সুনামগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ঘিরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জালিয়াত চক্র। এদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। নেপথ্যে থেকে চক্রটিকে মদদ দিচ্ছেন অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা। ফলে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সরকারি এ দফতরটিতে একের পর ঘটছে অনিয়ম ও দুর্নীতি। ঘটেছে বালাম চুরির মতো স্পর্শকাতর ঘটনাও। সাধারণ মানুষের মূল্যবান ভূ-সম্পত্তির দলিল গচ্ছিত রাখার নিরাপদ স্থানটি হয়ে উঠেছে চরম অনিরাপদ। ভীতি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে জনমনে।
জানা যায়, সম্প্রতি মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিস শাখা থেকে শহরের মুক্তারপাড়ার শফিক হোসেন চৌধুরীর অনুকূলে একটি জাল দলিল তৈরি করে দেয় ওই কার্যালয়ের অসাধু চক্রটি। নামজারি করাতে এসিল্যান্ড অফিসে গেলে ধরা পড়ে দলিলটি জাল। অফিস সূত্র জানায়, ৩০ জুলাই সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন জাল করা দলিলটিতে যে নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে ওই বালামটি আনার জন্য সহকারী রেকর্ড কিপার প্রণয় ঘোষকে নির্দেশ দেন। দুই ঘণ্টা পর তিনি জানান, বালামটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরবর্তীতে দেখা যায়, নকলের সূচিপত্রের সূচি-১ ও সূচি-২ এর দুটি পাতা ছেঁড়া। কয়েক দিন পর নকলনবিস রাহুল ভৌমিক কার্যালয়ের চতুর্থ তলা থেকে হারিয়ে যাওয়া বালামটি বের করে দেন। বালামটি পাওয়ার পর দেখা যায় ছেঁড়া পাতার জায়গায় জাল করা দলিলটির পাতা সংযোজন করে রাখা হয়েছে। এ ঘটনার পর ৪ আগস্ট জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের এ অনিয়মের সঙ্গে সহকারী রেকর্ড কিপার প্রণয় ঘোষ ও তার সহযোগীরা জড়িত বলে অভিযোগ এনে প্রতিবাদ করেন নকলনবিসরা। জেলা রেজিস্ট্রি অফিস সূত্র জানায়, বালামের পাতা চুরির ঘটনা ধরা পড়ার পর থেকে লাপাত্তা সহকারী রেকর্ড কিপার। ঘটনাটি ধরা পড়ার কয়েক দিন পর থেকে কোনো ছুটি ছাড়াই অফিসে আসছেন না তিনি। বন্ধ রয়েছে তার মোবাইলফোনও। একের পর এক এ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি ঘটলেও কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে বলেও অভিযোগ সূত্রটির। সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন জানান, বালাম চুরির ঘটনার দিন তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে শাল্লা উপজেলায় ছিলেন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার বীরজ্যোতি চাকমার কাছে জানতে চাইলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে মোবাইলফোনের সংযোগ কেটে দেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।