দিতে পারো একশ ফানুস এনে...আজন্ম সালজ্জ সাধ একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই...
কফিশপ - প্রথম পর্ব
নিশাতের কথাঃ অচেনা আমি
“নিশাত… নিশাত…”
চমকে বাস্তবে ফিরে এলাম। এতক্ষণ কোথায় যে ছিলাম নিজেও জানি না; তবে এই ক্লাসরুমে নিশ্চই না।
“বলো, আমি কি প্রশ্ন করেছি”।
অপমানে মুখ লাল হয়ে ওঠে আমার। আমি কিছুই শুনিনি, নার্গিস ম্যাডামের মুখ অত্যন্ত খারাপ।
সামনের ১০ মিনিটের চিন্তায় আমার হাত পা কাঁপতে থাকে।
“বসে বসে আকাশ পাতাল চিন্তা করলে কি মাইক্রোবায়লজী পাস হবে? নাকি পরীক্ষার হলে যক্ষা রোগের জীবাণুর হাত ধরে গান গাওয়ার ইচ্ছা আছে?”
সারা ক্লাস হো হো করে হেসে ওঠে। ম্যাডামের মুখে আত্মতৃপ্তির হাসি। আমি শুধু মনে মনে বলতে থাকি, “হে ধরণী দ্বিধা হও”। ধরনী দ্বিধা হবার সময় পেলো না, কারন টিং করে একটা মৃদু ঘন্টা পড়লো।
ক্লাসের সময় শেষ। ম্যাডাম খুবই বিরক্ত হলেন। আমি, সুমন আর কাজল—এই তিনজনকে কোন এক অজ্ঞাত কারণে ম্যাম দেখতে পারেন না। আমাদের অমনোযোগী পেলে একেবারে তুলোধুনো করে ছেড়ে দেন।
“আগামীকাল মাইকোব্যাকটেরিয়ামের আইটেমটা নেবো।
টার্ম এগিয়ে আসছে, এই আইটেম যারা মিস করবে তাদের কিন্তু আর নেবো না”। বিরস বদনে বলে ম্যাম ক্লাস শেষ করলেন। উফফ… একটুর জন্য বেঁচে গেছি।
“কিরে, রাত দিন রিকের চিন্তায় মগ্ন থাকলে হইবো?” সুমির টিটকারি ভেসে আসে।
“আরে ধ্যাত! আমি তো ঝিমাচ্ছিলাম।
নার্গিসের ক্লাসে সজাগ থাইকা লাভ কি?”
“হেহে, চান্দু, তোমারে আমি চিনি না! যাই হোক, বুধবার আইটেমটা ভালো করে পড়ে আসিস। ম্যাম কিন্তু তোরে টার্গেট করছে”।
কালকে কি বুধবার? আমার বুকটা ধক করে ওঠে। আমার রোল ৮৪; টিউটরিয়াল ব্যাচের শেষ রোল। ৫১ থেকে শুরু হয়ে আমার রোল পর্যন্ত আসতে আসতে নির্ঘাত আড়াইটা বাজবে।
আমি ৪টার মাঝে জাম ঠেলে কফিশপে পৌঁছাবো কি করে? রিককে কি কালকে মানা করে দেবো আসতে? নাহ, তাহলে শনিবারের আগে আর দেখা হবার কোন চান্স নেই। শুক্রবারে মহাশয় যাবেন ক্যামেরা নিয়ে ফটো শ্যুটে। কিসের কি? শুধু একগাদা মেয়ের সাথে হাহা হিহি। নিজের ক্ষুদ্র মানসিকতায় নিজেই বিবর্ণ হই।
ক্যাফে ম্যাংগোর জেনারেটরটা মনে হয় নষ্ট; গরম লাগছে ভীষন।
আজকে একটু সেজে এসেছিলাম, এখনতো মনে হয় ভূতের মত দেখাচ্ছে। সাদা রঙ রিকের ভীষন প্রিয়। কোলকাতা থেকে মামী গতবছর যে দুধসাদা কামিজটা এনেছিলো, সেটা বহুযত্মে তুলে রেখেছিলাম স্পেশাল কোন দিনের জন্য। আজকের দিনটা কেন সেই দিন হবে না? অনেকদিন পর আজকে রিক ভোর ৭টায় আমাকে ঘুম থেকে তুলেছে ফোন করে। চোখ খুলেই স্ক্রিনে অস্থির রিক দেখে ভয়ে লাফিয়ে উঠেছিলাম আমি।
কোন বিপদ না হলে রিককে সকাল ১০টার আগে বিছানা থেকে তোলা অসাধ্য একটা কাজ।
“শুভ সকাল নুশা”।
“শুভ সকাল? গুড মর্নিং কবে থেকে শুভ সকাল হলো রিক?” রিকের কি মাথা টাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকি!
