আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“সমুদ্রসীমা নির্ধারণ আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে বাংলাদেশের সমুদ্র জয়”- অসম্ভাব্য, অপ্রত্যাশিত, অকল্পনীয়কে বাস্তবে রূপ দিয়েছে বর্তমান সরকার তথা সরকারের সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষ, যা যুগে যুগে আগামী প্রজন্মের কাছে ইতিহাস হয়ে থাকবে।

আমি একজন ছাএ দীর্ঘদিন অমীমাংসিত থাকার পর আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নিয়ে যে বিরোধ চলছিল তা নিষ্পত্তি হয়েছে। মিয়ানমারের দাবি অনুযায়ী বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ১৩০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে আটকে যাওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে মিয়ানমারের সাথে দীর্ঘদিন আলাপ-আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয়। দীর্ঘদিন বিচার বিশ্লেষণের পর জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক আদালত থেকে চূড়ান্ত রায় দেয়া হয়। এই রায় অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা হিসেবে ২০০ নটিক্যাল মাইল ছাড়িয়ে মহিসোপানের বাইরে স্বার্বভৌম কর্তৃত্ব পেলো।

এতে করে এই বিশাল এলাকায় সমুদ্রে অবস্থিত যাবতীয় মূল্যবান সম্পদ আহরণে বাংলাদেশের আর কোনো বাধা রইলো না। বঙ্গোপসাগরের তলদেশে যে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, বিশেষ করে তেল ও গ্যাস আহরণের ক্ষেত্রে বারবার ভারত ও মিয়ানমারের পক্ষ থেকে যে বাধা আসছিল তা কেটে গেল। এখন থেকে বঙ্গোপসাগরের ভেতরে অতিরিক্ত ১ লাখ ১১ বর্গকিলোমিটার এলাকার কর্তৃত্ব এখন বাংলাদেশের হাতে। এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করারও সুযোগ নেই। অর্থাৎ এই রায়ই চূড়ান্ত।

মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তি হওয়ায় ভারতের সাথে যে অমীমাংসিত সমুদ্রসীমা রয়েছে তা এই পথ অনুসরণ করেই নিষ্পত্তি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ভারত চেয়েছিল সমুদ্রসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরাজয় ঘটুক। অর্থাৎ মিয়ানমারের দাবি অনুযায়ী রায় হলে তা ভারতের জন্য ভালো হতো। আর সে লক্ষ্যে ভারত মিয়ানমারকে আইনি সহায়তাও দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো ষড়যন্ত্রই ধোপে টিকেনি।

বাংলাদেশ ন্যায্যতাও সমতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে নিজস্ব অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছে। মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি হওয়ায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয়ের সাথে সাথে অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হওয়ায় বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে যে সম্পদ রয়েছে সেগুলো এখন বাংলাদেশের অধিকারে চলে এসেছে। ২০০ নটিক্যাল মাইল ছাড়িয়ে মহিসোপানের বাইরের এলাকা পর্যন্ত সমুদ্র তলদেশের মহামূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়াও মৎস্য আহরণের ক্ষেত্রে এখন আর কেউ বাধার সৃষ্টি করতে পারবে না। এই রায়ের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক ও পথ চলা আরো সহজ হবে বলে আমরা মনে করি।

অসম্ভব্য, অপ্রত্যাশিত, অকল্পনীয়কে বাস্তবে রূপ দিয়েছে বর্তমান সরকার তথা সরকারের সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষ, যা যুগে যুগে আগামী প্রজন্মের কাছে ইতিহাস হয়ে থাকবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.