আকাশ ভরা গাঙচিল
কফিশপ (প্রথম পর্ব)
ধোঁয়াশার শিরোনাম
চশমা পড়া মানুষ দেখতে আমার খুব ভাল লাগতো। ছোটবেলায় খুব ইচ্ছে ছিল চশমা পড়ার। কিন্তু চোখে তো আমার কোন সমস্যা নেই, তাহলে? এতো ছোট অবস্থায় লুকিয়ে লুকিয়ে চশমা পড়বো ভাবতেই পারতাম না। আবার যদিও ভাবনা মাথায় আসতো তবে সমস্যা হতো চশমা কেনার টাকা নিয়ে। আমার ধারনা ছিল চশমার দাম খুব বেশি।
এতো টাকা কৈ থেকে জোগাড় করবো? এই চিন্তা মাথায় আসার পর চশমা পড়ার তীব্র ইচ্ছাটা মাটি চাপা দিলাম। কেননা এতো টাকা পাওয়ার কোন সম্ভবনা ছিল না আর আমি টাকা জমাতে পারতাম না। হাতে টাকা থাকলে এটা ওটা কিনে ফেলতাম। বেশির ভাগ সময় চকলেট কিনতাম। মুখে সবসময় আমার চকলেটের ফ্লেভার থাকত।
ক্লাসে বন্ধুদের মাঝে যারা চশমা পড়তো তাদের চশমার পাওয়ার কতো তা দেখার জন্য মাঝে মাঝে তাদের চশমা পড়তাম কিন্তু অত্যধিক পাওয়ারের কারণ হেতু ১ মিনিটও চোখে রাখতে পারতাম না। মাথা ঘুরত। কি আর করা! চিরস্থায়ী চশমা পড়া আর হল না আমার।
চশমা পড়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অনেক দিন পার করার পর একসময় চোখের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেললাম। চোখের রেটিনায় তখন একটাই মুখ।
সন্ধ্যার আবছা আলো কিংবা রাতের অন্ধাকারেও সেই প্রিয় মুখের প্রতিবিম্ব যেন রেটিনায় স্পষ্ট ভাবে ফুটে ওঠে সেজন্য অন্ধকারেও রোদেলার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। খুব কড়া ভাবে তাকিয়ে দেখতে চাইতাম রোদেলার প্রতিটি সঞ্চালন। তার বসে থাকা, আড্ডা দেয়া প্রতিটি মুহূর্তের ছবি ধরে রেখেছে আমার চোখের রেটিনা। যার ফলাফল খুব ভয়াবহ। এ ভাবে চুপি চুপি তাকানো যে ভাল না তা খুব ভাল করেই বুঝেছি।
হোয়াইট বোর্ডে স্যারের লেকচার গুলোতে চোখ বুলিয়ে অনেক কষ্টে লেখা ধরার পর নোট খাতায় তুলতে গেলেই বিপত্তি। মাথা ঘুরে আর খাতা একদম সাদা। কিচ্ছু দেখি না। ধরতেই পারি না একটু আগে শেষ নোটটা কোথায় লিখেছিলাম। একটু টেনশন হলেও ডাক্তার যখন প্রেসক্রিপশনে ডান এবং বাম চোখের এসপিএইচ -১.৭৫ লিখে দিলেন তখন অসম্ভব খুশি হয়েছিলাম।
দেরি না করে দ্রুত চলে গেলাম চশমা নিতে।
চশমা পড়ে প্রথম প্রথম ক্লাসে যেতে একটু অসস্থি হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল এক্সট্রা কিছু মুখের সাথে লেগে আছে যেটা যেকোনো মুহূর্তে খুলে পড়বে। এই খুলে পড়ার ভয়ে মাথা নিচে করতাম না। সবসময় মাথা উচু করে রাখতাম।
