আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এলিজাবেথ টেলর-৩

all in one
'ক্লিওপেট্রা' এখনো হলিউডের স্মৃতিতে অম্লান। ডাহা ফ্লপ এ ছবিটি প্রায় দেউলিয়া বানিয়ে দিয়েছিল টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্সের মতো 'দৈত্য' প্রতিষ্ঠানকে। দুই পরিচালক ও দুই দেশের দুই স্টুডিওতে শুটিং-রিশুটিং করতে লেগেছিল আড়াই বছর। বাজেট ২০ লাখ ডলার থেকে বাড়তে বাড়তে দাঁড়াল অবিশ্বাস্য এবং সে সময়ের প্রেক্ষাপটে অকল্পনীয় চার কোটি ৪০ লাখ ডলারে এবং সর্বোপরি এ ছবির কল্যাণে দুটি বড় ধরনের তালাকও দেখেছে হলিউড। ছবির দুই তারকা এলিজাবেথ টেলর ও রিচার্ড বার্টনের তালাক।

তবে প্রাপ্তিও বড়। হলিউডের গোল্ডেন কাপল টেলর-বার্টনের প্রেম ও বিয়ের সূত্রপাত এ ছবির মধ্য দিয়েই। প্রথম পরিচালক রুবেন ম্যামোলিয়ান সরে দাঁড়ালে পরিচালনার দায়িত্ব নেন জোসেফ এল ম্যানকিয়েউকজ। দায়িত্ব নিয়ে তিনি প্রথমেই অ্যান্টনি ও সিজার চরিত্রের দুই অভিনেতা স্টিফেন বয়েড ও পিটার ফিঞ্চকে সরিয়ে আনলেন বার্টন ও রেঙ্ হ্যারিসনকে এবং নাম ভূমিকায় সে সময়ের হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নিলেন টেলরকে। ছবির শুটিং যখন শুরু হয়, লিজ টেইলরের বয়স তখন ২৯ এবং চতুর্থ স্বামী এডি ফিশার বর্তমান।

তত দিনে 'ঘর ভাঙা বিশেষজ্ঞ'র খেতাব জুটে গেছে লিজের কপালে। অন্যদিকে ৩৬ বছর বয়সী বার্টনের তখনো রমণীমোহন খেতাব জোটেনি। স্ত্রী সিবিল বার্টনের সঙ্গে মোটামুটি সুখেরই সংসার তাঁর। যদিও এক বছর আগেই এক পার্টিতে টেলর ও বার্টনের পরিচয় ঘটেছিল এবং তখনই বার্টন টেইলরের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু টেলর তাঁকে বিশেষ পাত্তা দেননি।

কিন্তু রোমে ছবির শুটিংয়ে অসুস্থ টেইলরের বিছানার পাশে থাকা বার্টন ধীরে ধীরে জয় করে নেন তাঁর মন। ১৯৬২ সালের শুরুর দিকে এ দুই তারকার প্রেম 'লা স্ক্যানডেল' দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ব মিডিয়ায়। পর্দার অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রাকে দুজনে পর্দার বাইরে নিয়ে আসেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরা সর্বক্ষণ খুঁজতে থাকে এ দুজনকে। আগুনে আরো ঘি পড়ে যখন এডি ফিশার তল্পিতল্পা গুছিয়ে স্ত্রী লিজকে ছেড়ে রোম ত্যাগ করেন।

কিন্তু প্রেমে মগ্ন লিজ ও ডিক (বার্টনের ডাকনাম) এতটাই নিজেদের মধ্যে বিলীন হয়েছিলেন যে তা তাঁদের মাথায়ই আসেনি। একে অপরের ট্রেইলারে এতটাই ব্যস্ত থাকতেন যে শুটিংয়ের সময়ও তাঁরা মিস করতেন। এমনকি তাঁদের বেলেল্লাপনার খবর চলে আসে ভ্যাটিকানের দৈনিকে। জর্জিয়ার এক কংগ্রেসম্যান অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে প্রস্তাব রাখেন দেশের নাম ডোবানোর জন্য এই জুটিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের। দুই তারকার তালাক তখন সময়ের ব্যাপার।

