আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অরণ্যে রোদন

অরুন, বরুন আর অভয় এর গল্প শোনাবো আজকে। এদের বাড়ি ছিল একই গ্রামে এবং পাশাপাশি। অভয় এর বাড়ির ডানে ছিল অরুনের আর বামে ছিল বরুনের বাড়ি। তবে অরুন-বরুনের মধ্যে আবার সম্পর্ক ভাল ছিল না, যদিও তারা পিসতুতো ভাই ছিল। অভয় এর সাথে আবার ওদের দু'জনেরই ভাল খাতির ছিল।

এদিকে আবার দু'একদিন পর পরই অরুন-বরুনের ঝগড়া লাগত। আর যেহেতু দু'জনের বাড়ির মাঝখানে ছিল অভয় এর বাড়ি, তাই ঝগড়াগুলো সবসময় অভয় এর বাড়িতেই হত। এ নিয়ে অভয় চরম বিরক্তও ছিল। কিন্তু সম্পর্কের খাতিরে ওদের দু'জনের কাউকেই কিছু বলতো না। কারণ, অরুন-বরুন দু'ই ই ছিল এলাকায় যথেষ্ঠ প্রভাবশালী।

এভাবে একদিন অরুন-বরুনের মধ্যে ঝগড়া চলছে, যথারীতি ঝগড়ার ভেন্যু অভয়ের বাড়ি। ঝগড়া থেকে একপর্যায়ে হাতাহাতি, তারপর শুরু হল তুমুল মারামারি। অরুন নিয়ে আসল বিশাল গদা, আর বরুন নিল রাম দা। এদিকে বেচারা অভয় অনেক ক্ষণ ধরে এ গন্ডগোল ঠেকানোর চেষ্টা করে চলছে। দু'জনের হাতেই ভয়ানক অস্ত্র দেখেও অভয় একটুও ঘাবড়ালো না, বরং দুই প্রতিবেশিকে এই ভয়ানক মারামারি থেকে নিরস্ত করার জন্য সে অবিরত চেষ্টা করতে থাকল।

কিন্ত বিধি বাম। তাদের এ কলহ তো থামলই না, আরো মনে হয় দ্বিগুন বেগে চলতে থাকল। এবার এক পর্যায়ে এসে বরুনের রামদার এক আঘাত লাগল বেচারা অভয়ের মাথায়। রক্তক্ষরণে দুই এক মিনিটের মধ্যেই প্রাণ হারালো অভয়। অরুন-বরুন তো এই এলাকার আদি বাসিন্দা, আবার ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী।

কিন্তু অভয়ের পরিবার তো এই পরিমাণ স্বচ্ছলতা নেই যে, অরুন-বরুনদের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস দেখাবে। আর দুনিয়া সবসময় শক্তের ভক্ত আর নরমের জম। তাই অভয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর তো এখন আর কেউ নেই। কি আর করা--ভিটে মাটি ছেড়ে অভয়ের স্ত্রী-আর ছোট মেয়েটি চোখের জলে সিক্ত হয়ে পারি জমালো এক অজানার পথে-যেদিকে দু’চোখ যায়। বর্তমান বাংলাদেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত যারা—তারা কি দয়া করে একবার ভেবে দেখবেনঃ আমার দেশ আবার অভয়ের বাড়িতে পরিণত না হয়।

দিল্লী আর উলফার রণক্ষেত্র যেন আমার রাজধানী ঢাকা না হয়। এখন হয়তোবা বলবেন, শুরু হল ভারত জুজুর ভয় দেখানো। কিন্তু যে ভয়ংকর তার কাছ থেকে কি সাবধান থাকাই ভাল না? নিজের দেশের নিরাপত্তার খাতিরে বহু দেশেরই নিজস্ব কিছু রাষ্ট্রীয় পলিসি নিতে হয়। আর এটা ইনটেলিজেন্সি সংস্থার মাধ্যমেই করা হয়ে থাকে। কিন্তু এসব কারণে গোয়েন্দা বাহিনীর সাবেক প্রধানসহ এর উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় এনে নিজের দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই কি হুমকির সম্মুখিন করা হচ্ছে না?(হ্যা, আমি দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার ব্যাপারেই বলছি।

) আসলেই আমরা সবই পারি। পেটের দায়ে নিজের হৃদপিন্ডও বিকিয়ে দিতে পারি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।