ফোনের ওপাশ থেকে দুষ্টুমিভরা হাসি শুনেই আমি খেই হারিয়ে ফেললাম। এই ছেলে কি জানে যে তার হাসি আমার জন্য কতটা ক্ষতিকর!
“আজকের শুভ সকালটাকে শুভ দিন করার জন্য কি করা উচিৎ জানো?”
“উমম… না”…
“আমাদের সারাদিনের জন্য কোথাও হারিয়ে যাওয়া উচিত”।
“কোথায় হারাবো?”
“কোথাও না।
তোমার মত বোরিং মেয়ের সাথে হারাবো নাকি আমি! খেয়ে তো কাজ নাই। পুরা রাস্তা দেখা যাবে তুমি হা করে ঘুমাবা”।
ঠাশ করে কেউ যেন আমার গালে চড় মারলো; অজান্তেই চোখ ঝাপসা হয়ে আসলো আমার।
“তাও ঠিক… তাহলে তুমি হারাও। আমি ক্লাসে যাই”।
“আরে থামো থামো নুশামণি। ইশ, একটুতেই অভিমান করে অস্থির! আজকে ঠিক ৪টায় ক্যাফে ম্যাংগো। মিস করো না, তুমিই পস্তাবে। বাই সুইট… মানে বিদায় মিষ্টিহৃদয়”।
ফুঁসে ওঠা রাগটা আবার একাএকাই জল হয়ে গেলো।
আমি সত্যি নিজেকে চিনতে পারিনা যখন আমি রিকের সাথে থাকি। কিভাবে আমার ব্যক্তিত্ব এভাবে দুমড়ে মুচড়ে ভাঙ্গে রিক?
তিনবার পড়া ক্যানভাস ম্যাগাজিনটা পড়ার অভিনয় করতে করতে ঘড়ির দিকে তাকালাম। আজকে সত্যি সত্যি কান্না আসছে। ৪টায় আসার কথা, বাজে ৪টা ২৫। এই আমার সারপ্রাইজ? আজকে পরীক্ষা না দিয়ে ৪০ মিনিট ধরে সাজার এই পুরস্কার? নিজের উপর ভয়াবহ রাগ হতে থাকে।
ঠিকই আছে, যেমন কর্ম, সেরকম ফল। নিজের ভেতর থেকে কেউ একনাগাড়ে আমাকে প্রশ্ন করে চললো… কে বলেছিলো পরীক্ষা মিস দিতে?কে বলেছিলো সাজতে? সাজগোজ তো তোমার একেবারেই আসে না, রিক তো হাসাহাসিই করবে। আড্ডার শিরোমণি, আয়রন ওম্যান বলে খ্যাত নিশাতের এই কি রূপ? তোমার এই অবস্থা দেখে কে বলবে যে তুমি মুঠোফোনেই তোমার দুইটা ছোট ভাইবোন আর বাবা-মা কে সামলাও? কে বলবে যে হাত না কাঁপিয়ে তুমি ডিসেকশন রুমে হৃদপিন্ড ব্যবচ্ছেদ করো অবলীলায়? সবার কাছে তুমি আত্মসম্মানে বলীয়ান আর এই ছেলের কাছে আসলেই ছিঁচকাঁদুনে অবলা নারী?
