আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অরণ্যে রোদন

. . . . . দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, জীবন বদলে যাবে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই এমন, যারা কোন কিছু না জেনে না বুঝে চিলের পিছে দৌড়ায়। কিছু মানুষ তাদের স্বার্থের জন্য এদের ব্যবহার করে দেশের ও দশের ক্ষতি করছে। শুধু কি তাই, যারা এদের পিছে ছুটছে, তারা এবং তাদের পরিবার আরও বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এরা কেউই জঙ্গি বা দেশদ্রোহী বা নাস্তিক নয়। কিন্তু কিছু কিছু মানুষদের অন্ধ অনুসরণের ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি।

আর আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, সমস্যার কারণ নিয়ে কথা না বলে, সমস্যা নিয়ে কথা বলি, তবে তা সমাধানের জন্য নয়, বরং প্রতিশোধ নেবার জন্য। আর সেইটাকে বিষয় করে নতুন কোন সমস্যা সৃষ্টি করি। এবং অবশ্যই সেটা আমাদের বিপরীত দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে। নিজেদের ত্রুটি এর দিকে কোন খেয়াল এ নাই। নিজেরা যা করছি তা সবার মঙ্গল এর জন্য এবং সেটাই শতভাগ ঠিক।

অন্যদের বেলায় তা মধ্যযুগীও বর্বরতা, ফ্যাসিবাদী, জঙ্গিবাদি, ধর্মদ্রোহী, দেশদ্রোহী, গণহত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, আরও কতও কি! কেবল আমি এবং আমার অনুসারীরাই ঠিক বাকি সবাই ভুল এবং অপরাধী। আর এই ভাবে কতিপয় মানুষের কারণে আমাদের এই বিশাল জনগোষ্ঠী আজ বিভক্ত হবার পথে, দেশ আজ জঙ্গিবাদের পথে, মানুষ আজ অসহায়ের মতো মরছে। কোন বিচার তো দুরের কথা সহানুভুতিও পাচ্ছে না। মানুষের মৃত্যু আমাদের কাছে এখন কিছু সংখ্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সপ্নেও চিন্তা করতে পারি না আজ কোন অঘটন ঘটবে না বা খুন-খারাপি হবে না।

যারা মরছে আরা আসলেই জানে না কেন লড়ছে-মরছে, এই লড়াই এর ফলে কি হবে। দুঃখের বিষয় এইযে যাদের হাতে আজ আমাদের বইঠা, যারা আমাদের কাণ্ডারি তারা আমাদের হ্যমিলনের বাঁশিওয়ালার মতো নিয়ে যাচ্ছে ভুল পথে শুধু মাত্র তাদের ক্ষমতা আর অর্থের লোভে। আত্মসমালোচনা ভুল করেও করি না, বিবেকের কাছে আজ কেই দায়বদ্ধ নই, নৈতিকতার উল্টো পথে সবাই দৌড় পাল্লা দিয়েছি, নির্লজ্জের সর্বনিম্ন স্থানে পৌঁছে গেছি। আইন কানুন তো রুপকথার গল্পে ঠাই নেবার মতো অবস্থা হয়ে গেছে। বিচার মানেই তাল গাছ আমার।

কে কার থেকে বেশী হিংস্র, কে কার থেকে বেশী রক্তের খেলায় মাটিকে রাঙ্গাতে পারি, কে কার থেকে বেশী ভয়ংকর হতে পারি সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছি। আমার বন্ধু তানভির এর "আমি এদেরকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতেছি না। সেই অধিকার আমার নাই। এর জন্য রাষ্ট্র দায়ী। I feel Sorry for Them. But they need a proper guideline. তাদের মত মানুষ আমাদের দেশে অভাব নাই।

কোন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান ছাড়াই সমর্থন করে কিছু বিবেকান্ধ মানুষ। " এই কথার সাথে সম্পূর্ণ একমত। এদের সত্যি সঠিক নির্দেশনা দরকার। যদি এই ধরনের মানুষ না থাকত তবে এরা এইভাবে আমাদের বোকা বানিয়ে রাজ করতে পারত না। আমাদের দেশের যে অবস্থা দিন দিন ভয়াবহ থেকে ভয়াবহতর হয়ে উঠছে।

