০১.
মেয়েটির নাম মিতু। ছেলেটির নাম তুহিন। মিতুদের বাসার পাশে ঐ যে নতুন একতলা দালান, ছেলেটির পরিবার সেই বাসায় ওঠেছে আজ ২ দিন হল। সন্ধায় পড়তে বসার পরই মিতু দেখল, ছেলেটি তার মা ও বড় বোনের সঙ্গে তাদের বাসায় বেড়াতে এসেছে। অল্পক্ষণ পর মায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে মিতু সেখানে গেল।
তাকে দেখেই ছেলেটির মা বলে উঠল, আপা, এটাই কি আপনার ছোট মেয়ে? মা, তুমি আমার কাছে আসো।
হ্যা, আপা, আমার এই মেয়ের নামই মিতু। আপনার ছেলে তুহিনের মতো সেও এবার ক্লাস থ্রিতে পড়ে। আপনারা চাইলে মিতুর স্কুলেই তুহিনকে ভর্তি করতে পারেন। এখান থেকে হেটে হেটেই স্কুলটিতে যাওয়া যায়।
ওমা, তাহলেত খুবই ভাল হয়। আমার তুহিন তো শহরের রাস্তাঘাট কিছুই চিনে না। স্কুল কাছে হলে আমরাও কিছুটা চিন্তামুক্ত হতে পারব। জানেন আপা, গ্রামের স্কুলে আমার ছেলে দুবারই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিল। এখানে আসার আগে তার কোন বন্ধু বলেছে, শহরের স্কুলে বছরের মাঝামাঝি গিয়ে ভর্তি হলে তোর রোল নাম্বার সবার পিছনে থাকবে।
আর এ কথা শুনে সে কিছুতেই শহরে আসতে চাচ্ছিল না।
তাই নাকি, বাবা? কিচ্ছু চিন্তা করিও না। ভর্তি হয়ে ভাল করে পড়, দেখবে এখানেও তুমি ফার্স্ট হতে পারবে। আমার মেয়েটার অবশ্য রোল নাম্বার সবসময় পিছনের দিকে থাকে। ওনার আবার দুষ্টুমিতে মনযোগ বেশী।
এসময় সবাই হঠাৎ লক্ষ্য করল, মেয়েটি তুহিনের মায়ের কোল থেকে সুতীব্র অভিমানে ও লজ্জায় গড়িয়ে মাটিতে শুয়ে কান্না শুরু করল। তার কান্নার ঘটনায় ছেলেটি এবং তার বড় বোনটি আওয়াজ করে হেসে উঠল। এ পর্যায়ে কান্না থামিয়ে মেয়েটি আক্রোশ নিয়ে ছেলেটির দিকে ফিরে বলল- এই ছেলে, গাঁইয়ার মত হাঁসছিস কেন?
লজ্জায় বিমূঢ় ছেলেটি তৎক্ষণাৎ হাসি খেয়ে ফেলা ছাড়া কোন প্রত্যুত্তর দিতে পারল না। গ্রাম থেকে এসেছে সেজন্য নাকি অমার্জিত ভাবে হেসে অপমান করার জন্য মেয়েটি শুধু তাকেই গাঁইয়া বলেছে, মেয়েটির কান্নাদ্র চোখে ড্যাব ড্যাব করে ছেলেটি তা ভাবতে লাগল।
চল মা, বাসায় যাই বলে ছেলেটি তখন মাযের শাড়ির আঁচল ধরে ঝুলোঝুলি করতে লাগল।
মেয়েটি তারপর জয়ী হওয়ার ভাব নিয়ে পাশ্ববর্তী পড়ার রুমে গমন করল।
পরদিন টিফিন পিরিয়ডে মেয়েটি যখন স্কুলমাঠে খেলতে বের হল, তখন মাঠের পাশের কাঠলিচুঁ গাছের তলায় ছেলেটিকে দেখতে পেল। (চলবে...)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।