আমি নিরুত্তর থাকি। কিন্তু আমার সত্ত্বার আজকে বাঁধ ভেঙ্গেছে…সে কিছুতেই থামছে না।
“তোমার কি মনে হয় রিক তোমাকে ভালোবাসে? ওর লাইফস্টাইল জানো না তুমি? তোমার মত মেয়ে যে ওর পিছে আরো ১০টা পড়ে আছে সে কি তোমাকে মনে করিয়ে দিতে হবে আমার?”
চোখ বেয়ে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে আমার।
পৃথিবীর যত দীনতা, ক্ষুদ্রতা আর অসহায়ত্ব সবই যেন আমার মাথায় বিশাল এক বোঝা। অস্ফুট কন্ঠে বলি, “ভালোবাসাটা আসলে কি?”
“ফালতু সেন্টিমেন্ট, যেটা কবিরা তাদের পসার বাড়ানোর জন্য সৃষ্টি করেছে”- কঠোর কন্ঠে উত্তর দেয় সে।
“প্লিজ থামো”।
“তুমি কি ভুলেছো তোমার শিকড়? বড় শহরের চাকচিক্যের কাছে বিকিয়ে দিয়েছো তোমার আত্মসম্মান আর ভুলেছো তোমার স্বকীয়তা?”
নিশ্চুপ হয়ে যাই আমি। হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে যাই রংপুরের নিজেদের ছোট্ট সেই বাসাটায়।
মার অনেক স্বপ্নের বাসা। ছাদে বহু যত্মে করা নিজের গোলাপের বাগান। দুপুরে পুকুর পাড়ে গাছের ছায়ায় বসে শীর্ষেন্দুর ধ্রুবর প্রতি অযাচিত টান, সাইকেলে করে পড়াতে যাওয়ার সময় শিমুল ভাইএর অহেতুক কথা বলা। ২১শে ফেব্রুয়ারীতে তীব্র আবেগে মুঠি বদ্ধ করে “কাঁদতে নই আমি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি” কবিতার ক্ষুব্ধ ব্যথিত স্বর অনেকদিন পর চারপাশ প্রকম্পিত করে আমার। প্রতি বছর স্কুলে আমি এই কবিতাটাই আবৃতি করতাম, অশ্রুসজল চোখে।
শুক্রবারের সন্ধ্যায় বাবার উদাত্ত কন্ঠের জীবনানন্দের কবিতা আবৃতি, আর মার হাতের নুনের পিঠা আর চা। রাস্তায় কারো সাথে দেখা হলেই বাবার গর্ব, “আমার মেয়ে ডাক্তার হবে। নিজের চিকিৎসা নিজের মেয়ের কাছেই করাবো, বুঝলেন না”। আমার ভিতরের প্রতিটি কোষ চিৎকার করে বলতে চায়, আমি সেই নিশাতই আছি। সত্যি বলছি, আমি আগের নিশাতই আছি।
ক্ষুব্ধ কন্ঠের হাসি শোনা যায়। “শোনো বোকা মেয়ে, তোমার বাবার প্রতিটি পয়সা হিসেবের পয়সা। তোমাকে প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তি করানোর জন্য তার মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে। রিকের বাবা একজন বিখ্যাত ব্যবসায়ী। দুই বছর রিক বসে থাকলেও ওর কিচ্ছু হবে না।
তোমার বাবার মত ওর বাবা সন্ধ্যায় ফিরে আবার ছাত্র পড়াতে বসেন না। কারণ উনার…”
“থামো” অজান্তেই চেঁচিয়ে উঠি আমি।
কফিশপের ভেতরে মানুষ কম, যারা আছে তারাই চমকে তাকায়। লজ্জায় আমার কান গরম হয়ে ওঠে। আড়চোখে দেখি চশমা পড়া ছেলেটা অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছে।