যতই রক্ত ঝরাই না কেন, যতই পত্রিকা বন্ধ করি না কেন, যতই পুলিশ দিয়ে পিটাই অথবা পুলিশ কে পিটাই না কেন, যতই গুলি চালাই আর বন্দি করি না কেন, যতই আলোচনা পর্যালোচনা আর আইন করি না কেন কোন লাভ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজেকে সঠিক অবস্থানে আনবো। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একটাই পথ আছে, বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে মানুষের কথা ভেবে গঠন মূলক আলোচনার বাস্তবিক প্রয়োগ। আর সমস্যা না খুঁজে সমস্যা সৃষ্টির কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। আর এর সিংহভাগ এবং অগ্রগামী ভুমিকা রাষ্ট্র তথা ক্ষমতাসীনদেরই পালন করতে হবে। আইন থেকে কোন লাভ নাই যদি না আইনের সঠিক প্রয়োগ না করি।

সেটা না করে সারা জীবন সমস্যার পিছে ছুটে কোন লাভ নাই, এতো আরও সমস্যা বাড়বেই। সবাই জানি সত্য কি আর এর সমাধান কি, তবুও করছি না শুধু মাত্র নিজেদের স্বার্থে আঘাত হানে বলে!! সাধারন মানুষের প্রতি আবেদন যা করছি তা বিবেককে প্রশ্ন করে করি। আর কারো পিছনে অন্ধের মতো না ছুটে যুক্তি এবং নৈতিক দিক বিচার করে কাজ করি। একটা কথা মনে রাখবেন আপনি যাকে মারছেন হয়তো তাকে আপনি চেনেন না, তার সাথে ব্যক্তিগত কোন শত্রুতাও নাই। একটু গভীরে জানলে হয়তো দেখবেন তার আদর্শের সাথে আপনার ১৯-২০ হবে, এর বেশী নয়।

কাউকে মারার আগে ভাবুন তো কার জন্য মারছেন? তাকে মারলে আপনি কি পাবেন? বা দেশের বা দশের কি উপকার হবে? নাকি যে সমস্যার জন্য লড়ছেন তার সমাধান হবে? আজ হয়তো আপনি মারছেন, যাকে মারছেন তার চিৎকার আপনার মনুষ্যত্বকে জাগাতে পারছে না, কাল হয়তো আপনিও এই পরিস্থিতির শিকার হয়ে মরবেন। আর সেই মরণ আপনার হবে না। মানুষ হয়ে না মরে মরবেন কোন জঙ্গি, লীগ, জামাত, শিবির, বি এন পি বা অন্য কোন কিছু হয়ে। মরে গিয়ে হয়তো বেঁচে যাবেন এই দুনিয়ার অত্যাচার থেকে, কিন্তু আপনার কাছের মানুষ, পরিবারর আপনাকে হারানোর যন্ত্রণায় দিন কাটাবে। বেঁচে থাকলেও আতংকে থাকবেন কবে যে কি হয়! সহানুভুতি তো পাবেনই না বরং আপনাকে নিয়ে হবে আরও জটিলতা সৃষ্টি।

আপনাকে কেউ ধর্ম বা দেশের জন্য শহীদ বলবে, আর কেউ নাস্তিক বা জঙ্গি বলবে। যদি সত্যি ভালো কিছু চান তবে অন্ধত্ব এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসুন। বর্জন করুন সেই সমস্ত মানুষদের যারা আমাদের ভুল পথে পরিচালিত করছে। হয়তো ভাবছেন আপনি একা বদলে কি করবেন? আপনি বদলে যান দেখবেন পাশে আপনার মতো শত শত মানুষ আছে। আর আমরা যদি ওদের বর্জন করি তাহলেই ওদের খেলা শেষ।

ধর্ম ও দেশ কে ভালবাসুন, তবে অন্ধভাবে নয়, জেনে বুঝে। নিজেকে জানুন। আর মানুষের কল্যাণে কাজ করুন। মানুষ এর জন্যই ধর্ম আর দেশে। সেই মানুষকে মূল্যায়ন না করে ভালো কিছু করা কখনোই সম্ভব নয়।

অন্যকে না বদলানোর চেষ্টা করে আগে নিজে বদলাই। সবাই যদি নিজ অবস্থানে থেকে সঠিক কাজ করি তবে সব কিছুই সপ্নের মতো হয়ে যাবে। অন্ধত্ব বর্জন করুন, সুদিন আসবেই . . . . . . . যদি আমরা চাই . . . . . . . . ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।