রোদেলা আমার প্রথম চশমা পড়া দেখে চোখ যথারীতি ছোট করে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। তারপর হি হি হি করে হাসল। হাসি শেষ হলে বলল, তোমাকে অনেক গম্ভীর গম্ভীর মনে হচ্ছে। বেশ ভাল লাগছে।
রোদেলার হাসি দেখে প্রথমে রাগ হলেও ওর শেষ কথা শুনে খুব ভাল লেগেছিল।
সে দিন থেকেই চশমা আমার চোখে। রোদেলার গম্ভীর ভাললাগা নিয়ে পৃথিবী দেখি। মানুষ দেখি। রোদেলাকে দেখি।
আজ অফিসের নতুন কলিগও এই কথাই বললেন।
উনার জয়েনিং বেশ কয় দিন হল কিন্তু আজকের আগ পর্যন্ত উনার সাথে আমার কথা হয় নাই। আমি নিজেই কম কথা বলি। আর আমাকে দেখতে না কি বেশ গম্ভীর লাগে। না জানি অন্য কেউ আমার কাছে কি ব্যাবহার পান এই ভয়ে না কি ফরহাদ সাহেব এতো দিন কথা বলেন নাই। আজ বোধ হয় আমাকে গম্ভীর দেখায় নি, যে কারণে ফরহাদ সাহেব একবারেই কফির দাওয়াত দিয়ে ফেললেন।
প্রতিদিনের মতই আমি বের হচ্ছিলাম ক্যাফে মেঙ্গোতে যাওয়ার জন্য। ফরহাদ সাহেবকে ক্যাফে মেঙ্গোতে যেতে বলায় উনি রাজি হলেন। কফিবারটা উনি বেশ পছন্দ করেছেন। যাবার সময় বলে গেলেন তিনি মাঝে মাঝে আসবেন আর আমি যখনই আসব ফরহাদ সাহেবকে যেন নিয়ে আসি। তবে আমার হঠাৎ গম্ভীর হয়ে যাওয়া দেখে তিনি আর উৎসাহ দেখালেন না।
মিসেস ফরহাদ শপিং এ যাবেন তাই দেরি না করে তিনি উঠে গেলেন। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
আজ অনেক কিছু লিখতে হবে। লিখতে ইচ্ছে করছে। কোন কোন দিন এমন হয় যা লিখি তাতেই যেন সাহিত্য উঁকি দেয়।
বেশ কাব্য কাব্য জীবন হয়ে যায় সেদিন। নদীর স্থির জলের মতো কলকল শব্দে প্রবাহিত হয় কাব্যরা। তার জলে খেলা করে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাগামহীন স্বপ্ন। ঢেউ তুলতে চায় কিন্তু কলকল শব্দে খেই হারায় অসহায় স্বপ্নরা।
একটু আগে দেখলাম পাশের টেবিলে মেয়েটা বসে আছে।
বরাবরের মতই অপেক্ষায়। মেয়েটি দেখতে বেশ সুন্দর। কেন জানি না মেয়েটিকে দেখলে চম্পা ফুলের কথা মনে হয়। চম্পা ফুলের চাপা সৌন্দর্যের মতই মেয়েটি দেখতে। অনেক ভদ্র মনে হয়।
একটু কি অহংকারী? হয়তোবা। তবে মেয়েটির চোখ বেশ মায়াকাড়া। ঘুম ঘুম যেন চোখদুটো তার প্রিয়জনকে না দেখতে পাড়ার কষ্টে অনেক কেঁদে কেঁদে একটা মায়াময়তার আবেশ ধরে রেখেছে। দেখতেই ভাল লাগে। মনে হয় তাকিয়ে থাকি অনন্ত সময়।
যদিও রোদেলার চোখে তাকালে আমার বিশ্ব দেখার ইচ্ছে জাগত না।
কথা বলার সময় আমি সাধারণত কারো চোখের দিকে তাকাই না। তাকাই ঠোঁটের দিকে। তবে এই মেয়েটার দিকে যতবারই তাকিয়েছি ততবারই ওর চোখের সীমানায় ধরা পড়েছি। মেয়েটার চোখ যেন জীবিত কোন আগ্নেয়গিরি।