এখন আমার উচিত অতি দ্রুত কফিশপ থেকে বের হয়ে যাওয়া। যে ছেলে সারপ্রাইজের কথা বলে প্রায় ১ ঘন্টা দেরী করে, তার জন্য অপেক্ষায় থাকার আর কোন মানে নেই; তারপরেও পারি না যেতে। ম্যাগাজিনটার পাতা ব্যস্তভাবে উলটাই শুধু।
“ম্যাম, কফি”।
“হাহ?” অবাক হই আমি।
“আমি তো কিছু অর্ডার করিনি”।
“কফিটা ঐ স্যার পাঠিয়েছেন”।
ওয়েটারের নির্দেশ করা দিকে তাকিয়ে দেখি চশমা পড়া ছেলেটা। আমি তাকাতেই কফির মগটা তুলে একটু হাসলো। আমি কি মগটা নেবো? টেবিলের উপর ওয়েটার ট্রেটা রাখতেই মোকার চমৎকার ঘ্রাণ ভেসে এলো।
মোকা, আমার প্রিয় কফি; অদ্ভুত কাকতালীয় ঘটনা। টুং টুং শব্দ হচ্ছে; মেসেজ টোন। রিকের মেসেজ।
“সরি নুশা। বন্ধুরা ভীষনভাবে ধরেছে, কিছুতেই বের হতে পারছি না।
প্রজেক্টের কাজ শেষ হয়নি। Call u l8er”।
চোখ জ্বালা করতে থাকে আমার; এত তুচ্ছ আমি? কি অধিকার আছে রিকের আমাকে এভাবে অপমান করার? যন্ত্রের মত কফির মগটা হাতে নিয়ে চুমুক দেই আমি। চোখ বন্ধ করে বুক ভরে শ্বাস নেই, প্রিয় মাকসুদ স্যারের লেকচার মনে পড়ে। “শ্বাস প্রশ্বাস যে শুধু আমাদের জীবন বাঁচায়, তাই নয়, জীবনের জটিলতাও দূর করতে সাহায্য করে”।
ভীষন রকম ইচ্ছে হতে থাকে রিককে আঘাত করতে; আমার অনুভূতিটা কোনভাবে ওকে দেয়া যায় না?
অবাক হয়ে লক্ষ্য করি আমি মগ হাতে চশমাআলার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার কি মাথা খারাপ হয়েছে? আমি তো এ ধরনের মেয়ে না, আমি…আমি…
“কফির জন্য ধন্যবাদ দিতে এসেছেন?” গম্ভীর গলা, রিকের সম্পূর্ন বিপরীত। ছোট করে ছাঁটা খাড়া চুল, কালো ফ্রেমের চশমা।
“হ্যাঁ, কিছুটা কৌতুহলও বটে। হঠাৎ কফি?”
“আপনাকে অনেক বেশী স্ট্রেসড মনে হচ্ছিলো, এজন্য ভাবলাম…”
“অচেনা সবাইকেই এভাবে কফি বিলান নাকি?” একটু কড়া শোনালো কি আমার কন্ঠ? ছেলেটা একটু অফ হয়ে গেলো মনে হচ্ছে।
“না বিলাই না। প্রায় ৭/৮ মাস ধরেই তো আমাদের দেখা হচ্ছে। অচেনা কি করে বলি, বলুন? চেনা জানা হবার জন্য সবসময় নাম পরিচয় জানার দরকার হয় না”।
“আপনি কি ব্যস্ত?” আমার সত্ত্বা আমাকে বাধা দেয়, অপরিচিত কাকে কি বলছো নিশাত!
“কেন বলুন তো?”
“আমি একা কফি খেতে পছন্দ করিনা”।
“আসলে, আ’ম সরি।
আমি একটু ব্যস্ত। তাছাড়া আমি যার তার সাথে কফি খাইনা”।
এতটা অপ্রস্তুত কখনো হইনি। কি বলবো কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। কফির মগটা রেখে দেবো? অট্টহাসি শুনে আমি আরো থতমত খেয়ে গেলাম; আজকে এসব কি হচ্ছে?