পরিচালক ম্যানকিয়েউকজ এক নোটে লিখেছিলেন, যদি কেউ এ ধরনের এপিক নির্মাণ করতে চান তবে এমন প্রেম তৈরি করুন। কিন্তু তখনো বিতর্কের বাকি ছিল, ব্যয়বহুল সেই ছবির প্রিমিয়ারে অনুপস্থিত ছিলেন টেলর। কারণ নির্দয় মিডিয়ার হাতে আর লজ্জিত হতে চাননি তিনি। ছবি মুক্তির পর ১৯৬৪ সালে টেলর বার্টনকে স্বামী নাম্বার পাঁচ বানিয়ে ফেলেন। ছবি তো শেষ হলো কিন্তু লিজ-ডিক কাহিনীর শুরু এখানেই।

জুটিবদ্ধ হয়ে তাঁরা আরো করেছেন ১০টি ছবি। তাঁদের বিয়ে টিকেছিল পুরো এক দশক। নারীপ্রীতি নয়, বার্টনের মদপ্রীতির কারণেই তালাকের সিদ্ধান্ত নেন লিজ। তা ছাড়া একের পর এক ফ্লপ ছবিও তাঁকে কিছুটা ভ্রষ্ট করে দিচ্ছিল। কিন্তু তালাকের পর দুজনেই দুজনের প্রেম বুঝতে পারেন এবং '৭৫ সালে আবারও বিয়ে করেন তাঁরা।

কিন্তু এক বছরের মাথায় আবারও বিচ্ছেদ। এরপর আর তাঁরা এক হননি। কিন্তু তাঁদের মনের টান যে অটুট ছিল এর প্রমাণ দিয়েছেন লিজ নিজেই। এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'যদি আবার কখনো বিয়ে করতাম তবে সে বার্টনই হতো, অন্য কেউ নয়। ' মারা যাওয়ার পর লিজ সঙ্গে করে কবরে নিয়ে গেছেন বার্টনের লেখা শেষ চিঠি।

এই চিঠিটি বার্টন লিজকে লিখেছিলেন তিনি মারা যাওয়ার আগের দিন। ২৮ বছর এ চিঠিটি বালিশের নিচে নিয়ে ঘুমিয়েছেন লিজ। চির নিদ্রায় এই চিঠির চেয়ে ভালো সঙ্গী আর কী হতে পারে লিজের কাছে? তাই ছেলেকে এ বিষয়ে আগেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন লিজ। আর চিঠির ভাষ্য? সেটা তো জানতেন শুধুই লিজ। সেরা পাঁচ হুজ অ্যাফ্রেইড অব ভার্জিনিয়া উলফ জর্জ এবং মার্থা মধ্যবয়সী দম্পতি।

তাঁদের বন্ধন হচ্ছে মানসিক বিশৃঙ্খলার শিকার দুটো নির্যাতিত সত্তার কিছু অশ্রাব্য শব্দের বিনিময়। এক সন্ধ্যায় মার্থা যুব দম্পতি নিক এবং হানিকে মদ্যপানের আমন্ত্রণ জানায়। সেখানেই নিক এবং হানি আমন্ত্রণকারী দম্পতির ব্যক্তিগত জীবন এবং তাঁদের দুঃসহ যন্ত্রণাদায়ক সম্পর্কের বেড়াজালের প্রত্যক্ষর্শীতে পরিণত হয়। এটিই হলিউডের একমাত্র ছবি যেটি অস্কারের প্রতিটি ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছিল। ন্যাশনাল ভেলভেট জায়ান্ট এ প্লেস ইন দ্য সান ক্যাট অন এ হট টিন রুফ বিস্তারিত -http://www.imdb.com/name/nm0000072/' target='_blank' > http://www.imdb.com/name/nm0000072/ wikipedia
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.