একবার তাকালেই সেই আগ্নেয়গিরিতে ডুবতে হয়। তাই সচরাচর ওর দিকে তাকাই না। কেমন যেন অস্বস্থি হয়। তবে এটাও সত্যি এতো দিন ধরে দেখছি তাদেরকে, মেয়েটি না তাকালেও কিংবা আমি নিজের কাজে বিজি থাকলেও ওদের উপস্থিতি টের পাই। এই তো ফরহাদ সাহেব চলে যাওয়ার কিছু সময় পরেই মেয়েটি এসে বসল।
তখন শুধু বুঝেছি সে এসেছে কিন্তু তাকাইনি। কিন্তু এবার নেটবুক থেকে চোখ তুলে তাকালাম কেননা বেশ কিছুক্ষণ হল মেয়েটা একা বসে আছে। তার বয়ফ্রেন্ড এখনো আসেনি। সাধারণত ছেলেটা এতো দেরি করে না। আজ বোধ হয় আসবে না।
হয়তো অন্য কোন মেয়ের সাথে ডেটিঙে গেছে। এটাই স্বাভাবিক। গত বেশ কয় বছর ধরেই দেখছি। হয় ছেলেরা নতুবা মেয়েরা, কেউ বসে নেই। একটার পর একটা প্রেম করেই যাছে।
এটাই না কি তাদের ভালবাসা। আমরা অনেক পুরনো। প্রেমিককে চিঠি লিখে প্রিয়তমা পুরনো পোস্ট অফিসের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষায় বসে থাকে না। এখন সব মেইলে। ওয়েব ক্যামে ভিডিও চ্যাটে আর ইয়াহু মেসেঞ্জারে সবাই চুটিয়ে প্রেম করছে।
ফেসবুকে পরিচয়, উভয়ের উভয়কে পছন্দ হলে দেখা করা তারপর এক অথবা দুই দিনের ডেট। তারপর নতুন কেউ। নতুন পছন্দের কাউকে একসেপ্ট করার জন্য ফেসবুকে বসে থাকা। প্রেম না কি এখন ওখানেই বাসা বেঁধেছে। দখিনা বাতাসে মনে শীতল ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে।
অনেক আগেও যেমন দিত, এখনো তেমন তবে সময় আর চরিত্র ভিন্ন। ভিন্ন হয়তো ভালবাসার উপলব্ধি। ভালবাসার বিশালতা। তবে মেয়েটিকে এরকম কিছু মনে হয়নি। এতদিন যাবত দেখছি সে নির্দিষ্ট একজনের জন্যই অপেক্ষা করে।
ছেলেটি বেশ স্মার্ট। আধুনিক ঘরানার পোশাক আশাক তার। আমার কেন যেন মনে হয় মেয়েটির প্রতি ছেলেটির তেমন কোন আকর্ষণ নেই। তা নাহলে মেয়েটিকে এতক্ষণ একা একা বসিয়ে রাখত না।
চমকে উঠলাম! এক ফোঁটা কি জল গরিয়ে পড়লো? আহা! টলটলে কষ্টস্নাত অশ্রু ফোঁটা কি ঐ বোকা ছেলেটার জন্য? বড় নির্বোধ এই আবেগ।
মানুষ দেখে না। লোক লজ্জা নেই। যখন তখন উপচে পড়তে চায়। এই জলের মূল্য দেয়া দরকার। কিন্তু আমি কি করতে পারি? একজন অচেনা কেউ চোখের সামনে কাঁদলে কিছু করার থাকে না।
সমবেদনা জানানো বোকামি। হয়তো বিরক্তি অথবা গায়ে পড়ে কথা বলতে এসেছি ভেবে তিরস্কৃতও হতে পারি। রোদেলা কি কখনো এভাবে আমার জন্য কেঁদেছিল?
এক্সকিউজ মি ...
পাতলা হ্যাংলা টাইপের ওয়েটার বেশ হাসি মুখে এগিয়ে এলো।
ঐ টেবিলের ম্যামকে একটা কফি দিয়ে এসো। বলবে আমি পাঠিয়েছি।
আচ্ছা, হ্যাঁ, উনি কি কফি খান জানো?