“সরি সরি।
দুষ্টুমি করলাম। হাহাহা, আপনার চেহারাটা যা হয়েছে না… সরি সরি”।
“আপনি মনে হয় জানেন না, আমি ভীষন রাগী। এখনি যদি এই গরম কফি আপনার নেটবুকের উপর ফেলতাম?” মুখ যতদূর সম্ভব কঠিন করে বললাম আমি।
“হাহাহা, আমি আপনাকে ৭ মাস ধরে দেখছি।
গরম কফি ফেললে আপনি আপনার বন্ধুর মাথায় এতদিনে ঢেলে ফেলতেন”।
এবারে আমি হেসে ফেললাম। “আমি নিশাত” টুলটা টানতে টানতে বললাম।
“আমি নীরব। You treat me just like another stranger, well it’s nice to meet you”.
সরাসরি নীরবের চোখের দিকে তাকালাম; গানটা চিনতে পেরেছি আমি।
“ইগনোরেন্স?”
“হুমম”, একটু সামনে ঝুঁকলো নীরব, চোখে অবিশ্বাসের দৃষ্টি।
টেবিলের পাশে রাখা সাইড ব্যাগটা নজরে পড়লো আমার; সাধারনত অফিসগামীরাই এধরনের ব্যাগ ব্যবহার করে। তার মানে বয়সে না হলেও আমার থেকে সে তিন-চার বছরের বড়। আমার কি ভাইয়া ডাকা উচিত না? বোকার মত চুপ করে বসে আছি। আমি তো আর বন্ধু আফরিনের মত স্মার্ট নই…এজাতীয় পরিস্থিতিতে কি করতে হয় কি বলতে হয় কিছুই মাথায় আসছে না।
আলগা স্মার্টনেস দেখিয়ে কফিটা নেবার জন্য নিজের উপর অসম্ভব রাগ হতে থাকে। যতই নিজের আধুনিকতা প্রমাণের চেষ্টা করিনা কেন, মফস্বলের সেই সংস্কার থেকে বের হতে কষ্ট হয়। আমি যেন কোথাও নেই; কোথাও আমার গ্রহণযোগ্যতা নেই। নিজের দুর্বলতা আর ক্ষুদ্রতায় ইচ্ছে করে মাটির সাথে মিশে যেতে। কিছু করার না পেয়ে কফিতে চুমুক দিতেই গরম কফিতে জিহবা পুড়িয়ে একাকার।
নীরব অথবা নীরব ভাইয়া চোখে মৃদু হাসি নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমার মনে হলো যেন সে আমাকে বিদ্রুপ করছে। ভয়ানক ক্লান্তিকর আর অস্বস্তিকর কিছু মুহূর্ত কাটানোর পর নীরব নিজেই নিস্তব্ধতা ভাঙ্গলো।
“তোমাকে তুমি করেই বলি, কি বলো? মেডিকেলে পড়ো বোধ হয়?”
কফির ধাক্কা এখনো সামলাতে পারিনি। “কি করে বুঝলেন?”
মৃদু হেসে নীরব আমার ব্যাগের দিকে ইঙ্গিত করলো।
স্ট্রাপে বড় করে আমার কলেজের নাম লেখা।
“আচ্ছা আপনি কি এখানে কারো জন্য অপেক্ষা করেন?” আচমকা প্রশ্ন করে বসলাম আমি।
নীরব একটু চমকে গেলো। অদ্ভুত একটা দৃষ্টি দিয়ে হঠাৎ করেই যেন ব্যস্ত হয়ে গেলো কফির মগটা নিয়ে। আমার ভিতরের সব সংশয়, দ্বিধা এক লহমায় মিলিয়ে গেলো।
আমি এই দৃষ্টিকে জানি… শূন্যতা আর ক্লান্তিকর এই দৃষ্টির দীর্ঘশ্বাস মেশানো ছায়া আমাকে রাতের পর রাত জাগিয়ে রেখেছে অনেকদিন। এ আমারই মত কেউ, আমারই মত একজন।
রিকের কথাঃভালোবাসা কিংবা কনফিউশন - রিয়েল ডেমোন
নীরবের কথাঃধোঁয়াশার শিরোনাম - নীরব০০৯
কফিশপ-তৃতীয় পর্ব ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।