায়, দলীয় মহাসচিবের পদ থেকে সাবেক মন্ত্রী আলহাজ এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে এবং তাকে পুনর্বহালের দাবিতে বরিশালের বাকেরগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে জাতীয় পার্টি। গতকাল বিকালে পৌর শহরের সাহেবগঞ্জের পল্লী ভবন চত্বর থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাওলাদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন মানিক হাওলাদার, বশির আহমেদ সবুজ, মজিবর রহমান, বিপ্লব মিত্র, শহিদুল ইসলাম, নুরুজ্জামান, স্বপন গাজী প্রমুখ।
দলে বিভক্তি নেই বোঝাতেই পরিবর্তন : এরশাদ
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমার ও রওশনের মধ্যে কোনো বিভক্তি নেই। দলের নেতা-কর্মীদের এ বার্তা পৌঁছে দিতেই পার্টির মহাসচিব পদে পরিবর্তন এনেছি।

গতকাল বারিধারার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি। এরশাদ বলেন, আমার ও রওশনের মধ্যে দূরত্ব আছে বলে জনগণ ও দলের নেতা-কর্মীরা মনে করেন। নতুন মহাসচিব নিয়োগের ফলে এ ধারণা দূর হবে। এখন সবাই মনে করবে আমরা এক। তিনি বলেন, মনে হয় এ সরকার পাঁচ বছরই থাকবে।

তাই পার্টিকে সংগঠিত করা দরকার। এজন্য তরুণ নেতৃত্ব দরকার। জিয়াউদ্দিন বাবলু পাশে থাকলে আমরা আরও ভালো করব। সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, রুহুল আমিন হাওলাদার ১৪ বছর দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। দলে তার অনেক অবদান।

এ মুহূর্তে দলে নতুন মুখের প্রয়োজন। কারও চাপে পড়ে মহাসচিব পদে পরিবর্তন আনার কথাও নাকচ করেন এরশাদ। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে জিয়াউদ্দিন আমেদ বাবলুকে দলটির নতুন মহাসচিব নিয়োগ দেন তিনি।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.