ওয়েটার একটু ভাবনায় পড়ে গেছে। ওকে আস্বস্থ্য করলাম, ঠিক আছে একটা মোকা দিয়ে এসো উনাকে। আর আমার জন্য একটা ল্যাতে।
ওয়েটার ছেলেটা চলে যাওয়ার পর ভাবনায় পড়লাম। যদি মেয়েটা অন্য কিছু বলে বসে! কিংবা কফি ফিরিয়ে দেয়! এ কাজ হয়তো করবে না তবুও আজ ওর মনে হয় মন খুব খারাপ।
যে কোন ঘটনা ঘটতে পারে। কোন অনাকঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটার আশা নিয়ে বসে আছি।
আজ সকালে প্রতিদিনের অভ্যাস বসত সিগারেট নিয়ে বেলকোনিতে দাঁড়িয়ে টানছিলাম। আজ আকশে অনেক মেঘ ছিল। বহুদিন গত হয়ে যাওয়া সময়ের শরীর জুড়েও মেঘ ছিল।
তখন কতো আপনজন ছিল। দুঃখ পেলে স্নেহ মমতায় আশ্রয় মিলত। প্রিয়জন গুলো আজ দূর আকাশের মেঘের মতো। কষ্ট জমিয়ে কালো ভেলায় ভেসে বেড়ায়। অনেক দূর থেকে ছুঁয়ে দেয় বৃষ্টির জল হয়ে।
তারপর আবার শুষ্কতা। ভয়াবহ শুন্যতা। ফুরিয়ে যাওয়া সিগারেট এর দিকে তাকিয়ে কিছু কবিতার লাইন বিক্ষোভ করে উঠল। তারাও কতো আপনজন!!! হৃদয় নিংড়ানো দুঃখ কষ্টের নির্যাস। শুধু কালি কলমের মায়ায় বেঁধে ফেলা।
এইটুকুই প্রত্যাশা তাদের।
সিগারেটের ছাই
সিগারেটের মতো ফুরিয়ে যায় প্রিয়জন। শৈশব কৈশরের শীতের কুয়াশা ঘেরা বনে স্বজনরা আপন হয়। আরো কাছাকাছি বসে থাকে স্বপ্নাতুর চোখে। ভালবেসে ঘর বাঁধে টুনটুনি পাখি।
বিচিত্র আল্পনা এঁকে কাছে আসে, দূরে যায় বিচিত্র জন্তু জানোয়ার। এই কাছে আসা যাওয়াও শেষ হয় মেঘ বৃষ্টির বিকেল বেলায়।
সুখ টানে সুখ কৈ? হৃদয় ভর্তি ছাইয়ের পাহাড়। ফুরিয়ে যায় জীবন কণা সিগারেটের শেষ টানে স্বজনহীন এই বিজন বনে।
সকালে বেল্কনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লেখা কবিতাটা পড়ছিলাম।
ওয়েটার কফি দিয়ে গেল। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখলাম কি এক ম্যাগাজিনের পাতা উলটাতে। ওয়েটার কফি নিয়ে মেয়েটির টেবিলের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। আমি মনে সংশয় নিয়ে তাকিয়ে আছি।
না বাজে কিছু ঘটেনি।
তবে মেয়েটা একটু অবাক হয়েছে। কি করবে ঠিক বুঝতে পারছে না। আমার দিকে তাকাল। চোখে জিজ্ঞাসা। একটু মনে হয় বিরক্ত।
এই অবস্থা কাটানোর কি উপায় থাকতে পারে!!! ভয় শঙ্কা ঝেড়ে ফেলে স্মিত একটু হাসলাম। মেয়েটা তবুও বিরক্ত। ভাবছি যা হয় হোক, আমি আমার লেখায় মন দেই। মাথা নিচু করে লিখছি হঠাৎ কারো উপস্থিতিতে আমার মনঃসংযোগের ব্যাঘাত ঘটল। তাকিয়ে দেখি আমার সামনে মেয়েটি কফি হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
আমিই কথা বললাম, “কফির জন্য ধন্যবাদ দিতে এসেছেন?”
“হ্যাঁ, কিছুটা কৌতুহলও বটে। হঠাৎ কফি?”
মিষ্টি একটা গলায় কথাটা শোনার পর কেমন যেন এক শূন্যতা ঘিরে ধরল আমাকে। দীর্ঘদিন যেন কেউ এভাবে কথা বলেনি আমার সাথে। মেয়েটির জিজ্ঞাসু চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, “আপনাকে অনেক বেশী স্ট্রেসড মনে হচ্ছিলো, এজন্য ভাবলাম…...”
