বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এক হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু বার্ষিক আয় ছিল ১ হাজার ৪৪ ডলার। সামাজিক নিরাপত্তা খাতসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে ভালো করছে। তারই ইতিবাচক ফল হলো মাথাপিছু আয়ের এ উন্নতি। মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে উন্নতি হলেও স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসতে বাংলাদেশের আরও কিছু সময় লাগবে। ২০১২ সালে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসার সময় মাথাপিছু আয়সীমা ছিল ১ হাজার ১৯০ ডলার। সে টার্গেট অনুযায়ী ২০১৪ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ১৪৬ ডলার বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের কপাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের তকমা ছুড়ে ফেলা সম্ভব হতো। ২০১৫ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা অতিক্রমে মাথাপিছু আয়ের সীমা আরও কয়েকশ ডলার বৃদ্ধি পাবে। ফলে এ সময়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের সীমা অতিক্রম করে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা সত্যিকার অর্থে কম। মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত হতে বাংলাদেশ এক কঠিন লড়াইয়ে লিপ্ত। সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষের সাফল্যও ব্যাপক। কিন্তু সংঘাতপূর্ণ রাজনীতি, রাজপথের সহিংসতা, যানজট ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কে উন্নীত করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সংশয় থাকায় বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে। স্মর্তব্য, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে জাতিসংঘ নির্ধারিত মাথাপিছু গড় আয়ের সীমা অতিক্রম করতে হয়। জাতিসংঘ প্রতি তিন বছর অন্তর এই সীমা নির্ধারণ করে। ২০১২ সালে নির্ধারিত সীমায় স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে গড় আয় অন্তত ১ হাজার ১৯০ ডলার হওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। ২০১৫ সাল নাগাদ এ সীমায় আরও কয়েকশ ডলার সংযোজিত হবে। ২০১৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের সীমা অতিক্রম করতে না পারলে পরের বছরে আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি গত কয়েক বছর ধরে ছয় শতাংশের ওপরে। বিশ্ব মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশে উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এ আশাবাদ কতটা পূরণ হবে তা নির্ভর করছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর। এ ক্ষেত্রে সাফল্য চাইলে দশম সংসদ নির্বাচনে সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিয়ে যে সংশয় দানা বেঁধে উঠেছে তার অবসান ঘটাতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।