আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রার্থীরা দিচ্ছেন মাদক সেবনের টাকা

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাদকে সয়লাব হয়ে উঠেছে রূপগঞ্জ। আসন্ন নির্বাচনে মাদকসেবীদের টাকা যোগান দিচ্ছে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাদক কেনার হাটগুলোকে ভিড় করছে মাদকাসক্তরা। প্রতিদিন মাদকসেবীদের মাতলামিতে বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন অতিষ্ঠ। এই ফাঁকে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন মাদক বিক্রেতারা।

ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, বাংলা মদসহ মাদকদ্রব্য রূপগঞ্জে এখন সহজলভ্য। রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পাওয়া গেছে, চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছে মাদক সেবনকারীরা চেয়েছেন সাড়ে তিন লাখ টাকা। বিনিময়ে তার নির্বাচন করবেন বিনা পয়সায়। আসন্ন নির্বাচনে রূপগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে।

আর ওই ইউনিয়নগুলোতে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে প্রকাশ্যে। এমন অনেক মাদকাসক্তও হয়েছেন মেম্বার-চেয়ারম্যান প্রার্থী। প্রতিদিন নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে মাদক সেবন করছেন। ভুলতা, গোলাকান্দাইল, মুড়াপাড়া, কায়েতপাড়া, ভোলাব ইউনিয়নগুলো ঘুরে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। এ পাচঁটি ইউনিয়নে ১০/১২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও শতাধিক মেম্বার প্রার্থী প্রতিদিন নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে মদ না খেলেই হয় না।

তাদের কর্মী বাহিনী নিয়ে প্রতিদিন রাতে প্রার্থীদের বিভিন্ন কর্মীর বাড়িতে বসাচ্ছে মদের আসর। এখানে বাংলা মদের পাশাপাশি বিদেশী মদও সেবন করছে তারা। মাদক বিক্রেতারা স্পটগুলোতে নিজ দায়িত্বে মাদক সরবরাহ করছে। বিকাল হলেই প্রার্থীদের তরুণ কর্মী বাহিনী প্রকাশ্যে ফেনসিডিল সেবন শুরু করে। অনেককে ইয়াবা খেয়ে রাতে মাতলামি করতে দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুলতা ইউনিয়নের বলাইখা গ্রামের ফজর আলীর ছেলে খোকন, মর্তুজাবাদের জয়নাল, পাচাঁইখা গ্রামের সেলিম, উপজেলা সদর এলাকার বজলুর রহমান, কবির, কায়েতপাড়ার ফেন্সি সম্রাট মিজু, আবুল, আলেয়া, নুরুনী, আবদুল্লাহ, জজ মিয়াসহ শতাধিক মাদক বিক্রেতা এসব স্পটগুলোতে কর্মী বাহিনীর কাছে মাদক সরবরাহ করছে। ভুলতা এলাকার এক চেয়ারম্যান প্রার্থী ও এক মেম্বার প্রার্থী গণসংযোগ শেষে ভায়েলা এলাকার এক নেতার বাড়িতে বসান মাদকের আসর। একই এলাকার চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান ভুঁইয়ার কাছে ভুলতা এলাকার স্বীকৃতপ্রাপ্ত মাদকসেবীরা নির্বাচন করার শর্তে সাড়ে ৩ লাখ টাকা চেয়েছেন মাদকের বিল। প্রতিদিন তারা রাতে মাদক সেবন করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন বলে শর্ত দিয়েছেন। মুড়াপাড়া এলাকার এক চেয়ারম্যান ও ৪ জন মেম্বার প্রার্থী প্রতিদিন গভীর রাতে গণসংযোগ শেষে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় বাড়ি ফিরছেন বলে জানান এলাকাবাসী।

গোলাকান্দাইল এলাকার চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও মাদকাসক্তদের টাকা দিতে দিতে পেরেশান। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক চেয়ারম্যান প্রার্থী জানান, অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে প্রতিদিন মাদক সেবনের জন্য দিতে হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা। ওই এলাকার একাধিক মেম্বার প্রার্থীরা প্রতিদিন ফেনসিডিল ও ইয়াবা সেবনের জন্য টাকা দিচ্ছেন তাদের সমর্থিত তরুণ কর্মী বাহিনীকে। কায়েতপাড়া ইউনিয়নে মাদকসেবী কর্মী বাহিনীকে টাকা দিতে পেরেশান হচ্ছেন প্রার্থীরা। গণসংযোগ শেষে এক হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ টাকা দিতে হচ্ছে মাদক সেবনের জন্য।

ফলে রূপগঞ্জের ইউপি নির্বাচনী এলাকাগুলোতে তরুণ ও বয়স্ক মাদকাসক্তরা প্রার্থীদের কাছ থেকে মাদকের জন্য দেদার নিচ্ছেন টাকা। একদিন টাকা না দিলেই পরদিন অন্যজনের সমর্থক হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন প্রার্থীরা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.