“অচেনা সবাইকেই এভাবে কফি বিলান নাকি?”
একটু আগের মিষ্টি গলাটা কেমন যেন অচেনা লাগলো। কি বলব বুঝতে পাড়ছি না।
তবে এবার মনে হয় সত্যি কথাটা বলাই ভাল।
“না বিলাই না। প্রায় ৭/৮ মাস ধরেই তো আমাদের দেখা হচ্ছে। অচেনা কি করে বলি, বলুন? চেনা জানা হবার জন্য সবসময় নাম পরিচয় জানার দরকার হয় না”।
“আপনি কি ব্যস্ত?”
মনে হল বলি, জি ব্যস্ত।
কিন্তু মেয়েটি কেন জানতে চাইছে সেটা জানার জন্যই বললাম, কেন বলুন তো?
“আমি একা কফি খেতে পছন্দ করিনা”।
বেশ হেসেই কথাটা বলল। খেয়াল করছি একটু আগের সেই বিষণ্ণতা মেয়েটির চোখে মুখে নেই। আমার সাথে বসে কফি খেতে চাইছে। কিন্তু এভাবে কি বলে দেয়া যায়, হ্যাঁ বসতে পারেন!
মেয়েটাকে একটু ভয় দেখান যায়।
বিষণ্ণতা চোখে মেখে যতোটা না সুন্দর লাগছিল মেয়েটিকে এখন ততোটা সুন্দর লাগছে না। আমার চুপ চাপ থাকতে থাকতে মনে হয় কথা কম বলা অসুখে পেয়েছে। নিজেও কম হাসি আর অন্যের হাসি খুশি চেহারা দেখতেও ভাল লাগে না। মেয়েটিকে একটু ভয় দেখানর জন্য বললাম, “আসলে, আ’ম সরি। আমি একটু ব্যস্ত।
তাছাড়া আমি যার তার সাথে কফি খাইনা”।
একটু মনে হয় বেশিই বলে ফেলেছি। ভীষণ অবাক হয়েছে মেয়েটি। ওর ভ্যাবাচেকা মুখটা দেখে চরম হাসি পেল। হাসি থামিয়ে বললাম, “সরি সরি।
দুষ্টুমি করলাম। হাহাহা, আপনার চেহারাটা যা হয়েছে না… সরি সরি”।
খুব ঝটপট উত্তর দেয় মেয়েটি “আপনি মনে হয় জানেন না, আমি ভীষন রাগী। এখনি যদি এই গরম কফি আপনার নেটবুকের উপর ফেলতাম?”
মেয়েটির কঠিন মুখ দেখে হাসি পেল খুব “হাহাহা, আমি আপনাকে ৭ মাস ধরে দেখছি। গরম কফি ফেললে আপনি আপনার বন্ধুর মাথায় এতদিনে ঢেলে ফেলতেন”।
এবার যেন রাগ কমে গেছে মেয়েটির। মুখ থেকে কাঠিণ্যের আভা সরিয়ে শরতের রোদ খেলে গেল। মুখে হাসি নিয়ে বসতে বসতে বলল, “আমি নিশাত” ।
নিশাতের এপ্রচ দেখে মনে হল, এই ৭/৮ মাসেও আমরা কেউ কাউকে দেখিনি। যদিও আমাদের কথা হয় নি আর এটাই হয়তো অপরিচিতের সাথে কথা শুরু করার চিরাচরিত নিয়ম।
আমি এই নিয়ম একটু ভেঙ্গেই বললাম, “আমি নীরব। You treat me just like another stranger, well it’s nice to meet you”.
গভীর দৃষ্টি দিয়ে আমার চোখে তাকিয়ে বলল নিশাত, “ইগনোরেন্স?”
ঠিক কি “ইগনোর’’ এর কথা বলল নিশাত না বুঝেই বললাম, “হুমম”।
নিশাতের কথাঃ অচেনা আমি
রিকঃ ভালোবাসা কিংবা কনফিউশন
প্রচ্ছদঃ বোকা ছেলে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।